
দিন পাঁচেক আগেই জেলার বন্যা পরিস্থিতি দেখতে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সময় যে সেতুর ওপর দিয়ে তিনি প্লাবিত আরামবাগে পৌঁছে ছিবেন তেমনই একটি সেতুর একটি অংশ ভেঙে পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন সেতুর গার্ডওয়ালের একটি অংশ হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে নদীতে। যার কারণে আরামবাগে দ্বারকেশ্বর নদীর ওপর রামকৃষ্ণ সেতু দিয়ে ভারী যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
শনিবার গভীর রাতে হুগলির আরামবাগে দ্বারকেশ্বর নদের উপর নির্মিত রামকৃষ্ণ সেতুর একাংশ ভেঙে পড়েছে। এতে সেতুর রেলিং এবং ফুটপাথের প্রায় ৬০-৭০ মিটার অংশ ধসে পড়েছে। এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয়দের আশঙ্কা, ঘটনাটি যেহেতু রাতে ঘটেছে তাই বড় কোনও দুর্ঘনটা ঘটেনি। না হলে যেকোনও মুহূর্তে আরও বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত।
আরামবাগের দ্বারকেশ্বর নদের উপর রামকৃষ্ণ সেতুর একাংশ ভেঙে পড়ার ঘটনাটি কেবল একটি দুর্ঘটনা নয়, বরং প্রশাসনিক উদাসীনতার এক জ্বলন্ত উদাহরণ বলেও দাবি করছে স্থানীয় বাসিন্দারা। এই ঘটনায় সাধারণ মানুষের মনে একাধিক প্রশ্ন উঠে আসছে। কেন একটি গুরুত্বপূর্ণ সেতুর বেহাল দশা হওয়া সত্ত্বেও তার সময় মতো সংস্কার করা হলো না? কেন বারবার সতর্ক করা সত্ত্বেও প্রশাসন নীরব ছিল?
এই সেতুটি হুগলি, বাঁকুড়া, পূর্ব বর্ধমান, পুরুলিয়া-সহ মোট পাঁচটি জেলার সঙ্গে যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম। প্রতিদিন এই সেতু দিয়ে হাজার হাজার ছোট-বড় যানবাহন চলাচল করে। ভারী পণ্যবাহী ট্রাকও যাতায়াত করে, যার ফলে দীর্ঘ দিন ধরেই সেতুটির অবস্থা খারাপ হচ্ছিল। এমনকি, এক বছর আগেও সেতুটিকে 'দুর্বল সেতু' ঘোষণা করে একটি বোর্ড লাগানো হয়েছিল। ঘটনার পর পরই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে এবং ভাঙা অংশটি ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে রেখেছে। আপাতত এই সেতু দিয়ে ভারী যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ।
রামকৃষ্ণ সেতু দিয়ে বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুরের সঙ্গে আরামবাগ, বর্ধমান ও কলকাতায় প্রচুর মানুষ যাতায়াত করেন। নিত্যদিত যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবাহী ট্রাক , চারচাকার গাড়ি, বাইক যাতায়াত করে। রবিবার সকাল থেকেই নিরাপত্তার কারণে পুলিশ ব্যারিকেড করে রেখেছে সেতুটি।