করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনা নিয়ে অডিও ক্লিপ শেয়ার করলেন কুণাল ঘোষ। বললেন দুর্ঘটনার পিছনে বড়সড় গোলমাল ছিল।
ওড়িশার ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনার কারণ কী - ইতিমধ্যেই তাই নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। রেল কর্তাদের একটি অংশের মতে দূরপাল্লার দুটি ট্রেনের গতির জন্য দুর্ঘটনা। কারও আবার মনে সিগনালের অব্যবস্থার জন্যই এই দুর্ঘটনা। বালেশ্বরের করমণ্ডল-যশবন্তপুর এক্সপ্রেস ও মালাগাড়ির সংঘর্ষের কারণ জানতে একটি অডিও ক্লিপ টুইট করেছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কুণাল ঘোষ।
কুণাল ঘোষ ১ মিনিট ৪৮ সেকেন্ডের একটি ওডিও ক্লিপ টুইট করেছেন। সেখানে দুই ব্যক্তির কথা শোনা যাচ্ছে। তাঁরা দুজনেই হিন্দিতে কথা বলেছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় টুইট করে ক্যাপশানে কুণাল লিখেছেন এই অডিও ক্লিপের সত্যতা তিনি যাচাই করে দেখেননি। বিষয়টা তদন্ত সাপেক্ষ বলেও জানিয়েছেন। পাশাপাশি যে দুই ব্যক্তির কথাবার্তার রেকর্ড শেযার করেছেন তারা দুজনেই রেল কর্তা বলেও জানিয়েছেন। তিনি আরও বেছেন, 'সিগনাল মেনলাইনে ছিল, পয়েন্ট ছিল লুপলাইনে'। তিনি আরও বলেছেন বড়সড় গোলমাল রয়েছে বলেও তিনি দাবি করেছেন। যাইহোক অডিওতে যে কথাবার্তা শোনা তাতে তাতেও স্পষ্ট দুই ব্যক্তি রেলের সিগনাল ব্য়বস্থা নিয়ে কথা বলছেন। আপনিও শুনে নিন কুণাল ঘোষের শেয়ার করা অডিও ক্লিপ।
রেল সূত্রের খবর বালেশ্বরের দুর্ঘটনার কারণ জানতে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিনটি ট্রেনের সংঘর্ষে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ১৫টি ও যশবন্তপুর এক্সপ্রেসের ৫টি কামরা লাইনচ্যুত হয়। দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৮০ হয়েছে। আহতের সংখ্যা ৮০০র ওপর। আহতের অনেকেরই চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে কটক হাসপাতালে। এই রাজ্য থেকে দুর্ঘটনার কবলে পড়া যাত্রীদের উদ্ধার আর চিকিৎসার জন্য প্রায় ৭০টি অ্যাম্বুলেন্স পাঠিয়েছে রাজ্য সরকার। পাঠান হয়েছে চিকিৎসকের দলও।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও রেলমন্ত্রীর তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি রেলমন্ত্রীর সামনে অভিযোগ করেন রেলের সমন্বয়ের অভাবেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। অন্যদিকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় গোটা ঘটনার জন্য অবশ্য দায়ী করেছেন মোদীকে। তিনি বলেন, বন্দে ভারত ট্রেন চালোনোর দিকেই নজর রয়েছে মোদী সরকারের। কিন্তু বাকি ট্রেন চালানো ও যাত্রী সুরক্ষা নিয়ে কেন্দ্রের কোনও মাথাব্যাথা নেই।
প্রধানমন্ত্রী ঘটনাস্থল থেকে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন। তিনি আহতদের এবং তাদের পরিবারের জন্য প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি আরও বলেছেন, দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবার যাতে কোনও অসুবিধের সম্মুখীন না হয় ও ক্ষতিগ্রস্তরা যাতে প্রয়োজনীয় সাহয্য পায় তা তিনি নিজে দেখবেন। হাসপাতালে গুরুতর আহতদের সঙ্গে দেখা করে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন নরেন্দ্র মোদী। ভূবনেশ্বর থেকে প্রায় ১৭০ কিলোমিটার উত্তরে বালাসোর জেলার বাহানাগা বাজার স্টেশন। ঘটনাস্থলের কাছে প্রধানমন্ত্রীকে বিমান বাহিনীর একটি হেলিকপ্টার নিয়ে যায়। তিনি দুর্ঘটনায় আহতদের ব্যক্তিদের সঙ্গে হাসপাতালে গিয়ে কথা বলেন। আগেই দুর্ঘটনার বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন।
অন্যদিকে এদিন করমণ্ডল এক্সপ্রেস- যশবন্তপুর ও মালগাড়ির সংঘর্ষে আহত যাত্রীদের দেখতে ওড়িশায় যান। সেখানে দুর্ঘটনাগ্রস্তদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টানায়েক ও রেলমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে গোটা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেন। দুর্ঘটনার প্রায় ১৮ ঘণ্টা পরে রেলের মুখপাত্র অমিতাভ শর্মা জানিয়েছেন, উদ্ধার কাজ শেষ হয়েছে। পুনরুদ্ধার কাজ শুরু হয়েছে।