প্রথমে মৃত কিশোরীর পরিবার ভেবেছিল যে, তাঁদের মেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে কোনও এক যুবক। কিন্তু, তল্লাশি অভিযান চালানোর পর পুলিশ জানতে পারে যে, ওই ‘যুবক’ আসলে ‘পুরুষ’-ই নয়।
বর্ধমানে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ত এক কিশোরী। অপহরণ করে তাকে আটকে রেখে দেওয়া হয় বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে। কিন্তু, ‘প্রেমের ফাঁদ’ বলে যা সন্দেহ করেছিল পুলিশ, তা বেমালুম ভুল হয়ে গেল অপহরণকারীর খোঁজ পাওয়ার পর। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের ভাতারে।
-
অষ্টম শ্রেণির ওই নাবালিকাকে অপহরণ করার পর তাকে বিষ মেশানো পানীয় পান করানো হয়। অপহৃতাকে উদ্ধার করার পর অপহরণকারীকেও গ্রেফতার করে পুলিশ। তখনই দেখা যায় যে, কোনও পুরুষ নয়, ‘পুরুষ’ সেজে তাকে অপহরণ করে নিয়ে গিয়েছিলেন এক তরুণী, যার বয়স ১৯ বছর। তবে, উদ্ধার করার পরেও প্রাণে বাঁচানো যায়নি ওই স্কুলছাত্রীকে। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে মৃত্যু হয় তার।
-
ভাতারের খেড়ুর গ্রামে নিজের বাবা মায়ের সঙ্গে থাকত ওই কিশোরী, সে ছিল বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। কয়েক সপ্তাহ আগে সে নিজের বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে যায় । মেয়ের কোনও খোঁজ না পাওয়ায় দুশ্চিন্তায় ভুগছিল পরিবার। এরপর স্থানীয় থানায় অপহরণের অভিযোগ দায়ের করা হয়। তদন্ত শুরু করে পুলিশ। এরপ, মোবাইল নেটওয়র্কের সূত্র খুঁজে খুঁজে দেওয়ানদিঘি থানা এলাকায় নাবালিকাকে খুঁজে পাওয়া যায়। তারপরেই সেখান থেকে গ্রেফতার করা হয় ওই ১৯ বছর বয়সি তরুণীকে, যার নাম গীতা দাস।
-
প্রথমে মৃত কিশোরীর পরিবার ভেবেছিল যে, তাঁদের মেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে কোনও এক যুবক। সেই অভিযোগ শুনে পুলিশেরও ধারণা হয়েছিল যে, প্রেমের ফাঁদে ফেলে কোনও যুবক ওই কিশোরীকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে। কিন্তু, তল্লাশি অভিযান চালানোর পর পুলিশ জানতে পারে যে, গীতা দাস নামের এক তরুণী ‘পুরুষ’ সেজে নাবালিকাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ফুঁসলিয়ে নিয়ে গেছে। প্রাথমিক অনুমান, নাবালিকাকে পাচার করবে বলেই নিয়ে গিয়েছিল গীতা।
-
বুধবার অপহৃত নাবালিকাকে উদ্ধার করে এনে দিয়েছিল ভাতার থানার পুলিশ। অভিযুক্ত গীতা দাস এখন জেল হেফাজতে। কিন্তু, উদ্ধার হয়ে বাড়ি ফিরে আসার পরেই অসুস্থ হয়ে পড়ে ওই নাবালিকা। প্রথমে ভাতার হাসপাতালে নিয়ে গেলেও পরে শারীরিক অবস্থা আরও খারাপ হতে থাকে। শুক্রবার বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানোর পর পরিবার জানতে পারে যে, নাবালিকাকে বিষ খাওয়ানো হয়েছে। তখনই, অসুস্থ নাবালিকা জানায় যে, পুলিশ আসার আজ্ঞে গীতা তাকে জোর করে ঠান্ডা পানীয় খাইয়েছিল, যার মধ্যে কিছু মেশানো ছিল। এরপরেই মারা যায় ওই ছাত্রী।
-
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।