বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি করার পর আততায়ীরা চম্পট দেয়। আহত বিজেপি নেতাকে রক্তাক্ত অবস্থায় দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ঘটনার জেরে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগের দাবি তুলেছেন শুভেন্দু অধিকারী।
'পশ্চিমবঙ্গের আইন-শৃঙ্খলা সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত', নিজের সোশ্যাল মিডিয়া থেকে এভাবেই শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসকে বিঁধলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। শুক্রবার সকালে নিজের বাড়ির ভেতরেই বিছানার ওপর বসেছিলেন কোচবিহারের দিনহাটার পুটিমারি এলাকার বিজেপি নেতা প্রশান্ত রায় বসুনিয়া। তিনি ওই এলাকার ২৩ নং মন্ডলের সাধারণ সম্পাদক। হঠাতই তাঁর বাড়ির মধ্যে সদলবলে ঢুকে পড়েন কয়েকজন অচেনা যুবক। তাঁদের প্রত্যেকের হাতে ছিল আগ্নেয়াস্ত্র। আচমকা তাঁরা গুলি করতে শুরু করেন প্রশান্ত রায় বসুনিয়াকে। বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি করার পর আততায়ীরা চম্পট দেয়। আহত বিজেপি নেতাকে রক্তাক্ত অবস্থায় দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এই অতর্কিত খুনের ঘটনার সমস্ত দায় দিনহাটার তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন ঘোষের ওপরেই চাপিয়েছেন এলাকার বিজেপি নেতা। তাঁর বক্তব্য, ‘উদয়ন গুহ সব জানেন। একটু ভালো করে জিজ্ঞাসা করলেই সব উত্তর পাওয়া যাবে।’ আরেক দিকে উদয়নের গুহর দাবি, এই হামলার সঙ্গে তৃণমূল কোনওভাবেই যুক্ত নয়। তিনি অভিযোগ করেছেন যে, ওই ব্যক্তি বিজেপির বড় নেতা হলেও তিনি অনেক অসামাজিক কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বিধায়ক জানিয়েছেন যে, এই খুনের ঘটনাটির পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করছে পুলিশ। আইন আইনের পথে চলবে।
বিজেপির পক্ষ থেকে এই খুনের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা তথা বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। নিজের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে তিনি লিখেছেন যে, “দিনহাটায় আঞ্চলিক তৃণমূল পার্টি ছেড়ে প্রতিদিন শত শত দলের সদস্যরা বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন। এই দল পরিত্যাগে ভয় পেয়ে, তৃণমূল পার্টির শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃত্ব বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন। এই কারণেই এই নৃশংস রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। এই ঘটনায় আমি সিবিআই তদন্তের দাবি জানাচ্ছি, কারণ ‘প্রভাবশালী’ মানুষদের জড়িত থাকার কারণে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের দ্বারা সুষ্ঠু তদন্ত করা বাধা পাবে বা শাসক দলের দ্বারা তদন্ত প্রভাবিত হবে। প্রতিদিনই এই রাজ্যে বিস্ফোরণ, খুন ইত্যাদি নানা কারণে বহু মানুষ মারা যাচ্ছেন। বিরোধী দলের কর্মীদের লক্ষ্য করে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড এই রাজ্যে এখন একটা রীতিতে পরিণত হয়েছে।”
ঘটনার জেরে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগের দাবি তুলে শুভেন্দু লিখেছেন, “পশ্চিমবঙ্গের গৃহমন্ত্রীর মেনে নেওয়া উচিত যে, তিনি রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন এবং তাঁকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে।”
আরও পড়ুন-
‘কালীঘাটের কাকু’ গ্রেফতার হওয়ার আগে কি ইডি অফিসে বারবার ফোন করেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী? কুন্তর ঘোষের চাঞ্চল্যকর দাবি
Ranbir Deepika: আবার একসাথে রণবীর-দীপিকা, ১০ বছর পরেও অমলিন ভালোবাসার ইতিহাস