বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী জানিয়েছেন কালিয়াগঞ্জে ৩৩ বছরের এক রাজবংশী যুবককে নির্মমভাবে হত্যা করেছে মমতার পুলিশ। 'মমতা' পুলিশ মধ্যরাতে রাত আড়াইটের সময় বিজেপির পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য বিষ্ণু বর্মনের বাড়িতে অভিযান চালায় কিন্তু তাকে খুঁজে পায়নি।
কালিয়াগঞ্জে এক যুবকের গুলিবিদ্ধ মৃতদেহ উদ্ধার হওয়াকে কেন্দ্র করে ফের পরিস্থিতি জটিল। কালিয়াগঞ্জের রাধিকাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের চাঁদগাঁয় বিজেপি কর্মী মৃত্যুঞ্জয় বর্মণের মৃত্যুর ঘটনায় বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই সরব বিজেপি। পুলিশের গুলিতে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ তোলে গেরুয়া শিবির। নাবালিকাকে ধর্ষণ-খুনের অভিযোগ ঘিরে উত্তপ্ত কালিয়াগঞ্জে মৃত্যুঞ্জয় বর্মণের গুলিবিদ্ধ মৃতদেহ উদ্ধার হওয়া ঘিরে চলছে চাপান উতোর। বছর তেত্রিশের মৃত্যুঞ্জয়ের বাড়ি রাধিকাপুরের চাটগাঁ এলাকায়। গতকাল রাতে কালিয়াগঞ্জ থানার পুলিশ গিয়ে যুবকের গুলিবিদ্ধ দেহ উদ্ধার করে। কীভাবে মৃত্যু, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এদিকে, পুলিশই গুলি করে খুন করেছে মৃত্যুঞ্জয় বর্মনকে, দাবি তুলে স্থানীয়রা সিবিআই তদন্তের আর্জি জানিয়েছেন। রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, “এই সরকার পিছিয়ে পড়া জাতি, আদিবাসী, দলিত-বিরোধী সরকার। বুধবার মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিক বৈঠক করার পর থেকেই পুলিশ এই আচরণ শুরু করেছে। তদন্ত করতে যাওয়ার নামে বা তল্লাশি করতে গিয়ে সামান্য প্রশ্ন করতেই পুলিশ গুলি চালিয়েছে।”
বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী জানিয়েছেন কালিয়াগঞ্জে ৩৩ বছরের এক রাজবংশী যুবককে নির্মমভাবে হত্যা করেছে মমতার পুলিশ। ট্রিগার হ্যাপি 'মমতা' পুলিশ মধ্যরাতে রাত আড়াইটের সময় বিজেপির পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য বিষ্ণু বর্মনের বাড়িতে অভিযান চালায় কিন্তু তাকে খুঁজে পায়নি। মৃত্যুঞ্জয় বর্মণ নামে এক রাজবংশী যুবককে তারা নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করে। এই ঘটনা অত্যাচার এবং রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের চরম পর্যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্রাট নিরোর মতো আনন্দ করছেন যখন গোটা রাজ্য জ্বলছে এবং নাগরিক অস্থিরতার পর্যায়ে চলে যাচ্ছে। গত বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কালিয়াগঞ্জের মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন এবং তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মৃত্যুঞ্জয় বর্মণের ঘটনা।
এরই পাশাপাশি, বিজেপি নেতা অমিত মালব্য টুইট করে বলেন গতকাল বিকেলে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তর দিনাজপুরের জনগণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ইঙ্গিত দেওয়ার পরে রাজ্য পুলিশ বিজেপি পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য বিষ্ণু বর্মণের বাড়িতে ঢুকে পড়ে। তাকে খুঁজে না পেয়ে হতাশা থেকে এবং তাদের রাজনৈতিক প্রভুকে খুশি করতে মরিয়া হয়ে মৃত্যুঞ্জয়কে ঠান্ডা মাথায় হত্যা করে। বিধানসভার ফলাফল ঘোষণার পর ২০২১ সালের দোসরা মে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নজরদারিতে যে অগণতান্ত্রিক রক্তপাত শুরু হয়েছিল, তা আজ অবধি চলছে।
কালিয়াগঞ্জের ঘটনা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে ক্রমশই ঘোলা হচ্ছে জল। জটিলতা ক্রমশই বাড়ছে। এবার কালিয়াগঞ্জ ইস্যুকে সামনে রেখে আরও ১২ ঘণ্টার উত্তরবঙ্গ বনধের ডাক দিল বিজেপি। সেখান শুক্রবার রায়গঞ্জের দার্জিলিং মোড়ে বিজেপির ধর্না মঞ্চ চলছে। থেকেই এদিন বনধের ডাক দেয় বিজেপি। বনধের কথা ঘোষণা করেন বিজেপির সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী। তিনি জানান একের পর এক ঘটনায় রাজ্য সরকার যে অত্যাচার করছে সাধারণ মানুষের ওপর তাতেই মানুষের ক্ষোভ তৈরি হচ্ছে। সাধারণ মানুষের ক্ষোভকে সম্মান জানাতেই বনধের ডাক দিয়েছে বিজেপি।