জানা গেছে, হেফাজতে থাকাকালীন তাঁর খাওয়া ঘুম উড়ে গেছে, বিনিদ্র রজনী কাটিয়ে ইডি অফিসারদের কাছে তিনি আবদার জুড়েছেন বান্ধবী সুতপার সঙ্গে যাতে তাঁকে দেখা করতে দেওয়া হয়।
গরু পাচারকাণ্ডে ইডি অফিসারদের প্রশ্নের মুখে সহযোগিতা না করার অভিযোগ উঠেছিল অনুব্রত মণ্ডলের কন্যা সুকন্যা মণ্ডলের বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগে বুধবার তাঁকে গ্রেফতার করে নিয়েছে ইডি। বৃহস্পতিবার সুকন্যাকে ৩ দিনের জন্য ইডি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এই হেফাজতকালে তাবড় অফিসারদের প্রশ্নের মুখে পড়ে বারংবার কান্নায় ভেঙে পড়ছেন ভোলে ব্যোম রাইস মিলের মালকিন।
সূত্রের খবর, দিল্লিতে দফায় দফায় জেরার মুখে পড়তে হচ্ছে অনুব্রতর মেয়ে সুকন্যাকে। বারবার হাজিরা এড়িয়ে গেলেও গ্রেফতারির পর প্রশ্নের ফাঁদে পড়ে গিয়েছেন কেষ্ট-কন্যা। সারা দিন ধরে জিজ্ঞাসাবাদের চাপে কাহিল হয়ে পড়ছেন বোলপুরের এককালীন শিক্ষিকা। তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাওয়া গেছে ৪৯ হাজার ৯৯০ টাকা। অর্থাৎ, ৫০ হাজার থেকে ১০ টাকা কম। এখন আমজনতার মনে প্রশ্ন আসতে পারে যে, মাত্র ১০ টাকা কম রাখা কেন? ইডি আধিকারিকরা মনে করছেন, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পুরোপুরি ৫০ হাজার টাকা রাখলে পরিচয়পত্র প্যান কার্ড দেখাতে হয়। সেই নিয়ম এড়ানোর জন্যই একাধিকবার একাধিক ব্যক্তির মাধ্যমে সুকন্যা মণ্ডলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ওই পরিমাণের টাকা রাখা হয়েছিল, যেখানে ১০ টাকা কম ছিল।
তবে, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে মাত্র কয়েক হাজার টাকা থাকলেও সুকন্যা মণ্ডলের সম্পত্তির পরিমাণ ছিল অঢেল। তাঁর অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে লেনদেনও হয়েছিল লক্ষ লক্ষ টাকার। এতও সম্পত্তি কীভাবে, কোন পথে এল, তিনি নিজের সম্পত্তি সম্পর্কে কতটা জানেন, সেই সমস্ত প্রশ্ন তাঁকে করা হয়। কিন্তু, সুকন্যা ইডি আধিকারিকদের স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন যে, কে বা কারা টাকা রেখেছিল, সে বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। নিজের সম্পত্তি সম্পর্কেও কিছুই বলতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন কেষ্ট-কন্যা। জানা গেছে, হেফাজতে থাকাকালীন তাঁর খাওয়া ঘুম উড়ে গেছে, বিনিদ্র রজনী কাটিয়ে ইডি অফিসারদের কাছে তিনি আবদার জুড়েছেন বান্ধবী সুতপার সঙ্গে যাতে তাঁকে দেখা করতে দেওয়া হয়। উল্লেখ্য, সুকন্যার এই বান্ধবীই কয়েকদিন আগে তাঁর কাছে জামাকাপড় দিতে এসে জেলের অন্দরে কেঁদে ভাসিয়েছিলেন।
তবে, শুধু বান্ধবী নয়, নিজের বাবা অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গেও দেখা করতে চেয়েছেন সুকন্যা মণ্ডল। অনুব্রত মণ্ডল বর্তমানে দিল্লির তিহাড় জেলে বন্দি রয়েছেন। তাঁর সঙ্গে তিহাড় জেলে গিয়েই সুকন্যা দেখা করতে চেয়েছেন বলে ইডি সূত্রে জানা গেছে। বাবা এবং বান্ধবীর কাছে যাওয়ার জন্য বারবার তিনি চোখের জলে আকুল হয়ে পড়ছেন বলে সূত্রের খবর। শনিবার সুকন্যার সঙ্গে দেখা করে দিল্লির প্রবর্তন ভবনে গিয়েছিলেন তাঁর আইনজীবী অমিত কুমার। আদালতের নির্দেশমতো আধ ঘণ্টা কথা হয়েছে তাঁদের মধ্যে। সেখান থেকে বেরিয়ে বান্ধবী সুতপার বিষয়ে তাঁর আইনজীবী বলেছেন, ‘উনি সুকন্যার খুব ভালো বন্ধু। ছোটবেলার বন্ধু। উনি ক্যান্সারের রোগী। উভয়েই একে অপরকে ভীষণ সাপোর্ট করেন। সুকন্যা তাঁকে ভীষণ মিস করছেন। যেহেতু এখানে কথা বলার অনুমতি নেই, তাই আমরা আদালতে কাল আবেদন করব। যদি আদালত ফোনে কথা বলার অনুমতি দেয়, তাহলে কথা বলতে পারবেন তাঁরা।’
আরও পড়ুন-
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শততম ‘মন কি বাত’ সরাসরি সম্প্রচারিত হবে রাষ্ট্রপুঞ্জে, দেখুন বিশেষ প্রস্তুতির কয়েক ঝলক
Mukul Roy: একূল-ওকূল দু’কূলহারা হয়ে কলকাতায় মুকুল, সত্যিই কি 'অমিত ভাই'-এর সঙ্গে দেখা হয়েছে তাঁর?