পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে মমতার মুখে কর্মসংস্থানের বার্তা রাজনৈতিকভাবে বিশেষ গুরুত্ব লাভ করেছে। যদিও আগেও রাজ্যে বেকারত্বের হার কমার পরিসংখ্যানও তুলে ধরেছিল নবান্ন।
'আগামী দিনে রাজ্যে আট কোটি কর্মদিবস তৈরি করা হবে', শুক্রবার বাঁকুড়ার সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায় শোনা গেল কর্মসংস্থানের বানী। রাজ্যে কর্মসংস্থানের উপর জোড় দেওয়ার বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আগামী দিনে ১০ লক্ষ ছেলেমেয়েকে নিজের পায়ে দাঁড় করানোর কথাও বললেন তিনি। উল্লেখ্য বারবারই কর্মসংস্থান নিয়ে বিরোধীদের তো[এর মুখে পড়তে হয়েছে তৃণমূল সরকারকে। মমতা সরকারের আমলে রাজ্যে শিল্প নেই, চাকরি নেই বলে বারবারই মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করেছেন বিরোধীরা। এই আবহে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে মমতার মুখে কর্মসংস্থানের বার্তা রাজনৈতিকভাবে বিশেষ গুরুত্ব লাভ করেছে। যদিও আগেও রাজ্যে বেকারত্বের হার কমার পরিসংখ্যানও তুলে ধরেছিল নবান্ন।
শুক্রবার বাঁকুড়ায় সরকার পরিষেবা প্রদানের অনুষ্ঠানে দাঁড়িয়ে কর্মসংস্থানের কথা বললেন তিনি। এদিন বাঁকুড়ায় দাঁড়িয়ে তৃণমূল সুপ্রিমো বললেন,'স্কুলের পোশাক দেওয়া হবে। আগে বাইরে থেকে আসত এই পোশাক। এখন আমরা সেল্প হেল্প গ্রুপকে দিয়ে স্কুলের পোশাক বানাচ্ছি। এ বছরই ৫ কোটি কর্মদিবস তৈরি হয়েছে। আগামী বছর ৮ কোটি কর্মদিবস তৈরি হবে।' তিনি আরও বলেন,'এত রাস্তাঘাট, ইন্ডাস্ট্রি করার পরও আরও দু'লক্ষ ছেলেমেয়ে যাঁরা ব্যবসা করতে চায় তাঁদের রাজ্য সরকার পাঁচ লক্ষ টাকা করে দেবে। আপনারা ইন্ডাস্ট্রি তৈরি করুন। ব্যাঙ্কের কাছে যেতে হবে না।' পাঁচ বছরে ১০ লক্ষ ছেলেমেয়েকে নিজের পায়ে দাঁড় করাব বলেও দাবি করেন তিনি।
অন্যদিকে ডিএ নিয়ে হুলস্থুল রাজ্যে রাজনীতিতে। গতকালই মেদিনীপুরের সভায় দাঁড়িয়ে ডিএ নিয়ে মুখ খোলেন তিনি। রাজ্য সরকার 'জাদুকর' নয়, এবার ডিএ ইস্যুতে সুর চড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও সরাসরি ডিএ শব্দটা বলেননি তিনি। কিন্তু রাজ্যে চলতে থাকা ডিএ নিয়ে বিক্ষোভে প্রসঙ্গেই প্রশাসনিক সভায় দাঁড়িয়ে মমতা বললেন বেশি চাইলেও টাকার জোগার হবে কোথা থেকে? বুধবার রাজ্য বাজেটেই আরও তিন শতাংশ মহার্ঘভাতার ঘোষণা করল রাজ্য সরকার। এদিকে ১ জানুয়ারি ২০২৩ থেকে আরও চার শতাংশ ডিএ বৃদ্ধি করায় কেন্দ্রের ডিএ দাঁড়িয়েছে ৪২ শতাংশ-এ। সেখানে মাত্র তিন শতাং ডিএ বৃদ্ধি করে রাজ্য সরকারের ডিএ দাঁড়াল ৬ শতাংশে। রাজ্য সরকারের এই ঘোষণায় ক্ষোভ প্রশমিত তো হলই না বরং আরও বাড়ল ক্ষোভ। রাজ্যের সিদ্ধান্তকে ধিক্কার জানিয়েছে কর্মী সমাজ এই ডিএ 'ভিক্ষা দেওয়ার মতো' বলেও দাবি করেছেন তাঁরা। এমনকী এই ঘোষণাকে প্রত্যাখান করার কথাও বলেছেন আন্দোলনকারীরা। বুধবার এই প্রসঙ্গে কোনও প্রতিক্রিয়া না দিলেও বৃহস্পতিবার মেদিনীপুরের একটি প্রশাসনিক সভায় এই নিয়ে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের পাওনা টাকা দিচ্ছে না বলেও দাবি করেন তিনি। শুধু কেন্দ্র নয়, রাজ্য বিজেপির দিকেও আঙুল তুললেন মুখ্যমন্ত্রী। সরাসরি ডিএ কথা না বলেই তিনি বলেন,'আমি তো ম্যাজিশিয়ান নই। অনেকে বলে এটা পেলাম না, ওটা দাও। আরে যেটা পেলে সেটাকে ধরে রাখতে তো টাকার প্রয়োজন। সেটা কোথা থেকে আসবে? কেন্দ্রীয় সরকার টাকা দিচ্ছে না। বঞ্চনা করছে আর মিথ্যা কথা বলছে।'
আরও পড়ুন -
ডিএ-র দাবিতে আজ কালো ব্যাজ পরে কাজ, সোম ও মঙ্গলবার কর্মবিরতি পালন সরকারি কর্মীদের
রাজ্য সরকার 'জাদুকর' নয়, ডিএ বৃদ্ধি নিয়ে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
'এ তো তারিখ পে তারিখ-এর মতো', আদালতে সিবিআই-এর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন পার্থর আইনজীবী