রাজ্যপাল রাজভবনে স্থানান্তরিত হওয়ার পর, রাজ্য-রাজ্যপালের মধ্যে সুসম্পর্ক অটুট থাকে কিনা, সেই দিকেই তাকিয়ে রয়েছে সমস্ত রাজনৈতিক দল।
পশ্চিমবঙ্গের নতুন রাজ্যপাল হিসেবে দায়িত্বে আসীন হলেন প্রাক্তন আইএএস অফিসার সিভি আনন্দ বোস। তিনি বঙ্গের দায়িত্ব পেতেই ফোন করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথমেই মুখ্যমন্ত্রীর কথায় উঠে এল ঘরোয়া প্রশ্ন, ‘আপনি কি বাঙালি?’
নবাগত রাজ্যপালের পদবী ‘বোস’ শুনে তাঁকে বাঙালি ‘বসু’-র সঙ্গে মিলিয়ে ফেলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী, ফলত, রাজ্যপালকেও বাঙালি ভেবেছিলেন তিনি। শুক্রবার সন্ধ্যায় ফোন কলে তাঁর এই কৌতূহল শুনে আনন্দ বোস তাঁকে জানান যে, তিনি কোনওভাবেই বাঙালি নন। আদতে তিনি কেরল রাজ্যের বাসিন্দা। এভাবেই আলাপচারিতার সাথে সাথে চলতে থাকে দুই রাজ্যপ্রধানের মধ্যে সৌজন্য বিনিময়। প্রায় মিনিট দশেক ধরে ফোনালাপে ব্যস্ত হয়ে পড়েন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান ও প্রশাসনিক প্রধান, উভয়েই। দু’জনের মধ্যে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কথাবার্তা হয়েছে বলেও জানা গেছে। দুই গুরুত্বপূর্ণ পদধারীর মধ্যে এই দীর্ঘ কুশল বিনিময় শাসকমণ্ডলে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
সিভি আনন্দ বোসের আগে পশ্চিমবঙ্গে রাজ্যপাল হিসেবে পূর্ণরূপে দায়িত্বে ছিলেন জগদীপ ধনখড়। সেসময়ে বঙ্গে রাজ্য বনাম রাজ্যপাল সংঘাতের খবর বারবার উঠে আসত শিরোনামে, তাঁর বিরুদ্ধে বারবার রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্বের অভিযোগও তুলত বাংলার বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। তিনি উপরাষ্ট্রপতি হওয়ার পর বাংলায় অতিরিক্ত রাজ্যপাল হিসেবে সাময়িক সময়ের জন্য ভারপ্রাপ্ত হন লা গণেশন। তাঁর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর সম্পর্ক ছিল যথেষ্ট বন্ধুত্বপূর্ণ। কালীপুজোর সন্ধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের বাড়িতে আমন্ত্রিত হয়ে সস্ত্রীক উপস্থিত হয়েছিলেন তিনি। পরবর্তী সময়ে লা গণেশনের আমন্ত্রণে তাঁর পারিবারিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে চেন্নাই পর্যন্ত গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অর্থাৎ, প্রাক্তন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী এবং শাসকদলের যে তীব্র বিরোধিতা গড়ে উঠেছিল, তা একেবারে ম্লান হয়ে গিয়েছিল লা গণেশনের আগমনে। তাঁর ওপরে আবার অসন্তুষ্ট ছিল বাংলার বিরোধী শিবির বিজেপি।
চলতি নভেম্বরে পশ্চিমবঙ্গের পূর্ণ দায়িত্ব নিয়ে রাজ্যপাল হিসেবে আসীন হচ্ছেন সিভি আনন্দ বোস। এখনও পর্যন্ত তিনি কলকাতায় না এলেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর সৌজন্যের বাক্যবিনিময় হয়ে গেল। প্রথম আলাপচারিতা মধুর হলেও নয়া রাজ্যপাল রাজভবনে স্থানান্তরিত হওয়ার পর, রাজ্য-রাজ্যপালের মধ্যে সুসম্পর্ক অটুট থাকে কিনা, সেই দিকেই তাকিয়ে রয়েছে সমস্ত রাজনৈতিক দল।
আরও পড়ুন-
কেন্দ্র এবং রাজ্যের মাঝে আমি হব রামধনু সেতু: বঙ্গের দায়িত্ব পেয়েই আশ্বাস নয়া রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের
সিট-এর প্রধান হিসাবে দেওয়া হয়েছিল ৩টি নাম, আইপিএস অশ্বিন শেনভিকে বেছে নিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়
ডিসেম্বরের আগেই পাহাড়ে প্রবল তুষারধস, প্রাণ গেল ৩ ভারতীয় সেনা জওয়ানের