কেন্দ্র এবং রাজ্যের মাঝে আমি হব রামধনু সেতু: বঙ্গের দায়িত্ব পেয়েই আশ্বাস নয়া রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের

রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস মনে করেন যে রাজ্যপালের ভূমিকা হল ‘সঠিক সমাধানের’ মাধ্যমে রাজভবন এবং শাসকদল তৃণমূল সরকারের মধ্যে ‘সমস্ত দ্বন্দ্বের সমাধান’ করে রাজ্য এবং কেন্দ্রের রেষারেষি মেটানো।

Sahely Sen | Published : Nov 19, 2022 3:41 AM IST

পশ্চিমবঙ্গের নবনিযুক্ত রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস একজন অবসরপ্রাপ্ত আইএএস অফিসার। তিনি মনে করেন যে, একজন রাজ্যপালের ভূমিকা হল ‘সঠিক সমাধানের’ মাধ্যমে রাজভবন এবং শাসকদল তৃণমূল সরকারের মধ্যে ‘সমস্ত দ্বন্দ্বের সমাধান’ করে রাজ্য এবং কেন্দ্রের মধ্যে ‘রামধনু সেতু’ হিসাবে কাজ করা।

বৃহস্পতিবার বাংলার গভর্নর হিসাবে নিযুক্ত বোস জানিয়েছেন যে, রাজভবন এবং রাজ্য সরকারের ভেতরকার পার্থক্যগুলিকে দ্বন্দ্ব হিসাবে দেখা উচিত নয় বরং ‘মতানৈক্য’ হিসাবে দেখা উচিত, কারণ উভয়ই পরিপূরক প্রতিষ্ঠান।

"আমি দ্বন্দ্বের সমাধান পছন্দ করি, কারণ, যেকোনও সমস্যার একটা সমাধান থাকে এবং আমাদের সেই সঠিক সমাধানে পৌঁছানো উচিত। খেলায় সব অভিনেতাকে একসঙ্গে রাখতে আমাদের সক্ষম হওয়া উচিত। তাই আমি সেটাই বলব যেটা সংবিধান প্রত্যাশা করে, যে, রাজ্যপালকে রাস্তাটা জানতে হবে, পথ দেখাতে হবে এবং সেই পথে যেতে হবে।”

বোসের পূর্বসূরি এবং বর্তমান উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড় জুলাই ২০১৯-এ রাজ্যপালের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে পশ্চিমবঙ্গের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের সাথে বিবাদে জড়িয়েছিলেন।

পশ্চিমবঙ্গে রাজভবন এবং তৃণমূল সরকারের মধ্যে রেষারেষি মেটানোর বিষয়ে তাঁর মন্তব্যের জন্য জিজ্ঞাসা করা হলে, আনন্দ বোস বলেছেন যে, রাজ্যপালকে ‘রাজ্য ও কেন্দ্রের মধ্যে রামধনু সেতু হিসাবে কাজ করতে হবে’।

তাঁর মতে, রাজভবন এবং রাজ্য সরকার, একে অপরের পরিপূরক প্রতিষ্ঠান। তাঁর অনুভব এটাই যে, তিনি রাজ্য সরকারের সমর্থন পাবেন এবং সেতু হিসাবে কাজ করার উদ্দেশ্যে এটির ওপর লক্ষ্য রাখবেন।

তিনি বলেন, ‘গভর্নরের ভূমিকা হল সংবিধানের কাঠামোর মধ্যে সরকারী কাজগুলি নিশ্চিত করা এবং জনগণের সহায়তার জন্য একটি গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে সমস্ত সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা উচিত।’

দেশে অ-বিজেপি দলগুলির নেতৃত্বাধীন রাজ্যপাল এবং রাজ্য সরকারের মধ্যে ক্রমবর্ধমান দ্বন্দ্বের বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন যে এগুলি, ‘মতের পার্থক্য’ এবং এগুলিকে দ্বন্দ্ব হিসাবে দেখা উচিত নয়।

"আমি এটাকে দ্বন্দ্ব হিসেবে দেখি না, মতের পার্থক্য হিসেবে দেখি। ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি এবং মতের পার্থক্য গণতন্ত্রের জন্য মৌলিক। মতের পার্থক্য মানে গণতন্ত্রের দুর্বলতা নয়, গণতন্ত্রের শক্তি।"

তিনি আরও বলেন, "আমাদের মতো বহুত্ববাদী সমাজে যেকোনও বিষয়ে মানুষের যাই হোক না কেন, মতামত প্রকাশের অবাধ প্রবাহ থাকা উচিত। ভারতে গণতন্ত্র এত শক্তিশালী; এমন কোনও পরিস্থিতি হবে না, যেখানে গণতন্ত্রের যত্ন নেওয়া যায় না।”

বিজেপির শাসনকালে রাজভবন 'গেরুয়া শিবিরের বর্ধিত পার্টি অফিসে' পরিণত হয়েছে বলে বিরোধী দলগুলি অভিযোগ তুলেছে। সেই বিষয়ে নতুন রাজ্যপাল বলেন, "একটি অভিযোগ হল একটি দোষারোপ। আমি সত্যের ভিত্তিতে চলি।”

সিভি আনন্দ বোস কেরালার কোট্টায়াম থেকে এসেছেন এবং ২০১১ সালে পদত্যাগ করার আগে শেষবার বঙ্গের জাতীয় জাদুঘরে প্রশাসক হিসাবে কাজ করেছিলেন। তাঁর ওয়েবসাইট অনুসারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁকে 'ধারণার মানুষ' হিসেবে বর্ণনা করেছেন। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং-ও তাঁকে 'অনুপ্রাণিত বেসামরিক কর্মচারী' হিসাবে বর্ণনা করেছিলেন।

 

আরও পড়ুন-
সিট-এর প্রধান হিসাবে দেওয়া হয়েছিল ৩টি নাম, আইপিএস অশ্বিন শেনভিকে বেছে নিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়
ডিসেম্বরের আগেই পাহাড়ে প্রবল তুষারধস, প্রাণ গেল ৩ ভারতীয় সেনা জওয়ানের
গরু পাচারের সঙ্গে আবার উঠে এল লটারি-কাণ্ড, মোটা অঙ্কের পুরস্কার জিতেছিলেন এনামুল হকও

Share this article
click me!