
Crorepati Thief: দক্ষিণ ২৪ পরগণার নোদাখালি থেকে একজন চোরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কিন্তু পুলিশি হেফাজতে নিয়ে তদন্ত শুরু হতেই পুলিশের চোখ কার্যত, কপালে উঠে গেছে।
কারণ, সেই চোরকে নিয়ে তাঁর বাড়িতে তল্লাশি করতে গিয়ে পুলিশ দেখতে পায় যে, সেই চোর নিজে একজন কোটিপতি। পুলিশ সূত্রে খবর, তিনতলা বাড়িটি পুরো মার্বেল বসানো এবং ঘরে একাধিক ঝাড়বাতি লাগানো রয়েছে। প্রতিটি ঘরে ফলস সিলিং এবং দামী দামী কাঠের আসবাবপত্র রয়েছে সেই কোটিপতি চোরের বাড়িতে। এমনকি, বাথরুমের মধ্যে রয়েছে বড় একটি বাথটব।
ঘরের মধ্যেই রয়েছে শরীর চর্চার জন্য বিভিন্ন রকমের মেশিন। গ্যারেজে আছে দুটি বাইক এবং বাড়ির চারপাশে ফুল ও ফলের বাগান। কিন্তু অন্য চোরেদের হাত থেকে নিজের বাড়িকে বাঁচাতে লাগানো আছে সিসি ক্যামেরা। একঝলকে যদি কেউ সেই বাড়িটিকে দেখে, মনে হবে যেন গ্রামের মধ্যে একটি রাজপ্রাসাদ বিরাজমান। গত ১ জুন, রবিবার রাতে হাওড়ার রাজাপুর থানার ঘোষালচক এলাকায় হালদার পাড়ার একটি বাড়িতে চোর ঢুকেছে খবর পায় পুলিশ। তৎক্ষণাৎ রাজাপুর থানার পুলিশ আধিকারিকরা পৌঁছে যান ঘটনাস্থলে।
এরপর পুলিশ চোরটিকে হাতেনাতে পাকড়াও করে এবং পরে তাঁকে থানায় নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয়। প্রথমে অবশ্য সে নিজের নাম ভুল বলে পুলিশের কাছে। কিন্তু সোমবার তাঁকে আদালতে তোলা হলে, বিচারক ৬ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। তারপর থেকেই শুরু হয় দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ। পরে অভিযুক্ত তাঁর সঠিক নামটি থানায় জানায়। চোরের নাম অমিত দত্ত।
মঙ্গলবার রাতে, পুলিশ অমিত দত্তকে নিয়ে তাঁর বাড়িতে যায় তদন্তের স্বার্থে। সেখানে গিয়েই পুলিশের চোখ পুরো কপালে উঠে যায়।
পুলিশের দাবি অনুযায়ী, সংবাদমাধ্যম সেই এলাকায় গিয়ে দেখে, সত্যিই গ্রামের সরু ঢালাই রাস্তার মধ্যে একটি রাজপ্রাসাদ রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, অভিযুক্ত ব্যক্তি অমিত আনুমানিক ১৩-১৪ বছর আগে মহেশতলা থেকে সাতগাছিয়া বিধানসভার চকমানিকের ভেটকাখালীতে জায়গা কিনে বাড়ি বানান। এলাকায় স্থানীয়দের সঙ্গে তাঁর ব্যবহার বেশ ভালোই।
প্রতিবেশী কারোর সাথে কোনওদিন তাঁর ঝগড়া হয়নি। নিজের সমবয়সী লোকেদের সঙ্গেই বেশি মিশতেন। তবে অমিতবাবু ঠিক কী কাজ করতেন, সেই বিষয়ে স্থানীয়রা কেউ কিছুই জানতেন না। পুলিশ তাঁর বাড়িতে যাওয়ার পরই, স্থানীয়দের মধ্যে চাউর হয়ে যায় গোটা ঘটনা। অভিযুক্ত অমিত দত্ত বাড়ি থেকে যখন বেরোতেন, তখন একেবারে সাধারণ পোশাকে সাইকেল নিয়ে বেরোতেন। যখন প্রথম এসেছিলেন তিনি, তখন তাঁর টিনের ঘর ছিল। অভিযুক্ত অমিত নিজের স্ত্রী ছেলে এবং বৌমাকে নিয়ে বাস করতেন সেখানে।
অভিযুক্ত অমিত দত্তের স্ত্রী জানান ঠিক কী ঘটনা ঘটেছে, তিনি জানেন না। চুরির ঘটনার বিষয়েও পরিবারের লোকজন কিছু বলতে পারবেন না বলে জানান তিনি।
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।