চলতি বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি মাড়্গ্রামে বোমা মেরে খুন করা হয় তৃণমূল কর্মী জিয়ারুল আলি ওরফে লাল্টু এবং নজরুল ইসলাম ওরফে নিউটনকে। ওই ঘটনায় পরদিন আমিরুল ইসলাম নির্দিষ্টভাবে ১৫ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে।
দুই তৃণমূল কর্মী খুনে বাকি অভিযুক্তদের গ্রেফতারের সময়সীমা বেঁধে দিলেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। মঙ্গলবার বীরভূমের মাড়্গ্রামে শহিদ স্মরণে বক্তব্য রাখতে গিয়ে পুলিশ প্রশাসনকে এমনই হুঁশিয়ারি দেন তিনি। মঙ্গলবার দুপুরে কলকাতা থেকে আকাশ পথে তারাপীঠ সংলগ্ন চিলারমাঠে নামেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। সেখান থেকে সড়কপথে চলে যান মাড়্গ্রামের ব্লক অফিসের মাঠে। মাড়গ্রামে পৌঁছে দুই শহিদের বেদিতে মাল্যদান করেন।
চলতি বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি মাড়্গ্রামে বোমা মেরে খুন করা হয় তৃণমূল কর্মী জিয়ারুল আলি ওরফে লাল্টু এবং নজরুল ইসলাম ওরফে নিউটনকে। ওই ঘটনায় পরদিন আমিরুল ইসলাম নির্দিষ্টভাবে ১৫ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। তাদের মধ্যে ইতিমধ্যে ১২ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অভিযোগ তালিকায় নাম থাকা তিন জন এখনও অধরা। এনিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন ফিরহাদ হাকিম। বলেন, “আমাদের কর্মী খুনে ১২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এখনও কয়েকজন বাকি রয়েছে। আমি পুলিশ সুপারকে বলছি ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করতে হবে। সেই সঙ্গে সরকারি আইনজীবীকে বলছি কেসটা ভালো করে সাজাতে হবে। যাতে আমাদের কর্মীদের খুন করে কেউ ছাড়া না পায়। প্রত্যেকের যেন যাবজ্জীবন সাজা হয়। আর যাদের পরিবারের সদস্য মারা গিয়েছেন আমরা তাদের সঙ্গে আছি”।
মাড়্গ্রাম থেকে ফিরহাদ হাকিম চলে যান রামপুরহাটের বগটুই গ্রামে। ওই সভায় বহু মানুষের গলায় ঝুলছিল ‘দিদি আপনার সঙ্গে আছি’। এরকম পোষ্টার দেখে অভিভূত ফিরহাদ হাকিম বলেন, “এখানে যারা মারা গিয়েছেন তাদের পরিবারকে আমরা সমবেদনা জানায়। কিন্তু সেই স্বজনহারা পরিবারের এক সদস্য এখন অন্য দলে চলে গিয়েছেন। যে দলের হাতে আমাদের ধর্মের দুই হাজার মানুষের রক্ত লেগে রয়েছে। তবে মনে রাখবেন উনি ছবি তুলতে গিয়েছেন। আপনারা মনে রাখবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেও আপনাদের সঙ্গে ছিল, আগামী দিনেও থাকবেন। বগটুই গ্রামের মানুষ যে মমতার পাশে আছেন সেটা এখানে এসেই বুঝতে পারলাম”।
এদিন বগটুইয়ের সভা থেকে তিনটি মসজিদে তিনটি কম্পিউটার প্রদান করলেন ফিরহাদ হাকিম। ব্লক সভাপতি সৈয়দ সিরাজ জিম্মির এই সিদ্ধান্তের ভূয়সী প্রশংসা করেন ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, “এক সময় আমরা ধর্মগ্রন্থ শিখতে বা পড়তে মসজিদের মৌলবির কাছে যেতাম। তাঁরা আমাদের মানুষ গঠনের এবং দেশভক্তির পাঠ দিতেন। এখনকার প্রজন্ম কম্পিউটারের মাধ্যমে সেই শিক্ষা পাবেন”।
বগটুই থেকে ফিরহাদ হাকিম সোজা চলে যান তারাপীঠে। সেখানে তারাপীঠ-রামপুরহাট উন্নয়ন পর্ষদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকের পর বলেন, “এখানে ৫১ সতীপীঠ দর্শনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এনিয়ে আমরা জায়গা পেয়েছি। হিডকোকে দিয়ে ৫১ পীঠ দর্শন করিয়ে তারাপীঠে সেই রেপ্লিকা বসানোর চেষ্টা করা হবে”।