‘কে এই কালীঘাটের কাকু!’, সাংবাদিকদের সামনেই মুখ খুললেন তাপস মণ্ডল ‘ঘনিষ্ঠ’ গোপাল দলপতি।
বেআইনি নিয়োগ দুর্নীতিতে বিপুল আর্থিক নয়ছয়ের অভিযোগ উঠেছে হুগলির যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষের। এদিকে সেই ঘটনায় ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার জেরার মুখে পড়েছেন তাপস মণ্ডলের ‘ঘনিষ্ঠ’ গোপাল দলপতি। কয়েক বছর আগে তিনি তিহাড় জেলে বন্দি ছিলেন বলে জানা গেছে। সেই গোপাল দলপতির মুখেই উঠে এল ‘কুন্তলের কালীঘাটের কাকু’-র প্রসঙ্গ।
সাংবাদিকদের কাছে গোপাল বলেন, ‘কালীঘাটের কাকুর কাছে টাকা পাঠাতে হবে’, এমনই বলত কুন্তল ঘোষ। তাঁর দাবি, ‘পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত যোগাযোগ নেই। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী হিসাবে চিনতাম। কোনও টাকা আমি পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে দিইনি।’ কুন্তল প্রসঙ্গে গোপালের বক্তব্য, ‘আমার সঙ্গে তার বন্ধুত্ব হয়েছিল। যখন অভাব পড়েছে, তখন কখনও ৭০ হাজার, কখনও ৩০ হাজার, কখনও ১ লাখ টাকা দিয়েছে। অ্য়াকাউন্টে ট্রান্সফার করেছিল, হাত খরচার জন্য। সেই সময় তাপসদার কাজ দেখভাল করতাম। বলত প্রেসার দাও, ফান্ড যাতে তাড়াতাড়ি দেয়, সেকারণেই হয়তো টাকা দিত।’
গোপাল দলপতি আরও জানান, ‘তাপসদা নিয়ে গিয়েছিলেন। পরিচিত কয়েকজন বলেছিলেন যদি চাকরি-বাকরি হয়। তখন কুন্তলের কাছে নিয়ে যাই। আমি দেখলাম, নিয়োগের কাজগুলো ইতিমধ্যেই ও করেছে। নামপত্র নিচ্ছে। ও যে অ্যামাউন্ট বলেছিল, তা ওদেরকে (চাকরিপ্রার্থীদের) জানালাম। মাথাপিছু ৬ থেকে ৮ লাখ টাকা। কিন্তু ওরা কেউ টাকা দেয়নি।’
এরপরেই গোপাল বলেন, “কুন্তলকে আমি কয়েকবার বলতে শুনেছি ‘কাকু’ ‘কাকু’। কাকুর কাছে পেমেন্ট দিতে হবে। ‘কাকু’ কে, জানতাম না। কালীঘাটের কাকুর কাছে যেতে হবে, বলত। কাকু আদৌ কে, তা আমি জানি না। বলত, ‘কাকুকে তাড়াতাড়ি পেমেন্ট করতে হবে। না হলে হবে না। দাদাকে বুঝিয়ে বলো পেমেন্ট করতে।’ ওটাই তো রহস্য! কে এই ‘কাকু’, আমি নামটা জানি না।”
৯৪ লক্ষ টাকার প্রসঙ্গও আনেন গোপাল। আরও বলেন, আরমান গঙ্গোপাধ্যায় নাম বদলে তিনি নথিপত্র বানিয়েছিলেন। ‘সেবি যখন সব বন্ধ করে দিয়েছিল, তখন আমি নাম বদলাতে বাধ্য হয়েছিলাম’, দাবি গোপালের।
কুন্তল ঘোষ, তাপস মণ্ডল আর গোপাল দলপতি। নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নেমে ইদানিং সামনে আসছে এই তিনটি নাম। কুন্তল আগেই জানিয়েছিলেন,তাপস মণ্ডলের লোক গোপাল দলপতি। তিনি আমার কাছ থেকে ৬০ লাখ টাকা নিয়েছিলেন। তারপরেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা গোপাল দলপতির সঙ্গে কথা বলেছেন। সূত্রের খবর, ইডি দফতরে নিজেই ফোন করেছিলেন গোপাল। এবার তিনিই মুখ খুললেন সংবাদমাধ্যমের সামনে। তার কথাতেই উঠে এল চতুর্থ নাম, ‘কালীঘাটের কাকু’।
আরও পড়ুন-
আমার বাড়িতে কোনও পুরুষ ঢোকে না, অথচ ওনারা লিভ ইন করেন: শোভন-বৈশাখীকে ফের কটাক্ষ রত্না চট্টোপাধ্যায়ের