জগদ্ধাত্রী পুজো (Jagadhatri Puja 2024) মানেই চন্দননগর।
এই জগদ্ধাত্রী পুজোর ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট নিয়ে অবশ্য মতান্তর রয়েছে। কথিত আছে, কৃষ্ণনগর রাজবাড়ি তথা নদীয়ার ব্রাহ্মশাসন গ্রামে এই পুজোর সূচনা। শোনা যায়, রাজা কৃষ্ণচন্দ্র প্রথম জগদ্ধাত্রী পুজো আরম্ভ করেন। এইরকম নানা কাহিনী বেশ জনপ্রিয়।
এমনকি এই শোনা যায় যে, ১৭১০ খ্রিস্টাব্দে রাজা কৃষ্ণচন্দ্র প্রথম জগদ্ধাত্রী পুজোর সূচনা করেন। জমিদার বাড়ির তথ্য অনুযায়ী, ব্রিটিশদের সঙ্গে সুসম্পর্কের মূল্য চোকাতে হয়েছিল রাজা কৃষ্ণচন্দ্রকে। তাঁকে কারাগারে বন্দি করেন বাংলার নবাব মীরকাশিম।
কিন্তু কোনও এক দশমীর দিন রাজা মুক্তি পান। এরপর দুর্গাপুজোর বিসর্জন দেখে তাঁর মনে খুব কষ্ট হয় এবং তখন তো আর দুর্গাপুজো করাও সম্ভব নয়।
এরপরই তিনি স্বপ্নাদেশ পান এবং পরবর্তী কার্তিক শুক্লা নবমীতে জগদ্ধাত্রী পুজোর প্রচলন করেন। যদিও এই সময়কাল নিয়ে অনেকের মধ্যেই মতভেদ রয়েছে। কিন্তু বিখ্যাত এই জগদ্ধাত্রী পুজোর আনুমানিক সূচনা কৃষ্ণনগরের বুকেই। পরে তা চন্দননগর সহ অন্যান্য জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, হিন্দু পুরাণেও জগদ্ধাত্রী ঠাকুর নিয়ে খুব একটা বেশি তথ্য নেই। একটি সূত্র বলে, ত্রেতা যুগের শুরুতে করীন্দ্রাসুর নামে এক হস্তীরূপী অসুরকে বধ করার জন্য দুর্গার মতোই ব্রহ্মা-বিষ্ণু এবং মহেশ্বরের শক্তি থেকে সিংহবাহিনী ও চতুর্ভুজা এই দেবীর জন্ম হয়।
দেবী জগদ্ধাত্রীর চার হাতের উপরের দুটি হাতে থাকে চক্র এবং শঙ্খ। অপরদিকে, নীচের হাতগুলিতে থাকে ধনুক এবং পঞ্চবাণ। কিন্তু এই পুজো চন্দননগরে কীভাবে চলে এল? ইতিহাসবিদদের একটি অংশ মনে করেন, কৃষ্ণচন্দ্রের জমিদারির সময় তাঁর ঘনিষ্ঠ ছিলেন ফারাসিদের দেওয়ান জনৈক ইন্দ্রনারায়ণ রায়।
তিনি নিজের বাড়িতে একসময় জগদ্ধাত্রী পুজো শুরু করেন। অপর একটি সূত্রের মতে, কৃষ্ণচন্দ্রের দেওয়ান দাতারামের বিধবা কন্যা থাকতেন ভদ্রেশ্বরের তেঁতুলতলা এলাকায়। সেখানেই রাজার অনুমতি নিয়ে পুজো শুরু করেন তিনি। আর সেই পারিবারিক পুজোই বর্তমানে সার্বজনীন রুপ পেয়েছে।
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।