
পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশনের ২০১৬ সালর নিয়োগ ঘিরে দীর্ঘ জটিলতা চলছে। এবার সেই আইনি লড়াইয়ের অবসান হল। মঙ্গলবার সর্বোচ্চ আদালত জানিয়ে দিয়েছে এই নিয়োগ সম্পূর্ণ বেআইনি। রাজ্যের পক্ষ থেকে দায়ের করা রিভিউ পিটিশনও তাই খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। সদ্য আদালতের রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন নিয়োগ দুর্নীতি মামলার আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ও ফিরদৌস শামীম।
বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, এটাই হওয়ার ছিল। মুখ্যমন্ত্রী সকলকে বিভ্রান্ত করেছেন, এটা পরিকল্পিত দুর্নীতি। তাই সুপ্রিম কোর্ট সঠিক পদক্ষেপই করেছে। এখন চাকরিপ্রীর্থীদের কাছে একটাই পথ খোলা নতুন করে পরীক্ষায় বসো এবং পাশ করো। তবেই চাকরি। ফিরদৌস শামীম বলেন, এই নিয়োগ প্রক্রিয়া একেবারে দুর্নীতিগ্রস্ত, তাই দাগি স্বচ্ছ বাছাই করা যায়নি। কারণ এরা ওএমআর শিটও নষ্ট করে দিয়েছে। এর দায় সরকারকেই নিতে হবে।
গতকালের রায়ের পর প্রশ্ন যে কীভাবে অযোগ্য হিসেবে চিহ্নিত হলেন প্রার্থীরা। আদালতের পর্যবেক্ষণে তিনটি প্রধান ক্ষেত্রে প্রার্থীদের অযোগ্য বলা হয়েছে। প্রথমত, এসএসসি পরীক্ষার খাতা থেকে বহু ফাঁকা উত্তরপত্র উদ্ধার হয়েছে, যেগুলো জমা দিয়েই কেউ কেউ চাকরি পেয়েছে। দ্বিতীয়ত সরকারি তালিকায় নাম না থাকা সত্ত্বেও অনেকেই চাকরি পেয়েছে। তৃতীয়ত, নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও সেই তালিকা থেকে নিয়োগ হয়েছে।
আদালত জানিয়েছে, সব চাকপ্রার্থীকে একইভাবে দেখা যাবে না। যাঁদের খাতা উদ্ধার হয়নি বা যাদের ক্ষেত্রে এমন কোনও প্রমাণ নেই তাদের আলাদা করে শনাক্ত করা হয়নি। সে কারণে সমগ্র প্রক্রিয়া বাতিল করা হয়েছে। তবে, এই প্রার্থীদের বেতন ফেরতের প্রয়োজন নেই। যদিও চাকরি তারা রাখতে পারবেন না।
আদালতে বলা হয়েছে, পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া অসাংবিধানিক। সংবিধানের ১৪ থেকে ১৬ অনুচ্ছেদের পরিপন্থী এই নিয়োগ। তাই প্রক্রিয়াটি বাতিল হওয়াই স্বাভাবিত। তবে যাঁদের বিরুদ্ধে সরাসরি প্রমাণ মেলেনি, তাঁদের বেতন ফেরত দেওয়ার প্রশ্ন উঠছে না।