মেয়ের পাশ করার আনন্দ নয় বরং শোকের ছায়া নিহত তরুণীর পরিবারে। উচ্চ মাধ্যমিকে সাফল্য পেলেও রেজাল্ট দেখার জন্য আর নেই তাঁর মেয়ে।
উচ্চ মাধ্যমিকের পর ইচ্ছে ছিল নার্স হওয়ার। সেইমত নিয়েছিলেন প্রস্তুতিও। কিন্তু উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফল আর দেখা হল না কালিয়াগঞ্জের নিহত মেয়েটির। উচ্চ মাধ্যমিকে ২৪৩ নম্বর পেয়ে পাশ করেছেন হেবঘাটার গাঙ্গোয়া গ্রামের নাবালিকা পড়ুয়া। মেয়ের রেজাল্ট দেখে শুধু বিষাদের ছাপ নিহত নাবালিকার মায়ের মুখে। মেয়ের পাশ করার আনন্দ নয় বরং শোকের ছায়া নিহত তরুণীর পরিবারে। উচ্চ মাধ্যমিকে সাফল্য পেলেও রেজাল্ট দেখার জন্য আর নেই তাঁর মেয়ে।
অশ্রুভারাক্রান্ত কণ্ঠে নিহত নাবালিকার মা বললেন,'বড় হয়ে নার্স হতে চেয়েছিল মেয়ে। কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরণ হল না। মেয়ে পড়াশোনায় ভালো ছিল। ইচ্ছে ছিল মানুষের মত মানুষ হয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াবে। মেয়ের ইচ্ছে ছিল নার্স হবে। উচ্চ মাধ্যমিকের রেজাল্ট দেখে খুবই দুঃখ হচ্ছে। আফসোস হচ্ছে যদি আজ মেয়ে বেঁচে থাকতো তাহলে রেজাল্ট দেখে কত আনন্দ পেত। দোষীদের চরম শাস্তি হোক। ওঁর মৃত্যুতে সিবিআই তদন্ত চাই।'
কালিয়াগঞ্জের সাহেবঘাটা গ্রামের বাসিন্দা কিশোরী। এলাকারই এক তরুণের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। বৃহস্পতিবার বিকেলে নাবালিকা বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল। তারপর আর কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরিবারের সদস্যরা পঞ্চায়েত প্রধানের দ্বারস্থ হন। সেখানেই তারা জানতে পারে নাবালিকা তার প্রেমিকের সঙ্গে রয়েছে। কিন্তু শুক্রবার সকালে বাড়ির কাছেই একটি পুকুর থেকে উদ্ধার হয় কিশোরীর নিথর দেহ।
তারপরই ঘটনাস্থলে পৌঁছন বিজেপির প্রতিনিধি দল। নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে এদিন সাহেবঘাটা পৌঁছন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, রায়গঞ্জের বিজেপি সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী, উত্তর মালদার সাংসদ খগেন মুর্মু, ইংরেজ বাজারের বিধায়ক শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী-সহ বিজেপির একাধিক রাজ্য প্রতিনিধি দল। গোটা ঘটনাকে পুলিশের চূড়ান্ত ব্যর্থতার ফল বলেই দাবি করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। পাশাপাশি পুলিশ ইচ্ছাকৃতভাবে ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ জানান তিনি। চোপড়ার ঘটনার প্রসঙ্গ টেনেও পুলিশ ও রাজ্য সরকারকে দুষলেন সুকান্ত। তাঁর দাবি চোপড়ায়ও একই ধাঁচে আক্রমণের শিকার হয়েছিলেন এক রাজবংশী মেয়ে। সেক্ষেত্রেও আত্মহত্যার তত্ত্ব খাড়া করেছিল পুলিশ। একই ধাঁচে বারবার অপরাধ সংগঠিত হওয়া সত্ত্বেও ঠিকভাবে তদন্ত করছে না পুলিশ। এখানেই শেষ নয় প্রতিটি ঘটনা ধামাচাপা দেওয়াতে কালিয়াগঞ্জের আইসির ভূমিকা আছে বলেও দাবি করেন তিনি। অবিলম্বে আইসি এবং গ্রামের প্রধানের বিরুদ্ধে তদন্তেরও দাবি তোলেন সুকান্ত।