কৌস্তব বাগচী জানান যে যদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর কাছে ক্ষমা চান, তবে তিনিও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ক্ষমা চাইবেন।
আদালত থেকে বেরিয়েই মস্তক মুণ্ডন করলেন কংগ্রেস নেতা তথা আইনজীবী কৌস্তভ বাগচী। জামিনে মুক্তি পাওয়ার পরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে উৎখাত করার শপথ নিলেন কৌস্তভ বাগচী। শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ ব্যাঙ্কশাল আদালতে কৌস্তভ বাগচীর জামিন মঞ্জুর হয়। আদালত থেকে বেড়িয়েই আইনজীবীর হুঙ্কার,'মমতার রাতের ঘুম কেড়ে নেব।' যেমন বলা তেমনি কাজ। আদালত থেকে বেরিয়েই মস্তক মুণ্ডন করলেন তিনি। মমতার সরকারকে উৎখাত না করা পর্যন্ত মাথায় চুল রাখবেন না বলে শপথ নিলেন কৌস্তুভ বাগচী। তাঁর কথায়,'যত দিন না মমতা সরকারকে উৎখাত করছি, ততদিন মাথার চুল রাখব না।' পাশাপাশি তিনি এও জানান যে যদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর কাছে ক্ষমা চান, তবে তিনিও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ক্ষমা চাইবেন।
প্রসঙ্গত, গ্রেফতার হওয়ার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই জামিন পেলেন আইনজীবী তথা কংগ্রেস নেতা কৌস্তুভ বাগচী। আইনজীবীর গ্রেফতারির বিরোধিতায় সরব হয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। এই মর্মে ফেসবুকে একটি দীর্ঘ পোস্টও করেন তিনি। কিন্তু এর মধ্যে কংগ্রেস নেতৃত্বকে খোঁচা দিয়ে তিনি লেখেন,' আজ যা হলো তা কংগ্রেসের তৃণমূলের প্রতি "ধরি মাছ না ছুঁই পানি" সম্পর্কের জন্য।' এই প্রসঙ্গে উদাহরণ স্বরূপ বেশ কিছু ঘটনার কথা তুলে ধরেছেন তিনি। এদিন ফেসবুক পোস্টে শুভেন্দু অধিকারী লেখেন,'কলকাতা হাইকোর্টের সুপরিচিত আইনজীবী ভাতৃপ্রতিম কৌস্তভ বাগচীর বাড়িতে মাঝরাতে মমতা পুলিশের হানা দেওয়া ও বেআইনি গ্রেফতারির তীব্র নিন্দা জানাই।কৌস্তভ অবশ্যই এই স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া এক প্রতিবাদী কণ্ঠ, তার গ্রেফতারি হল পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী কণ্ঠকে দমন করার এক অপচেষ্টা।' পাশাপাশি তিনি আরও বলেন,'যদি কাউকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করা গ্রেফতারির কারণ হয় তবে আগে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী কে অবিলম্বে গ্রেফতার করা উচিত দেশের সম্মানীয় প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বারংবার তুই তোকারি করে ব্যক্তিগত কুরুচিকর শব্দবন্ধ প্রয়োগ করার জন্য।'
এখানেই শেষ নয়, গোটা ঘটনার জন্য কংগ্রেস নেতৃত্বকে দায়ী করেছেন তিনি। প্রদেশ এবং এআইসিসি নেতৃত্ব বার বার কী ভাবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর দলকে বারবার সাহায্য করেছে সেই প্রসঙ্গ তুলে বেশ কিছু ঘটনাকে উদাহরন হিসেবে তুলে ধরেছেন। প্রথমেই তিনি লিখেছেন,'মেট্রো ডেয়ারির মালিকানাধীন সংস্থা কেভেন্টারের হয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষে মামলা লড়তে মহামান্য কলকাতা হাইকোর্টে আসেন কংগ্রেসের বরিষ্ঠ কেন্দ্রীয় নেতা পি চিদাম্বরম।' পরবর্তী উদাহরণের মধ্যে তিনি উল্লেখ করেছেন,'DA মামলায় রাজ্য সরকারী কর্মচারীদের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে মহামান্য সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য সরকারের পক্ষে সওয়াল করছেন কংগ্রেসের সাংসদ-আইনজীবী ডঃ অভিষেক মনু সিংভি।হয়তো কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতা ডঃ অভিষেক মনু সিংভি কে পশ্চিমবঙ্গ থেকে রাজ্যসভার সদস্য করতে তৃণমূল বিধায়করা যে সমর্থন করেছিলেন তার প্রতিদান দিচ্ছেন। এছাড়া কেষ্ট মণ্ডলের দিল্লি যাত্রা রুখতে ও জামিন করাতে মহামান্য দিল্লি হাইকোর্টে বুক চিতিয়ে লড়ছেন কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতা কপিল সিব্বল।সর্বশেষে আমার কাছে নন্দীগ্রামে ১৯৫৬ ভোটে হেরে মাননীয়া যখন ভবানীপুরে নির্বাচনে লড়তে গেলেন তখন কংগ্রেস সমর্থনসুচক ভাবে প্রতিনিধি নামালেন না নির্বাচনে।'
আরও পড়ুন -
অবশেষে জামিন মঞ্জুর, হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন পেলে কংগ্রেস নেতা কৌস্তুভ বাগচী
'পাশে আছি' জেল থেকে ছাড়া পেয়েই আইনজীবী তথা কংগ্রেস নেতা কৌস্তুভ বাগচীর পাশে থাকার বার্তা দিলেন নওসাদ
কংগ্রেসের কৌস্তুভের গ্রেফতারির বিরোধিতা তৃণমূলের কুণালের, বললেন 'বুঝেনিত ছাত্রযুবরা'