মানব উন্নয়ন সূচক অনুযায়ী দেশের মধ্যে কেরালা সব থেকে আগে বলেও দাবি করেন তিনি। প্রকাশ্য সভায় এদিন বিবিসির অফিসে আয়কর অভিযান নিয়েও সুর চড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন।
আজ ১৭ ফেব্রুয়ারি হাওড়ায় আয়োজিত হল সারা ভারত খেত মজুর সম্মেলন। প্রকাশ্য সভায় এদিন বিজেপির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ভেঙে দিতে চাওয়া এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রিতি নষ্টের চেষ্টা করার অভিযোগ তোলেন প্রধান বক্তা কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। রাজ্য ও দেশের ক্ষেত মজুরদের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকাতেও আঙুল তোলেন তিনি। পাশাপাশি এদিন কৃষক আন্দোলনের ঐতিহাসিক জয়ের প্রসঙ্গও শোনা যায় বিজয়নের মুখে। তিনি বলেন,'স্বাধীন ভারতে এই প্রথম ঘোষিত কৃষক আইন বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে সরকার।' পাশাপাশি এদিন কেরলের প্রভূত উন্নতির কথাও বলেন তিনি। মানব উন্নয়ন সূচক অনুযায়ী দেশের মধ্যে কেরালা সব থেকে আগে বলেও দাবি করেন তিনি। প্রকাশ্য সভায় এদিন বিবিসির অফিসে আয়কর অভিযান নিয়েও সুর চড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন।
সারা ভারত খেত মজুর সম্মেলনে প্রকাশ্য সমাবেশেই কেন্দ্রীয় সরকারকে একের পর এক তোপ দাগলেন কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। এদিন বিজয়ন বলেন বাংলার কৃষক আন্দোলনের কথা উল্লেখ করে বলেন,'এই আন্দোলন কৃষকদের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নজির সৃষ্টি করেছে।' তিনি আরও বলেন,'রাজ্য ও দেশের খেত মজুররা মানুষের খাবার যোগায়।কিন্তু বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার সেই খাবার যোগানকারীদের জন্য কি করেছে? সম্প্রতি কৃষক আন্দোলন ঐতিহাসিক জয় এনেছে।' এরপর বিজয়নের মুখে শোনা গেল কেরলের প্রভূত উন্নতির কথা। তাঁর কথায়,'নীতি আয়োগ, ইউনাইটেড নেশনের তথ্য দেখে নিন। মানব উন্নয়ন সূচক অনুযায়ী দেশের মধ্যে এক নম্বরে রয়েছে কেরালা। বিগত কয়েক বছরে কোনো সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়নি।শিশু মৃত্যু, মাতৃত্ব কালীন মৃত্যুর হার একেবারে কম। জনস্বাস্থ্য,স্কুল শিক্ষা,কর্মসংস্থান সব দিকেই এগিয়ে কেরালা।' তিনি আরও সংযোজন করেন,'মূল্যবৃদ্ধির সময় কেরালায় দৈনিক মজুরী বেড়েছে। ফল সবজির বাজার দর বেধে দেওয়া হয়েছে।ফলে ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়েই উপকৃত হয়েছে। শুধু তাই নয়, ৩.২৫ লাখ পরিবারকে আবাসন করে দেওয়া হয়েছে।'
প্রকাশ্য সমাবেশে দাঁড়িয়ে বিজেপি যুক্তরাষ্ট্রিয় কাঠামো ভাঙতে চাইছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন রাজ্যে রাজ্যপাল পদের অপব্যবহার করে গণতান্ত্রিক কাঠামো ভাঙার চেষ্টা চলছে বলেও দাবি করেন তিনি। পাশাপাশি দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের চেষ্টা করার অভিযোগও তোলা হয় বিজেপির বিরুদ্ধে। তিনি বলেন,'বিজেপি শাসিত কেন্দ্রীয় সরকার চাইছে আমাদের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ভেঙে ফেলে সমস্ত ক্ষমতা কেন্দ্রের হাতে কেন্দ্রীভূত করতে। আসলে কী জানেন, এই শুনছেন ওয়ান নেশন ওয়ান ট্যাক্স, ওয়ান নেশন ওয়ান ইউনিফর্ম, ওয়ান নেশন ওয়ান ইলেকশন এই সবই হচ্ছে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ভেঙে ফেলার চক্রান্ত।' বিজেপি সাম্প্রদায়ীক বিষ ছড়াচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি। তিনি বলেন,'সারা বিশ্বে ধর্ম নিরপেক্ষ দেশ হিসেবে পরিচিত ভারত। কিন্তু তা ভুলিয়ে সাম্প্রদায়িক মেরুকরণ করছে বিজেপি।' পাশাপাশি বিবিসির অফিসে আয়কর হানা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিজয়ন। তাঁর কথায়,'বিজেপিকে হারানো সম্ভব।একজোট হয়ে গণতান্ত্রিক উপায়ে লড়াই করতে হবে।'
আরও পড়ুন -
পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নতুন বার্তা কি ভেঙে পড়ার লক্ষণ? আদালত থেকে বেরোবার পথে অন্য ছবি
রাজ্য সরকার 'জাদুকর' নয়, ডিএ বৃদ্ধি নিয়ে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়