শুক্রবার তৃণমূলের তোলাবাজি, বিভিন্ন প্রকল্পে দুর্নীতির প্রতিবাদে রামপুরহাট শহরে মিছিল করে সিপিএম। মিছিল শেষে রামপুরহাট পাঁচমাথা মোড়ে পথসভা করেন সুজন চক্রবর্তী।
"অনুব্রত মণ্ডল এখন জেলে। তাই লুঠের টাকা কালীঘাটে নিয়ে যাওয়ার জন্যই মুখ্যমন্ত্রী বীরভূমের দায়িত্ব নিজের হাতে নিয়েছেন। কারণ বীরভূম জেলা মাসে একশো কোটি টাকা কালীঘাটে পৌঁছে দেয়"। শুক্রবার বীরভূমের রামপুরহাটে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এমনই অভিযোগ করেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী।
শুক্রবার তৃণমূলের তোলাবাজি, বিভিন্ন প্রকল্পে দুর্নীতির প্রতিবাদে রামপুরহাট শহরে মিছিল করে সিপিএম। মিছিল শেষে রামপুরহাট পাঁচমাথা মোড়ে পথসভা করেন সুজন চক্রবর্তী। পথসভায় তোলাবাজি নিয়ে তৃণমূলকে তুলোধোনা করেন এই সিপিএম নেতা। তিনি বলেন, "এই সরকার লুঠের সরকার। এরা বালি, পাথর, কয়লার টাকা লুঠ করছে"। সভা শেষে রামপুরহাটের দলীয় কার্যালয়ে বৈঠক করেন।
এদিন সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সুজন চক্রবর্তী বলেন, "বীরভূমে ডিসিআরের নামে তোলা তুলছে তৃণমূলের নেতারা। প্রতিদিন জেলায় সাড়ে তিন কোটি টাকা আদায় হয়। অনুব্রত মণ্ডল ৭৫ শতাংশ টাকা কালীঘাটে পৌঁছে দিত। কিন্তু তিনি এখন জেলে। তাই লুঠের টাকার ভাগ ঘরে তুলতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বীরভূমের দায়িত্ব নিয়েছেন। যাতে পুরো টাকা কালীঘাটে নিয়ে যাওয়া যায়"।
জেলায় সন্ত্রাস প্রসঙ্গে সুজনবাবু বলেন, "বগটুই গণহত্যার পর মুখ্যমন্ত্রী সমস্ত বোমা, অস্ত্র উদ্ধার করতে বলেছিলেন। কিন্তু সেটা যে উদ্ধার হয়নি তার বড় প্রমাণ মাড়গ্রামে দুই তৃণমূল কর্মী খুন। যারা মারছে তারাও তৃণমূল। শুধুমাত্র লুঠের টাকার বখরা নিতেই খুনোখুনি চলছে"।
দিন কয়েক আগেই অনুব্রত মন্ডলের প্রধান প্রতিপক্ষ কাজল শেখের কথায় উঠে এসেছিল বিতর্ক। তাঁর অভিযোগ ছিল জেলে বসেই বীরভূমে দলের অন্দরে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন অনুব্রত। তাতেই কোর কমিটিতে দলনেত্রী তাঁর নাম তালিকাভুক্ত করার পরেও ঠাঁই হয়নি। বৈঠক মাঝপথে ছেড়ে বেরিয়ে আসেন কাজল শেখ। তারপরই ক্ষোভ উগরে দেন তিনি।
অনুব্রত মণ্ডল বিহীন বীরভূমে ফের তৃণমূলের গোষ্ঠী প্রকাশ্যে এসেছে। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ সপ্তাহে একদিন করতে হবে কোর কমিটির বৈঠক। কিন্তু সেই নির্দেশ মানা হচ্ছে না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গড়ে দেওয়া কোর কমিটির নতুন সদস্য নানুরের কাজল শেখ। তার অভিযোগ জেল থেকেই অনুব্রত মণ্ডলের নির্দেশে দল চলছে। এমনটাই তাকে জানিয়েছেন বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি, সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায় চৌধুরী। যদিও কাজল শেখের অভিযোগের গুরুত্ব দিতে চাননি বিকাশ রায় চৌধুরী।
কাজল শেখের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বীরভূম জেলা সফরে এসে সাত সদস্যের একটি কোর কমিটি গঠন করে দিয়েছেন। সপ্তাহে একদিন করে জেলার সাংগঠনিক দিক থেকে কোর কমিটি বৈঠক করার নির্দেশ দিয়ে যান দলনেত্রী। কাজলের দাবি, কোর কমিটি কোন বৈঠক করছে না। এমনকি কাজলের কোর কমিটিতে জায়গা হওয়াটা অনুব্রত ঘনিষ্ঠ অন্যান্য কোর কমিটির সদস্যরা মেনে নিতে পারছেন না।