চলতি মাসেই গ্রেফতার করা হয়েছিল বগটুই হত্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত লালন শেখকে। সিবিআই ক্যাম্প অফিসে উদ্ধার হয় ঝুলন্ত দেহ। লালন শেখের মৃত্যু ঘিরে রহস্য দানা বাঁধছে।
সিবিআই হেফাজতে ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করা হল বগটুই গণহত্যা কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত লালন শেখের। সোমবার সন্ধ্যার দিকে তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ে। তবে এখনও পর্যন্ত সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে কোন বিবৃতি দেওয়া হয়নি। অন্যদিকে বীরভূম জেলা পুলিশ ঘটনার কথা স্বীকার করে নিয়েছে। সূত্রের খবর রামপুরহাটের অস্থায়ী সিবিআই ক্যাম্প অফিসের শৌচাগারে ঝুলন্ত অবস্থায় লালন শেখের দেহ উদ্ধার হয়। কী কারণে মৃত্যু তা এখনও স্পষ্ট নয়। ভিডিওগ্রাফি করে দেহ উদ্ধার হয়েছে। দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠান হয়েছে।
লালন শেখের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে তার আত্মীয় ও পরিচিতরা স্থানীয় হাসপাতালে ভিড় করতে শুরু করে। অন্যদিকে বীরভূম জেলা পুলিশের একটি দলও সিবিআই ক্যাম্প অফিসে পৌঁছে যায়। সূত্রের খবর লালনের দেহ যখন উদ্ধার হয়েছিল তখন গলায় জড়ান ছিল একটি লাল গামছা।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ২১ মার্চ ১৪ নম্বর জাতীয় সড়তের ধারে বগটুই মোড়ে বোমা মেরে খুন করা হয় বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তৃণমূলের ভাদু শেখ। খুনের বদলা নিতে ওই রাতেই বগটুই গ্রামের একাধিক বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। আগুনে পুড়ে মৃত্যু হয় ১০ জনের। তাদের মধ্যে ৯ জন মহিলা। এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ছিল লালন শেখ। অভিযোগ স্থানীয়দের। ঘটনার পরের দিনও তাকে গ্রামে দেখা যায়। ঘটনার পরদিন রাজ্য সরকার সিট গঠন করে। তারও দুই দুদিন পর হাইকোর্টের নির্দেশে ঘটনার তদন্ত হতে নেয় সিবিআই। সেই সময় থেকেই ফেরার হয়ে যায় লালন শেখ। অবশেষে গত শনিবার লালন শেখকে গ্রেফতার করে সিবিআই। ৫ ডিসেম্বর পেশ করা হয় রামপুরহাট আদালতে। সেই সময় আদালত সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিল।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় গ্রেফতার করা হয় তৃণমূলের রামপুরহাট ১ নম্বর ব্লক সভাপতি আনারুল হোসেনকে। সিবিআই তদন্ত হাতে নেওয়ার পর ২১ জুন প্রাথমিক চার্জশিট জমা দেয়। ওই চার্জশিটে লালন শেখকে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মূল অপরাধী হিসেবে লেখা হয়। অন্যদিকে ভাদু শেখ খুনের প্রত্যক্ষদর্শী হিসাবেও তার নাম ছিল। কারণ লালন ছিল ভাদুর ছায়াসঙ্গী। ভাদুকে খুনের সময় লালন পাশেই ছিল বলে স্থানীয় তৃণমূল নেতা কর্মীরা দাবি করেছে।
ফলে লালনের রহস্যজনক মৃত্যু বগটুই কাণ্ডে বহু তথ্য অজানা থেকে হবে বলে মনে করা হচ্ছে। ঘটনার আট মাস পর ৩ ডিসেম্বর লালনকে ঝাড়খণ্ডের নরোত্তমপুর গ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরদিন রামপুরহাট মহকুমা আদালতে তুলে ছয় দিনের হেফাজতে নেয় সিবিআই। গত শনিবার ফের আদালতে তুলে তিনদিনের হেফাজতে নেয় সিবিআই। মঙ্গলবার তাকে ফের আদালতে তোলার কথা ছিল। তার আগেই লালনের রহস্যজনক মৃত্যু অনেক প্রশ্ন সামনে নিয়ে এসেছে।
আরও পড়ুনঃ
'কেউ তৃণমূলের ক্ষতি করতে পারবে না', পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের এই মন্তব্যের তৃণমূল-বিজেপি তরজা
স্কুল শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় স্বস্তি নেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের, নাকচ জামিনের আবেদন