বুধবার গভীর রাতে সাদ্দামকে আলাঘর থেকেই গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান সাদ্দামের ঘরের গোপন সুড়ঙ্গ দিয়ে সে পালিয়ে যায়।
প্রায় ৫৬ দিন লুকিয়ে ছিল সন্দেশখালির (Sandeshkhali) বাঘ শেখ শাহজাহান (Shahjahan)। পুলিশ টেরও পায়নি। গোপন আস্তানা ছিল আলাঘর। সেই একই জায়গায় দিন দুই লুকিয়ে ছিল কুলতলির (Kultali) প্রতারক সাদ্দাস সর্দার (Saddam Sardar)। বাড়ির শোওয়ার ঘরে খাটের তলা থেকে লম্বা সুড়ঙ্গ কাটার জন্যই রাতারাতি সে কুখ্যাত হয়েছিল। সেই সাদ্দামকেও কিন্তু আশ্রয় নিতে হয়েছিল আলাঘরে।
বুধবার গভীর রাতে সাদ্দামকে আলাঘর থেকেই গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান সাদ্দামের ঘরের গোপন সুড়ঙ্গ দিয়ে সে পালিয়ে যায়। সেই সুড়ঙ্গের একটি মুখ ছিল বাড়ির সংলগ্ন খালে। সেখান থেকেই নৌকায় করে গোপন ডেরায় ঘাপটি মেরে বসেছিল সাদ্দাম। জলপথেই পালিয়ে গিয়েছিল সাদ্দাম।
শাহজাহান , সাদ্দামদের গোপন ডেরা আলাঘর। কী এই আলাঘর- যেখানে গা ঢাকা দিচ্ছে দুষ্কৃতীরা- সাধারণ যেখানে মাছের ভেড়ি থাকে সেখানেই থাকে আলাঘর। এই ঘরে বসেই রাতের অন্ধকারে মাছ যাতে চুরি না হয় তার জন্য পাহারা দেওয়া হয়। অনেক সময় ভেড়ির মাঝখানে তৈরি করা হয় আলাঘর। টিন বা খড়ের ছাউনি দেওয়া ঘর। বাঁশ বা দরমার তৈরি বেড়া দিয়ে ঘেরা থাকে। এই আলাঘরে মোটের ওপর একজন থেকে তিন জন কোনও রকমে থাকতে পারে। সেই আলাঘরকেই নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে ব্যবহার করেছে শাহজাহান ও সাদ্দামরা। কারণ এই জায়গা একটি সাধারণ সহজে পুলিশের সন্দেহ হবে না। তারপর জলের মধ্যে বা ভেড়ের ধারের ছোট্ট ধর অনেক সময় নজরের বাইরে থেকে যায়। সাধারণত মানুষের যাতায়াত খুবই কম। তাই আগে পুলিশও আলাঘরকে তেমন গুরুত্ব দিত না তল্লাশি অভিযানের ক্ষেত্রে।
সাদ্দামকে ১২ দিনের পুলিশ হেফাজত দিয়েছে আদালত। যদিও সরকারি আইনজীবী - ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের আবেদন জানানো হয় কুলতুলি কাণ্ডে। সাদ্দাম সরদার ও মান্নান খানকে বৃহস্পতিবার বারুইপুর মহকুমা আদালতে পেশ করা হয়। মামলায় জয়নগর ও কুলতুলি থানায় এদের নামে একাধিক মামলা আছে বলে উল্লেখ। এখনও পর্যন্ত অস্ত্র উদ্ধার হয়নি। পুলিশকে লক্ষ্য করে যে আগ্নেয়াস্ত্র দেখানো হয় তার ভিডিও ফুটেজ আছে বলে আদালতে উল্লেখ।
জামিনের বিরোধিতা করেন সাদ্দামের আইনজীবী। তাঁর দাবি বিষয়টি বড় করে দেখানো হচ্ছে। কোনও অস্ত্র সাদ্দামের কাছে নেই। সাদ্দাম একজন সমাজসেবী। ভুল তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ যায়। সাদ্দামকে ধরতে গেলে গ্রামের মানুষ ধরার কারণ জিজ্ঞাসা করার জন্য যায়।
১১৩ টেরোরিস্ট অ্যাক্ট দেওয়া হয়েছে যা যুক্তিহীন। সেইরকম কোনও ঘটনা ঘটেনি।