রাজ্যে সপ্তম দফা লোকসভা নির্বাচনের আগে প্রচারে কার্যত ঝড় তুলেছে বিজেপি। মঙ্গলবার, উত্তর কলকাতায় রোড-শোয়ের পর বুধবার কাকদ্বীপের জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তৃণমূলকে তীব্র আক্রমণ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
রাজ্যে সপ্তম দফা লোকসভা নির্বাচনের আগে প্রচারে কার্যত ঝড় তুলেছে বিজেপি। মঙ্গলবার, উত্তর কলকাতায় রোড-শোয়ের পর বুধবার কাকদ্বীপের জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তৃণমূলকে তীব্র আক্রমণ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
উল্লেখ্য, কাকদ্বীপ মূলত মথুরাপুর লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে পড়ে। এই কেন্দ্রেই বুধবার জনসভা ছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। মথুরাপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী অশোক পুরকাইত ছাড়াও এই সভায় উপস্থিত ছিলেন জয়নগরের বিজেপি প্রার্থী অশোক কান্ডারি এবং ডায়মন্ডহারবারের বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ দাস। মঙ্গলবার, রাজভবনে রাত কাটান প্রধানমন্ত্রী। তারপর সেখান থেকেই সোজা কাকদ্বীপ রওনা দেন তিনি।
কাকদ্বীপে জনসভার শুরুতে নরেন্দ্র মোদীর গলায় উত্তরীয় দিয়ে সম্মান জানান বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। বক্তব্য রাখতে উঠে প্রথমেই সকলকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “মথুরাপুরের এই পবিত্র মাটিতে আপনাদের আশীর্বাদ পেয়ে আমার ভীষণ ভালো লাগছে। খুব খুশি আমি। যে ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড় এসেছিল, তার জন্য এই জনসভা আয়োজন করা বেশ কঠিন হয়ে পড়েছিল। কিন্তু এত কম সময়ের মধ্যে আপনারা তা করে দেখাতে পেরেছেন। সব ঠিকঠাক ভাবেই হয়েছে।”
প্রধানমন্ত্রী আরও যোগ করেন, “আপনাদের ধন্যবাদ জানাতে চাই। কলকাতার মানুষকেও জানাই ধন্যবাদ। গতকাল কলকাতার রোড-শোয়ে মানুষ যেভাবে ভালবাসা এবং আশীর্বাদ উজাড় করে দিয়েছেন আমাকে, তা আমি কোনওদিন ভুলব না।”
আর কাকদ্বীপের এই জনসভা থেকেই তৃণমুলকে তীব্র আক্রমণ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, “তৃণমূল এবং এই ইন্ডিয়া জোট আসলে বাংলার ক্ষতি চায়। ওরা রাজ্যকে উল্টো দিকে নিয়ে চলে যাওয়ার চেষ্টা করছে। বিজেপি বাংলাকে যেভাবে ভালোবাসছে, সেটা তৃণমূলের সহ্য হচ্ছে না। দেশের বিকাশের জন্য মোদী যা করে, সেটা তৃণমূল চায়না বাংলায় হোক।”
তিনি আরও যোগ করেন, “এই সোনার বাংলার অস্তিত্ব নষ্ট করতে চাইছে তৃণমূল। মঠ এবং সাধু-সন্তদের অপমান করেছে ওরা। ভারত সেবাশ্রম, রামকৃষ্ণ মিশন এবং ইস্কনের মতো প্রতিষ্ঠানকে রীতিমতো অপমান করেছে তৃণমূল। এমনকি তৃণমূলের গুন্ডাবাহিনী এইসব মঠে হামলাও চালাচ্ছে।”
মোদী অভিযোগ করেছেন, “বাংলায় তৃণমূল মুসলমানদের ভুয়ো ওবিসি সার্টিফিকেট দিয়েছে। আসলে ওবিসিদের অধিকার কেড়ে নিয়ে তা মুসলমানদের দেওয়া হচ্ছে। শেষপর্যন্ত, কলকাতা হাইকোর্ট তা রদ করেছে। তৃণমূলকে এই নির্দেশ মানতেই হবে। কিন্তু ওরা মুসলমানদের ভুল বোঝাচ্ছে এবং মিথ্যে কথা বলছে। তৃণমূলের জন্যই বাংলায় অনুপ্রবেশ এত বেড়ে গেছে।
তাঁর মতে, “ওরা যুবদের অধিকারও কেড়ে নিচ্ছে। যা নিয়ে এইমুহূর্তে পুরো দেশ চিন্তিত হয়ে পড়েছে। ৪ জুনের পর হাওয়া বেরিয়ে যাবে তৃণমূলের। বাংলাকে উন্নয়ন থেকে দূরে রেখেছে তৃণমূল। একমাত্র বিজেপিই সেই উন্নয়ন করে দেখাতে পারে।”
সবমিলিয়ে, পশ্চিমবঙ্গে শেষ দফা নির্বাচনের আগে কাকদ্বীপের মাটিতে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাজনৈতিক বার্তা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।