
আবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশীর্বাদের হাত তাঁর একান্ত অনুগত অনুব্রত মণ্ডলের মাথায়। আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচন। আর তার আগেই বীরভূমের পাশাপাশি মুর্শিদাবাদের বড়ঞা বিধানসভা এলাকার দায়িত্ব দিয়ে দিলেন তাঁর 'স্নেহের' কেষ্টার ঘাড়ে। ২০২৬ সালের এই বিধানসভা কেন্দ্রের দায়িত্ব থাকবেন অনুব্রত মণ্ডল। অর্থাৎ বিধানসভা নির্বাচন পর্যন্ত এই বিধানসভা কেন্দ্রে শেষ কথা বলবেন অনুব্রত।
২০২৬ সালে বড়ঞা বিধানসভা কেন্দ্রে জয়ী হয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। বিজেপি প্রার্থী অমিয়কুমার দাসকে ২৭০০ ভোটে হারিয়ে জয়ী হয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী জীবনকৃষ্ণ সাহা। যিনি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ১৩ মাস জেলবন্দি ছিলেন। তথ্য উড়িয়ে দেওয়ার জন্য নিজের দামি আইফোন পর্যন্ত পুকুরে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছিলেন। সম্প্রতি জামিনে মুক্তি পেয়েছেন জীনকৃষ্ণ সাহা। তবে জামিনে মুক্তি পেয়ে নিজের বিধানসভা কেন্দ্রে ফিরে গেছেন। কিন্তু তাঁর ১৩ মাসের অনুপস্থিতিতে বড়ঞা বিধানসভা এলাকায় রীতিমত সক্রিয় হয়েছে বিজেপি। তাই আসন্ন ভোটে বিজেপির মোকাবিলায় মমতা এখন কোনও ঝুঁকি নিতে রাজি নন। আর সেই কারণেই ভরসা রেখেছেন নিজের সবথেকে অনুগত অনুব্রত মণ্ডলের ওপর।
অনুব্রত মণ্ডলকে বড়ঞা বিধানসভা এলাকার গুরুদায়িত্ব দেওয়ার কথা দ্রুত জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল স্থানীয় বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাকেও। তিনি গোটা ঘটনায় যথেষ্ট খুশি। তিনি জানিয়েছেন, অনুব্রত মণ্ডল যথেষ্ট অভিজ্ঞ নেতা। বিধানসভা নির্বাচনে তাঁর সুবিধে হবে। তিনি আরও বলেছেন, 'কেষ্টদার মতো দক্ষ নেতাকে দিদি আমার বিধানসভার দায়িত্বে পাঠিয়েছেন। আমি দলের নির্দেশ মেনেই কাজ করব। কেষ্টদার সঙ্গে আমার পরিচয় দীর্ঘ দিনের। তাই কাজ করতে সুবিধাই হবে।' মুর্শিদাবাদ জেলা সূত্রের খবর, অনুব্রত আর জীবনকৃষ্ণ সাহার মধ্যে রীতিমত সুসম্পর্ক রয়েছে। কারণ ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের সময় বড়ঞা বিধানসভা এলাকার জন্য প্রার্থী খুঁজে পাচ্ছিল না তৃণমূলের রাজনৈতিক পরামর্শদাতা সংস্থা আইপ্যক। কারণ সেইবছরই এলাকাটিকে তফশিলি সংরক্ষিত হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল। সেই সময় অনুব্রত মণ্ডলই জীবনকৃষ্ণ সাহার নাম সুপারিশ করেছিল।
তৃণমূল কংগ্রেসের অনুমান, আগামী বিধানসভা নির্বাচনেও বড়ঞা কেন্দ্রে প্রার্থী করা হতে পারে জীবনকৃষ্ণ সাহাকে। কিন্তু তাঁকে প্রার্থী করা হলই বিরোধীরা দুর্নীতির বিষয়গুলি উত্থাপন করবে প্রচারে। আর তারই পাল্ট জবাব দেওয়া আর সংগঠন মজবুত করার জন্য এখন থেকেই অনুব্রতকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।