প্রকাশিত হয়েছে পিছিয়ে পড়া জনজাতির জাতীয় কমিশনের রিপোর্ট। যার পোশাকি নাম ন্যাশনাল কমিশন ফর ব্যাকওয়ার্ড ক্লাসেস বা এনসিবিসি। এই রিপোর্টেই উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
কীভাবে পশ্চিমবঙ্গে ওবিসি তালিকা থেকে কমে গেল হিন্দু জনজাতির সংখ্যা। এই নিয়ে এখন শুরু হয়েছে জোর বিতর্ক। কারণ, পিছিয়ে পড়া জনজাতির জন্য তৈরি জাতীয় কমিশনের সাম্প্রতিক রিপোর্টে এক অবাক করা তথ্য উঠে এসেছে। যা নিজের মুখে সংবাদমাধ্যমের সামনে ব্যক্ত করেছেন ন্যাশনাল কমিশন ফর ব্যাকওয়ার্ড ক্লাসেস বা এনসিবিসি-র চেয়ারম্যান হংসরাজ আহির। তিনি জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গে ওবিসি তালিকায় মোট ১৭৯টি জনজাতির নাম রয়েছে। দেখা যাচ্ছে, এরমধ্যে ১১৮টি জনজাতি-ই মুসলিম সমাজের প্রতিনিধি।
সেই সঙ্গে হংসরাজ আহির আরও জানিয়েছেন যে, কমিশন ইতিমধ্যে বেশকিছু অভিযোগও পেয়েছে। এই সব অভিযোগে এমনও দাবি করা হয়েছে যে বাংলা-র যে ওবিসি তালিকা রয়েছে তাতে আলাদা করে রোহিঙ্গা এবং বাংলাদেশি মুসলিমদেরও স্থান দেওয়া হয়েছে। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পশ্চিমবঙ্গ সরকারকেও কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে যাতে দ্রুত এই সব অভিযোগ খতিয়ে দেখে তালিকা সংশোধন করা হয়।
ন্যাশনাল কমিশন ফর ব্যাকওয়ার্ড ক্লাসেস বা এনসিবিসি-র চেয়ারম্যান হংসরাজ আহির-এর দাবি, অনৈতিকভাবে মুসিলমদের সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে এক্ষেত্রে। আর এর পিছনে অনৈতিক রাজনীতি দেখতে পাচ্ছেন তিনি। মুসলিম ভোটব্যাঙ্কে পুরোপুরি নিজেদের দিকে টানতেই পশ্চিমবঙ্গের বুকে ওবিসি তালিকায় এমন অনৈতিক কাজ করা হয়েছে বলেও মনে করছেন তিনি।
এনসিবিসি-র তথ্য আরও বলছে যে, তালিকায় আগে হিন্দু জদনজাতির সংখ্যা ছিল ৫৫। এখন পশ্চিমবঙ্গ সরকার সেখানে মাত্র ৬টি জনজাতিকে স্থান দিয়েছ। অন্যদিকে মুসলিম জনজাতির সংখ্যা ছিল ৫৩। তা বেড়ে করে দেওয়া হয়েছে ৬৫।
সম্প্রতি বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার তাঁর টুইটার হ্যান্ডেলেও এনসিবিসি-র রিপোর্ট নিয়ে একটি সংবাদ প্রতিবেদন তুলে ধরেন। সেই প্রতিবেদনেও দেখানো হয়েছিল যে কীভাবে এনসিবিসি রিপোর্টে রাজ্য সরকারের দ্বিচারিতা ধরা পড়েছে। এই সংবাদ প্রতিবেদনকে হাতিয়ার করেই সুকান্ত মজুমদার সোচ্চার হয়ে টুইটারে লিখেছিলেন, ‘কেন বাংলার বুকে আর্থিক ও সামাজিকভাবে পিছিয়ে থাকা হিন্দুরা ওবিসি সার্টিফিকেট পাবে না, অথচ রোহিঙ্গা এবং বাংলাদেশী মুসলিমরা এই সার্টিফিকেট পেয়ে যাচ্ছে।’
এদিকে, পশ্চিমবঙ্গের ওবিসি তালিকা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে এনসিবিসি-র চেয়ারম্যান হংসরাজ আহির আরও জানিয়েছেন যে, 'সমস্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখার পর তাঁদের ধারনা যে এই তালিকা তৈরির সময় সরকার কোনওভাবেই বাস্তবসম্মত কোনও যুক্তির ধার ধারেনি।' আহির এই প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে আরও জানিয়েছেন যে, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ওবিসি তালিকা এ ও বি-তে বিভক্ত। এ ক্যাটিগরি-তেও দেখা গিয়েছে যে এখানে মুসলমি জনজাতির তালিকাভুক্তি ৯০ শতাংশের বেশি। এই এ ক্যাটিগরি ওবিসি তালিকায় সবচেয়ে বেশি সুবিধা ভোগ করে। আর অন্য যে বি ভাগটি রয়েছে, তাতে ওবিসি তালিকাভুক্তরা কম সুবিধা পান। আর এই বি তালিকায় হিন্দু জনজাতিকে সবচেয়ে বেশি করে রেখেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। এই বি ক্যাটিগরিতে হিন্দু জনজাতির তালিকাভুক্তির সংখ্যা ৫৪ শতাংশ। অর্থাৎ হিন্দু জনজাতিগুলি বেশি করে বি ক্যাটিগরিতে থাকায় ওবিসি হওয়ার কম সুযোগ ও সুবিধাগুলো পাবেন।
আরও পড়ুন--
'মহম্মদ বেঁচে থাকলে মুসলিম ধর্মান্ধদের দেখে অবাক হতেন',নবী ইস্যুতে এবার বিতর্কিত মন্তব্য তসলিমা নাসরিনের
মুসলিম ধর্মাবেগে সুরসুরি দিয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন জিন্না, হিজাব নিয়ে কি অবস্থান ছিল তাঁর
হিজাব নিয়ে তুলকালাম, জানেন কি মুসলিম মহিলারা কেন পরেন এই পোশাক