
বিহারের পর এবার বাংলায় হতে পারে ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন। এই নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে গোটা দেশে। যা নিয়ে বঙ্গবাসীর মধ্যে আতঙ্ক শুরু হয়েছে। এই পরিস্থিতিতেই বর্ধমানের জনসভা থেকে বিজেপিকে নিশানা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। একই সঙ্গে তিনি নির্বাচন কমিশনকেও নিশানা করেছেন। তিনি জনসভা থেকেই নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশ্যে বলেছেন, 'বিজেপির ললিপপ হয়ে যাবেন না।'
বর্ধমানের জনসভা থেকে মমতা বলেন, ভোট আসতদেই এনআরসি -র প্রসঙ্গ তোলে বিজেপি। তিনি বলেন, 'ভোট আসতেই এনআরসি। ভোটের তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার চেষ্টা।' তারপরই তিনি বলেন,'ইলেকশন কমিশনকে অনেক প্রমাণ জানাই। সেলাম জানাই। দয়া করে বিজেপির ললিপপ হবেন না। তাহলে দেশের মানুষ ক্ষমা করবে না।'
তারপরই তিনি নিশানা করেন কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে। তিনি বলেন, 'ভোটের আগেআসবে. বলবে এখানে নাকি সব বাংলাদেশি হয়ে গিয়েছে।' তিনি এদিন দেশভাগের প্রসঙ্গ টেনে আনেন। বলেন, 'বাংলাদেশের ভাষা আর আমাদের ভাষা এক হলে আমরা কী করব? দেশভাগ তো আর আমরা করিনি। বাংলাকে ওরা সাহ্য করতে পারে না। ' তিনি বলেন, 'বাংলা আমরা বলবই। বাংলার ইতিহাস ভুলে যাবেন না।'
ভিনরাজ্যে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের হেনস্থার বিষয় নিয়েই মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় সরব হয়েছে। তিনি বলেন, রাজ্যের ২২ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক রয়েছে। তিনি বলেন বাংলার শ্রমিকরা বাইরে গিয়ে আক্রান্ত হচ্ছে। তাদের ওপর কেউ দয়া করেনি। তিনি বলেন, বাংলার শ্রমিকরা সোনার কাজ ভাল করেন। নির্মাণের কাজ ভাল করেন। তাই তাদের ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু বর্তমানে তারা ভিনরাজ্যে গিয়ে লাঞ্ছিত হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, 'গুজরাটের লোকেদের ট কোমরে শিকল বেঁধে তাড়িয়ে দিয়েছে ট্রাম্প সরকার। কিন্তু বাংলার মেধাকে তাড়াতে পারে না। ওঁদের ছাড়া হার্ভার্ড অক্সফোর্ড চলবে না।' বর্ধমানের সভা থেকেই ভিনরাজ্যে কর্মরত পরিযায়ী শ্রমিকদের ফিরে আসার আহ্বান জানান মমতা।
এর আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বীরভূম গিয়েছিলেন জেলা সফরে। এই জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি। কিন্তু অনুব্রত মণ্ডল ও কাজল শেখের দ্বন্দ্বের কারণে একাধিক সমস্যা তৈরি হয়। যা একাধিকবার তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের হস্তক্ষেপে মিটিছে। যদিও বর্ধমানে তেমন কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু এই দুই জেলাতেও কাজল-অনুব্রতর ছায়া রয়েছে। যা ভোটের সময় সমস্যায় ফেলতে পারে তৃণমূলকে। সেই কারণে ভোটের অনেক আগে থেকেই প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।