
গোটা ভারত জুড়়েই বিদ্বেষের ছবিটা স্পষ্ট। হিন্দু-মুসলিম ঐক্য বা সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি দূর অস্ত বলে মনে করেন অনেকেই। কিন্তু সেখানে দাঁড়িয়ে অন্য ছবি দেখা গেল মালদায়। তৃণমূল নেতার একঘরে করে দেওয়া পরিবারের এক সদস্যের মৃত্যুতে প্রতিবেশীরা কেউ পাশে দাঁড়ায়নি। মৃত ব্যক্তিকে কাঁধে করে শেষকৃত্যের জন্য শ্মশানে নিয়ে গেল পাশের পাড়ার মুসলিম সম্প্রদায়ের তরুণরা। মালদার এই ঘটনা হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের একটি বড় ছবি।
অবৈধভাবে জায়গা দখল নিয়ে বিবাদ, দীর্ঘদিন ধরে দখলকারীদের মদত দেয় স্থানীয় তৃণমূল নেতা। তৃণমূল নেতার নির্দেশে পরিবারকে একঘরে করে দেওয়া হয়েছে। আজ পরিবারের এক সদস্যের মৃত্যুর পরেও শবদেহ শ্মশানে নিয়ে যাওয়ার জন্য এগিয়ে এল না কোন প্রতিবেশী, অবশেষে পার্শ্ববর্তী মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের কাঁধে বৃদ্ধের শেষ যাত্রা, ফুটে উঠল মানবিকতা এবং সম্প্রীতির নিদর্শন, ঘটনা সামনে আসতেই তৃণমূলকে তোপ বিজেপির
বাড়ির সামনের খাস জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গে বিবাদ।যেখানে মদত তৃণমূল নেতার। বারবার পুলিশের দ্বারস্থ হয়েও হয়নি সুরাহা।এমনকি এই বিবাদের কারণে তৃণমূল নেতার নির্দেশে ওই পরিবারকে এক ঘরে করে রেখেছিল প্রতিবেশীরা। এবার পরিবারের এক সদস্যের মৃত্যুর পরেও এগিয়ে এলোনা কোন প্রতিবেশী। শেষ যাত্রার জন্য পাওয়া যাচ্ছিল না লোক।অবশেষে পার্শ্ববর্তী মুসলিম সমাজের যুবকরা এগিয়ে এলো।তাদের কাঁধেই হল বৃদ্ধের শেষ যাত্রা। মানবিকতা এবং সম্প্রীতির সেই ভিডিও সামাজিক মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়েছে।
এদিকে ঘটনা সামনে আসতেই তৃণমূলকে তোপ দেগেছে বিজেপি।সাফায় তৃণমূলের। শুরু হয়েছে তরজা। মালদার হরিশ্চন্দ্রপুরের কুশিদা গ্রাম পঞ্চায়েতের মুকুন্দপুর গ্রামের ঘটনা।ওই গ্রামের বাসিন্দা টুপন দাস এবং তার পরিবারের স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে জায়গা নিয়ে বিবাদ চলছিল। অভিযোগ তাদের বাড়ির সামনের খাস জায়গা ওই কয়েকজন অবৈধভাবে দখল করার চেষ্টা করছিল। জায়গা দখলে রাখার জন্য সেখানে দেবী সরস্বতীর মূর্তিও রেখে দেওয়া হয়। এই নিয়ে বহুবার বচসা হয়েছে। দখলকারীদের তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য প্রকাশ দাস এবং প্রাক্তন প্রধান রেজাউল হক মদত দিচ্ছিল বলেও অভিযোগ।
বহুবার ওই পরিবার হরিশ্চন্দ্রপুর থানা, মহকুমা প্রশাসন, জেলা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানালেও কোন সুরাহা হয়নি।মৃতের ছেলে কিশোর দাস পেশায় সিভিক ভলেন্টিয়ার। তিনি নিজেও এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তার অভিযোগ নেতারা যেদিকে পুলিশ সেই দিকে কাজ করছে।আরো অভিযোগ তৃণমূল নেতা প্রকাশ দাসের নির্দেশেই এই বিবাদের কারণে প্রতিবেশীরা তাদের এক ঘরে করে রেখেছিল।এই পরিস্থিতিতে বিবাদ নিয়ে দুশ্চিন্তার কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েন টুপন দাস।এদিন তার মৃত্যু হয়। কিন্তু শবদেহ শ্মশানে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রতিবেশীরা কেউ এগিয়ে আসেনি। অসহায় হয়ে পড়েছিল পরিবার।এই ঘটনা জানতে পেরে পার্শ্ববর্তী স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষরা এগিয়ে আসেন।তাদের কাঁধেই শেষ যাত্রা হয় টুপন দাসের।অন্তোষ্টি ক্রিয়ার সমস্ত কাজ করেন মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষেরাই। যে ঘটনা মানবিকতা এবং সম্প্রীতির নিদর্শন সৃষ্টি করেছে।কিন্তু ঘটনা সামনে আসার পর বিজেপির দাবি তৃণমূল এই একঘরে করে রাখার তালিবানি সংস্কৃতি চালাচ্ছে।তাই হিন্দু মুসলিম সকলে মিলে তৃণমূলকে উপড়ে ফেলতে হবে। যদিও তৃণমূল সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে।