Mamata Banerjee on Digha: জগন্নাথ ধামের উদ্বোধনে সৈকত শহরজুড়ে নিষিদ্ধ 'আমিষ', মাছ-মাংস খেলেই বড় বিপদ! জানুন এক ক্লিকে

Published : Apr 30, 2025, 12:39 PM IST
Asianet News

সংক্ষিপ্ত

Digha Jagannath Temple: জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন ঘিরে গত দুদিন ধরে সাজসাজ রব দীঘায়। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে।               

Digha Jagannath Temple: জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন ঘিরে গত দুদিন ধরে সাজসাজ রব দীঘায়। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে (Mamata Banerjee) আজ অক্ষয়তৃতীয়ার শুভলগ্নে দীঘায় হতে চলেছে জগন্নাথ মন্দিরের দ্বারোদ্ঘাটন। পূর্ব মেদিনীপুরের এই সৈকত শহরে মঙ্গলবার থেকেই হাইপ্রোফাইল নেতামন্ত্রীদের ভিড়। রয়েছেন রাজ্যের সর্বোচ্চ নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।

জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন ঘিরে দীঘা শহরজুড়ে আজ যেন অঘোষিত কার্ফু জারি করা হয়েছে। যেন লকডাউন চলছে। জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনের দিন হোটেলের বাইরে বেরোতে পারবেন না কেউ। খাওয়া যাবে না মাছ, মাংস ও ডিম। অঘোষিত এই নির্দেশিকার বিষয়টি স্বীকার করে নিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী অখিল গিরি (Akhil Giri) জানিয়েছেন যে, দুদিন গেলে আবার খাওয়া যাবে আমীষ। কিন্তু এই দুই দিন দীঘা শহরজুড়ে মদ বিক্রি বন্ধের উপর কোনও নির্দেশিকা জারি করা হয়নি।

অন্যদিকে মন্দিরের এই উদ্বোধনের বন্দোবস্তে অবশ্য খুশি RSS (রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘ)। এই বিষয়ে বলতে গিয়ে রাজ্যের হিন্দু মহাসভার প্রধান চন্দ্রচূড় গোস্বামী জানিয়েছেন, তাঁকে দীঘার মন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ''আমি আজ যজ্ঞের সময় ছিলাম। মূল মঞ্চে আমাদের আরও ছয়জন প্রতিনিধি ছিলেন। যদিও দীঘায় মন্দির উদ্বোধনের আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্ন থেকে সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়ে দিয়েছিলেন যে, দীঘায় জগন্নাথ মন্দির হবে সম্প্রীতির। আর সেই সম্প্রীতিই সহাবস্থান করতে দেখা গেল দীঘার রাস্তায়। যেখানে একসঙ্গে মন্দিরেরে ১০০ মিটারের মধ্যে রয়েছে তৃণমূল ও আরএসএস-এর পতাকা।

শুধু তাই নয়, দীঘায় জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধন প্রসঙ্গে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) বলেছিলেন, ''মন্দির উদ্বোধনের সময় কোনও বিধর্মী দেখতে পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।" আর এদিন যেন সরকারি বিধিনিষেধে এ কথাই প্রাধান্য পেয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, দীঘায় জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনের দিন সমুদ্র সৈকত ছিলো পর্যটক শূন্য। এমনকি স্থানীয় বাসিন্দাদেরও একটা নির্দিষ্ট সময়ের পর বাড়ি থেকে বের হতে মানা করেছে। এখন প্রশ্ন একটাই, হিন্দু, অ-হিন্দুদের মধ্যে বিভাজন তৈরি করে শুভেন্দুর বক্তব্যের মধ্য দিয়ে কি রাজ্য সরকারকে সুবিধা করে দিলো RSS? এই উত্তর অবশ্য সময় বলবে।

এদিকে আজ মহাযজ্ঞ, ধ্বজা ওড়ানোর পর আজ অক্ষয়তৃতীযাতে দিঘার মন্দিরে জগন্নাথের প্রাণপ্রতিষ্ঠা এবং দ্বারোদ্ঘাটন। প্রাণ প্রতিষ্ঠার মাহেন্দ্রক্ষণ বুধবার সকাল ১১টা ১০ থেকে ১১টা ৩০ মিনিট। ওই ২০ মিনিটের মধ্যেই দেবতার সর্বাঙ্গে কুশের স্পর্শ করা হবে। রুদ্ধ দরজার ভিতরে হবে প্রাণপ্রতিষ্ঠা। প্রাণপ্রতিষ্ঠার পরেই জগন্নাথের স্নান হবে। তারপর মহাপ্রভুকে রাজকীয় পোশাক ও সোনার গয়নায় সাজানো হবে। এরপর ৫৬ ভোগ অর্পণ করা হবে জগন্নাথের উদ্দেশে। দুপুর আড়াইটে নাগাদ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

অক্ষয় তৃতীয়ার বিকালে শুভ সময় বিকাল ৫টা থেকে ৫টা ১০ মিনিট। ওই সময়েই মন্দিরের দ্বারোদ্ঘাটন করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জগন্নাথের উদ্দেশে প্রথম সন্ধ্যারতিও করবেন মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee)।

প্রসঙ্গত, পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের আদলে গড়া হয়েছে দীঘার জগন্নাথ মন্দির। ফলে পরিকল্পনা এবং অন্যান্য আবহে পুরীর মতোই তৈরি করা হচ্ছে তাকে। পোশাকি ভাষায় বলা হচ্ছে জগন্নাথধাম। সেখানে পুরীর মন্দির চত্বরের মতোই চত্বর গড়ে তোলা হয়েছে। থাকছে জগন্নাথের মাসির বাড়িও। রথের সময়ে পুরীর মন্দিরের সামনের রাস্তা সোনার ঝাড়ু দিয়ে ঝাঁট দেওয়া হয়। দীঘাতেও তেমনই হবে। সেই সোনার ঝাড়ুর জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের ব্যক্তিগত সঞ্চয় থেকে ৫ লক্ষ ১ টাকা দিচ্ছেন বলে আগেই নবান্ন থেকে এই কথা ঘোষণা করেছেন তিনি। ৩০ তারিখ বেলা ১১টা নাগাদ হবে মূর্তিতে প্রাণপ্রতিষ্ঠা। তার পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সেখানে ওড়িশি নৃত্য পরিবেশন করবেন ডোনা গঙ্গোপাধ্যায় (Dona Ganguly) এবং তাঁর সহযোগীরা। সঙ্গীত পরিবেশন করবেন শ্রীরাধা বন্দ্যোপাধ্যায়, মুম্বইয়ের সুরকার জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, বিধায়ক তথা গায়িকা অদিতি মুন্সি।

সূত্রের খবর, দ্বিতীয় বার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে ২০১৮ সালে পুরীর সমান উচ্চতার জগন্নাথ মন্দির দীঘায় তৈরির কথা ঘোষণা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওল্ড দীঘায় প্রস্তাবিত জগন্নাথদেবের মাসির বাড়িতেই গোড়ায় জগন্নাথ মন্দির নির্মাণের ভাবনাচিন্তা করেছিল রাজ্য সরকার। পরে নিউ দীঘা স্টেশনের ধারে ভোগীবহ্মপুর মৌজায় মন্দির নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়। দীঘা উন্নয়ন পর্ষদের হাতে থাকা ২৫ একর জায়গা মন্দির নির্মাণের জন্য বেছে নেওয়া হয়। ২০১৯ সালে মুখ্যমন্ত্রী মন্দির তৈরির ঘোষণা করলেও কোভিড পরিস্থিতির কারণে নির্মাণকাজ শুরু হতে দেরি হয়েছিল। শেষপর্যন্ত ২০২২ সালের অক্ষয় তৃতীয়ায় ২৫ একর জমিতে জগন্নাথধাম ও সংস্কৃতি কেন্দ্র গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়। রাজ্য সরকারের তরফে নির্মাণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে হিডকোকে। খরচ হচ্ছে প্রায় ২০০ কোটি টাকা।

আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।

PREV
Read more Articles on
click me!

Recommended Stories

পড়ুয়া পিছু ৫ হাজার টাকা জরিমানা, বিরাট সিদ্ধান্ত মধ্যশিক্ষা পর্ষদের, সতর্ক করা হল স্কুলগুলোকে
'আজ প্রমাণ হয়ে গেল মমতা কত বড় তোষণ বাজ ও হিন্দু বিরোধী', মন্তব্য শুভেন্দুর