এখনও অনেকের কাছে নস্ট্যালজিক তালপাতার সেপাই, কিন্তু শিল্পীদের পেট চলা দায়- দেখুন কী অবস্থা তাদের

Published : Jul 13, 2025, 06:58 PM ISTUpdated : Jul 13, 2025, 07:07 PM IST
Palm leaf art is disappearing in Howrah artists are trying to save it

সংক্ষিপ্ত

আন্দুল মহিয়ারি সরদার পাড়ার ঘরে ঘরে একসময় তালপাতার হাত পাখার পাশাপাশি তালপাতার সেপাই তৈরি হত। এই খেলনার বেশ চাহিদা ছিল। তাই বিভিন্ন মেলায় এমনকি পাইকারি হিসাবেও বিক্রি হত দেদার। 

একসময়ে ইলেকট্রনিক্স খেলনা আসার আগে ,শিশুদের কাছে খেলনা বলতে ছিল তালপাতার সেপাই। এখন যারা বয়স্ক রয়েছে তাদের কাছে রয়েছে সেই নস্টালজিয়া। তালপাতাকে কাঁচি দিয়ে কেটে সিপাহীর মতো আকৃতি দেওয়া হতো। এরপর হাত ও পা সুতো দিয়ে সেলাই করে একটি কাঠি দিয়ে জুড়ে দিয়ে রং করে দেওয়া হতো। দুই আঙুলের চাপে সেই কাঠি ঘোরালেই মনে হতো যেন কোনও সেপাই দৌড়াচ্ছে। এভাবেই তালপাতার সেপাই তৈরি করতেন শিল্পীরা। তালপাতার সেপাই নিয়ে খেলার মধ্যে দিয়েই মন আনন্দ খুঁজে পেত শিশুরা। দেখতে সামান্য হলেও অবস্থাসম্পন্ন ঘরের শিশুদের মধ্যেও বেশ চাহিদাও ছিল তখনকার সময়ে। তালপাতার সেপাই তৈরির শিল্পীরা চাহিদা মতন সেই খেলনা বানাতে। সঙ্গে দু পয়সা রোজগারও করতেন। আস্তে আস্তে আধুনিক নানা খেলনা বাজারে এসে যাওয়ার পরে হারিয়ে গেছে তালপাতার সিপাই।

আন্দুল মহিয়ারি সরদার পাড়ার ঘরে ঘরে একসময় তালপাতার হাত পাখার পাশাপাশি তালপাতার সেপাই তৈরি হত। এই খেলনার বেশ চাহিদা ছিল। তাই বিভিন্ন মেলায় এমনকি পাইকারি হিসাবেও বিক্রি হত দেদার। এখন ওই পাড়ায় হাতে গোনা মাত্র দুই জন তৈরি করছেন। গুপিনাথ রায় জানাচ্ছেন, 'সামনে শ্রাবণের এবং দুর্গাপুজো মেলা; তাই বানাচ্ছি তালপাতার সেপাই। এই কাজ বাবার থেকে শেখা। সেইসময় রমরমিয়ে চলতো এই কাজ। রথের মেলার এক মাস আগে থেকে প্রস্তুতি নিতে শুরু করি। যেটুকু তৈরি হয় নিজেই মেলায় বিক্রি করি।' জানা গেল, ভালো মানের তালপাতা না হলে সেপাই তৈরি হয় না। এলাকায় তাল গাছ অনেক কমে গিয়েছে। অনেক কষ্টে ভালো মানের পাতা জোগাড় করতে হয়। যা পরিশ্রম হয়, সেই তুলনায় লাভ হয় না। গোপীনাথ রায় বলেন, 'একেকটি তালপাতার সেপাই মাত্র ৮ থেকে ১০ টাকায় বিক্রি করি। দাম বাড়ালে তো কিনবেন না ক্রেতারা। বাবার থেকে শিখেছি বলেই পূর্বপুরুষের এই পেশাকে ছাড়তে পারছিনা।'

গুপীনাথ রায়ের বাবা বুধেন রায় জানান, তিনি এই কাজ নাকি তাঁর বাবার থেকে শিখেছেন। এরপর বংশপরম্পরায় নিজের ছেলেকে শিখিয়েছেন। আগে অনেক মেলা, কালীপুজোতে এই খেলনা বিক্রি করেছেন তিনি। এরপর প্লাস্টিকের খেলনা এসে যাওয়ার জন্য আর সেই ভাবে চাহিদা নেই তালপাতার সেপাইয়ের। তবে এই বৃদ্ধ বয়সে আজও তিনি বসে না থেকে নিজের হাতে সেপাই বানান।

এই খেলনা আজও সরদার পাড়ার দুই শিল্পী ধরে রেখেছেন। পুরনো এই খেলনা অনেক জায়গা থেকে হারিয়ে গেলেও এখানে তা হারাতে দেননি এই শিল্পীরা । নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরছেন। এনাদের অবর্তমানে আর কেউ এই শিল্প বাঁচিয়ে রাখবে কিনা, জানা নেই কারোর। তবে এখনো ইঁদুর দৌড়ের মাঝখানে সেই তাল পাতার সিপাই হাতে ঘুরিয়ে একান্তই খুঁজে পাওয়া যায় সেই ছোটবেলার নস্টালজিয়া। মনে পড়ে যাবে গানের সেই লাইন ও কাগজ কি কাস্তিও বারিশ কা পানি মুঝে লটা দো মেরি বাচপান কি ইয়াদে ।ধীরে ধীরে হারাতে বসেছে তালপাতার সেপাই

PREV
Read more Articles on
click me!

Recommended Stories

হুমায়ুন কবীর ৮০ লক্ষ টাকা খরচ করে বাবরি মসজিদের সূচনা করলেন, ব্যবস্থা 'শাহি' ভোজের
শুভেন্দু অধিকারীর মাকে কটুক্তি, তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ বিজেপির মহিলা মোর্চার