রাজ্যের ২২টি জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই নির্দেশ কার্যকর করতে হবে কমিশনতে।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে মনোনয়ন দাখিলকে কেন্দ্র করে অশান্তির আবহের মধ্যেই কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে বড় রায় দিল আদালত। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রাজ্যের ২২টি জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়নের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞনম ও বিচারপতি উদয় কুনারের বেঞ্চ। মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই রাজ্য নির্বাচব কমিশনকে এই নির্দেশকে কার্যকর করতে হবে বলেও নির্দেশ দিয়েছে আদালত। যদিও এদিন শুনানির প্রথম অর্ধেই আদালতে রাজ্য ও নির্বাচন কমিশনকে ভর্ৎসনা করে। বলে গোটা রাজ্যেই কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়নের নির্দেশ নির্দেশ দেবে বলেও জানিয়েছিল আদালত।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়নের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার আর্জি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল রাজ্য ও রাজ্য নির্বাচন কমিশন। সেই মামলার শুনানির পরেই দীর্ঘক্ষণ রায়দান স্থগিত রাখা হয়। তারপরই কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ নিজেদের পর্যবেক্ষণ ও রায়দান করে। এই রায় পড়ে শোনান প্রধান বিচারপতি।
প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম বলেন, 'বুধবার হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছিল তা নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কোনও পদক্ষেপ চোখে পড়েনি। আইনশৃঙ্খলার দিক থেকে দেখতে তারা এখনও পর্যন্ত কোনও স্পর্শকাতর এলাকা চিহ্নিত করতে পারেনি। কমিশন স্পর্শকাতর এলাকা চিহ্নিত করতে আরও দুই দিন সময় চেয়েছে। আদালত মনে করছে সময় যত গ়ড়াবে পরিস্থিতি ততই খারাপ হবে। তাই কমিশনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্য সমস্ত জেলায় মোতায়েনের জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে আবেদন করবে। আদালতের এই নির্দেশ ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কার্যকর করতে হবে।' আদালত আরও বলেছে, কমিশনের আবদন মত বিনা খরচে কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠাতে হবে কেন্দ্র সরকারকে। রাজ্য কেন্দ্রীয় বাহিনীর কোনও খরচ দেবে না।
এদিন শুনানির শুরুতেই কলকাতা হাইকোর্ট রীতিমত ধমক দিয়েছিল রাজ্য ও রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে। কলকাতা হাইকোর্ট রাজ্যের পাশাপাশি রাজ্য নির্বাচন কমিশনতে তীব্র ভর্ৎসনা করে। প্রধানবিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম কেন্দ্রীয় বাহিনী ও স্পর্শকারত বুথ নিয়ে রাজ্যের সওয়ালের পাল্টা জানতে চান এটা নিয়ে কী করে রাজ্য সরকার সওয়াল করতে পারে। তারপরই আদালত জানিয়ে দেয় 'কমিশন যদি স্পর্শকাতর বুথ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে না পারে বাা সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগে তাহলে আদালত গোটা রাজ্যেই কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়নের নির্দেশ দিয়ে দেবে।' এদিন আদালত পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে অশান্তির কথাও উল্লেখ করে। আদালত রীতিমত ধমক দিয়ে বলে, 'পঞ্চায়েত মামলা নিয়ে রায় কার্যকর করার ব্যবস্থা না হলে আদালত নিশ্চিপ দর্শকের মত বসে থাকবে না।' আদালত রাজ্য ও নির্বাচন কমিশনকে সাবধান করে বলে, 'নিজেদের ভাবমূর্তির বজায় রাখবেন। মনোনয়ন ঘিরে অশান্তির খবর আসছে।' আদালত এদিন স্পষ্ট করে জানিয়ে দেয় 'রায় মেনে না নিলে চ্যালেঞ্জ করুন। নাহলে প্রয়োজনে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করতে পারে আদালত। এভাবে শুধু শুধু সময় নষ্ট হচ্ছে। 'পাশাপাশি কমিশনকে উদ্দেশ্য করে প্রধান বিচারপতি বলেন, 'আমি কমিশনকে উপদেশ দেওয়ার জন্য বসে নেই। আপনারা উচ্চ আদালতে যেতে পারেন। আপনাদের হাতে উচ্চ আদালতে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু আপনারা যদি আমাদের নির্দেশকে কার্যকর করার মত পরিস্থিতি তৈরি না করেন তাহলে আমরাও নিশ্চুপ দর্শক হয়ে বসে থাকব না। বিভিন্ন জায়গায় ১৪৪ ধারা বজায় রয়েছে। পুলিশ পদক্ষেপ করুক।'
আরও পড়ুনঃ
ভাঙড়ের জন্য নাম না করে নওশাদকে তোপ মুখ্যমন্ত্রীর, চোপড়ায় ঘটনায় তৃণমূল জড়িত নয় বলেন মমতা
কে নওশাদ সিদ্দিকি? যার দাপটে কাঁপছে ভাঙড়, জানুন ISF নেতার সম্পত্তির পরিমাণ
মনোনয়নের শেষ দিনেও ভোট -সন্ত্রাসের মুক্তাঞ্চল ভাঙড়, গুলি-বোমায় নিহত দুই ISF ও TMC কর্মী