
Hooghly News: রাস্তাই এখন ভাগার,পুরসভার ভ্যাট উপচে আস্তাকুঁড়ে পরিনত হয়েছে শহর। দুর্গন্ধে টেকা দায়। শ্রমিকদের কর্মবিরতিতে নাজেহাল শহরবাসী। কোনও হেলদোল নেই পুরসভার। হুগলি চুঁচুড়া পুরসভার ৩০টি ওয়ার্ড। এক নম্বর ওয়ার্ডে সিপিএম এর কাউন্সিলর। বাকি ২৯ টায় তৃণমূল কাউন্সিলর রয়েছে।
গত কয়েকদিন ধরে পুরসভার অস্থায়ী শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করছে। তাদের দাবি- মজুরি বৃদ্ধি করতে হবে।পুরসভা সিদ্ধান্ত নিয়েছে ৬৫ বছর হয়ে গেছে এমন শ্রমিকদের বসিয়ে দেওয়া হবে। শ্রমিকদের দাবি, যারা অবসর নেবে তাদের এক কালীন পাঁচ লাখ টাকা দিতে হবে। পুরসভা দাবি না মানায় গত সপ্তাহে বোর্ড মিটিংয়ে চেয়ারম্যান সহ কাউন্সিলরদের গভীর রাত পর্যন্ত ঘেরাও করে রাখে শ্রমিকরা। পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে।
দাবি পূরণ না হলে কাজ নয় হুঁশিয়ারি দেয় শ্রমিকরা। এমতাবস্থায় নাগরিক পরিষেবা নিয়ে বাড়ছে ক্ষোভ। শহরের ঘড়িরমোর, পিপুলপাতি, তোলাফটক, কামারপাড়া, তালডাঙা, খাদিনামোর, মিয়ারবেড়, ব্যান্ডেল, ইমামবাড়া, চকবাজার সহ সর্বত্র আবর্জনার স্তুপ জমেছে। পুরসভার ভ্যাট উপছে রাস্তায় চলে এসেছে সেই বর্জ্য। মাছি ভনভন করছে। বৃষ্টির জল পেয়ে পঁচছে আলুর খোসা থেকে মাছের আঁশ। একেবারে নরকে পরিনত হয়েছে রাস্তাঘাট।
দিনের পর দিন নানা ইস্যুতে পুরসভায় আন্দোলন হয়। যার ফলে ব্যহত হয় পরিষেবা। এমনিতে প্রয়েজনের অতিরিক্ত শ্রমিক কর্মচারীদের মজুরি বেতন দিতে ভাঁড়ে মা ভবানী পুরসভার। গোদের উপর বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে শ্রমিকদের এই কর্মবিরতি।
আর কয়েক মাস পরে বিধানসভা ভোট তার আগে চুঁচুড়া পুরসভার অচলাবস্থা সমস্যায় ফেলতে পারে শাসকদলকে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। গত লোকসভা নির্বাচনে চুঁচুড়া বিধানসভায় প্রায় সাড়ে আট হাজার ভোটে বিজেপির থেকে পিছিয়ে রয়েছে তৃণমূল। তার উপর এখন নাগরিক পরিষেবা নিয়ে যে ভাবে ক্ষোভ বাড়ছে পাশাপাশি পুরসভার প্রায় দুই হাজার অস্থায়ী কর্মচারী ও তাদের পরিবার যে ভাবে পুর প্রশাসনের উপর ক্ষুব্ধ তার ফল কি হবে তা এখনই ভাবতে হবে শাসক দলকে। শহরবাসীরা জানান, রথ- মহরম পার হয়ে গেলো পুরসভার কর্মীরা কাজ না করায় জঞ্জাল পরিষ্কার হচ্ছে না। কাউন্সিলরদের বলেও লাভ হচ্ছে না।
আন্দোলনকারী অস্থায়ী শ্রমিক নিয়ে স্নেহাশীষ চক্রবর্তী ও রাধেশ্যাম শঙ্খ বনিকরা বলেন, ‘’শহরবাসী সমস্যায় আছে শহর জঞ্জালে পরিপূর্ণ হয়ে গেছে, আমরাও এই শহরে বাস করি। আমাদের সমস্যা আরো একটু বেশি। সেটা হল পেটের জ্বালা।কারণ আমরা সঠিক বেতন পাচ্ছি না। ৬৫ বছরের কর্মীদের হঠাৎ বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। তারা মানসিক দুশ্চিন্তায় রয়েছে।আমরা চাইছি কর্তৃপক্ষ সদিচ্ছা নিয়ে এই সমস্যার সমাধান করুক। না হলে শহর এরকমই থাকবে।''
বিজেপি নেতা স্বপন পাল বলেন, ‘’অপদার্থ পুরো প্রশাসন হলে শহরবাসীর কষ্টের শেষ থাকেনা। চুঁচুড়া পুরোসভা তার উদাহরণ। কতদিন হয়ে গেলো পুরোসভার অচলাবস্থা কাটাতে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না।''
পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের পুর পারিষদ জয়দেব অধিকারী বলেন, ‘’শহরের প্রধান সড়কগুলোতেই আবর্জনা স্তূপ জমে আছে। রথ গেল, মহরম গেল তার একটা অতিরিক্ত আবর্জনা তৈরি হয়েছে। বেশ কিছুদিন ধরেই আন্দোলন চলছে। আমরা সবাই চাইছি সমস্যাটা যাতে দ্রুত মেটে।''
চুঁচুড়ার তৃCমূল বিধায়ক অসিত মজুমদার বলেন, ‘’বহু মানুষ আমাকে ফোন করছে। পুরসভা একটা স্বশাসিত সংস্থা। তার চেয়ারম্যান কাউন্সিলররা আছে। আমার পক্ষে সবটা দেখা সম্ভব না। আশা করি তারা একটা সমাধান বার করবে। আমি ব্যাক্তিগতভাবে মহকুমা শাসক জেলা শাসককে অনুরোধ করব চুঁচুড়া বাসীর স্বার্থে তারা যেন হস্তক্ষেপ করেন।'' যদিও কবে মিটবে সমস্যা। কবে কাজ যোগ দেবেন শ্রমিকরা। কবে এই নরক যন্ত্রণা দূর হবে সেদিকে তাকিয়ে শহরবাসী।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।