
ইতিমধ্যেই ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি গিয়েছে। চাকরি বাতিলের রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এবার বড় ধাক্কা খেতে চলেছেন প্রাথমিক শিক্ষকেরাও। প্রাথমিকে ৩২ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল করে দিয়েছিল হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চ। এবার এই সিঙ্গেল বেঞ্চের রায় ডিভিশন বেঞ্চেও বহাল থাকে কি না তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে।
সোমবার এই মামলার রায়ের শুনানি রয়েছে। বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি ঋতব্রত কুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হবে। সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ শুনানি হবে বলে জানা গিয়েছে।
২০১৪ সালের টেট পরীকিষার ভিত্তিতে সম্পন্ন হয় নিয়োগ কাজ। এর মধ্যে ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় একাধিক দুর্নীতির অভিযোগে হাই কোর্টে মামলা করেন প্রিয়ঙ্কা নস্কর-সহ প্রায় ১৪০ জন চাকরিপ্রার্থী। ২০২২ সালে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। এরপর ২০২৩ সালের ১২ মে এই মামলার রায় ঘোষণা করেন তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ৪২৫০০ জন শিক্ষকের চাকরি বাতিল হয়। এ ছাড়াও প্রধান বিচারপতি জানিয়েছিলেন চাকরি বাতিল করা শিক্ষকরাও স্কুলে যাবে । এরপর তিন মাসের মধ্যে নতুন নিয়োগ করতে হবে রাজ্যকে। সেখানে যোগ্য ও উত্তীর্ণদের চাকরি বহাল থাকবে।
এরপর সিঙ্গল বেঞ্চের ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে যায় পর্ষদ। সোমবার এই মামলার শুনানি রয়েছে পর্ষদে। ২৬ হাজার শিক্ষকের মতোই প্রাথমিকের মামলার পরিণামও একই হতে পারে বলে জানা গিয়েছে। মনে করা যাচ্ছে এই মামলায় তৎকালীন বিচারপতির রায়ই বহাল থাকবে বলে মনে করছেন অনেকে।
এই প্রসঙ্গে আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি জানান, "এসএসসির থেকেও এই মামলায় অনেক বেশি দুর্নীতি হয়েছে। দুর্নীতির নানা পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায়।"
তিনি আরও জানান, "প্রাথমিকের ওই নিয়োগে অ্যাপটিটিউড টেস্ট হয়নি, সংরক্ষণ নীতি মানা হয়নি, পর্ষদ পুরো প্যানেল প্রকাশ করেনি। এ ছাড়া বেআইনি ভাবে নিয়োগ করা হয়েছে। যার তদন্ত সিবিআই করছে। "
একই অবস্থান মামলার সঙ্গে যুক্ত আরেক আইনজীবী ফিরদৌস শামিম বলেন, "নানা স্তরে দুর্নীতি হয়েছে। নম্বরের গোলমাল করে অযোগ্যদের চাকরি দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রেও যোগ্য এবং অযোগ্য বাছাই করা সম্ভব নয়।"
SSC মামলার মতোই একই পরিণতি হতে পারে প্রাথমিক চাকরিপ্রার্থীদের বলেই আশা করা যাচ্ছে। জানা গিয়েছে প্রাথমিকেও কোনও ওএমআর শিটের আসল কপি নেই। পর্ষদের মতে, আসল ওএমআর স্ক্যান করে তথ্য নথিভুক্ত করা রয়েছে। তবে তার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে আদালতে একাধিক বার প্রশ্ন উঠেছে। বেআইনি ভাবেই শুরু হয়েছে এই নিয়োগ। ৩২ হাজার চাকরি বাতিল মামলার পরিণাম ডিভিশন বেঞ্চে ঝুলে রয়েছে।