নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে কয়েকদিন আগেই সিজিও কমপ্লেক্সে তলব করা হয় ইমনকে। দীর্ঘক্ষণ চলে জিজ্ঞাসাবাদ। এই সময়ই ইমনের সম্পত্তি সংক্রান্ত তথ্য উঠে আসে বলে দাবি তদন্তকারীদের।
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইডির আতস কাঁচের তলায় আগে থেকেই ছিল অয়ন-পুত্রের বান্ধবী ইমন গঙ্গোপাধ্যায়। এবার তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে উঠে এল আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। এই কেলেঙ্কারিতে ইমনের নামে মিলল আরও সম্পত্তির হদিস। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) সূত্রে খবর নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে ধৃত হুগলির প্রোমোটার অয়ন শীলের পুত্র অভিষেকের বন্ধবী ইমনের নামে এক কোটি টাকার সম্পত্তির হদিস পাওয়া গিয়েছে।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে কয়েকদিন আগেই সিজিও কমপ্লেক্সে তলব করা হয় ইমনকে। দীর্ঘক্ষণ চলে জিজ্ঞাসাবাদ। এই সময়ই ইমনের সম্পত্তি সংক্রান্ত তথ্য উঠে আসে বলে দাবি তদন্তকারীদের। ইডির পক্ষ থেকে আরও দাবি করা হয় ওই টাকায় একটি ফ্ল্যাট কেনে অয়ন। যদিও এই সম্পর্কে কিছু জানে না বলেই জানিয়েছেন ইমন।
কিছুদিন আগেই ইডির দফতরে হাজিরা দিয়েছিলেন ইমন। সঙ্গে ছিলেন তাঁর বিভাস গঙ্গোপাধ্যায়ও। ইডি সূত্রে জানা যাচ্ছে ইমন গঙ্গোপাধ্যায়ের বাবা বিভাস গঙ্গোপাধ্যায়। এবার ইডির তলবে মেয়ের সঙ্গে সিজিও কমপ্লেক্সে পৌঁছন বিভাস। বুধবার সকাল সাড়ে ৬টার মধ্যে ইডির দফতরে হাজির হন বাবা ও মেয়ে। ইডির দাবি অয়নের ছেলের সঙ্গে দুটি সংস্থায় যৌথ অংশীদারি রয়েছে ইমনেরও। শুধু তাই নয় ইমনের নামে রয়েছে বেশ কিছু জমিও। ২০২০ সালে এক কোটি টাকা দিয়ে হুগলিতে ইমনের নামে একটি জমি কিনেছিলেন অভিষেক। তবে নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ইমন ও বিভাস কোনওভাবে যুক্ত কি না সেবিষয় এখনও কিছু জানা যায়নি। তবে নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে বাবা ও মেয়ের কোনও যোগসূত্র আছে কি না বা কোনওভাবে তাঁরা লাভবান হয়েছে কি না সে বিষয়টি খতিয়ে দেখছে তদন্তকারী সংস্থা।
উল্লেখ্য কিছুদিন আগেই জানা গিয়েছিল শুধু পুরসভা নয়, নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত অয়ন শীলের অবাধ বিচরন ছিল প্রাথমিক স্কুলের নিয়োগেও। ইডি সূত্রে জানা যাচ্ছে, অয়নকে টাকা দিলে নাকি ধরাবাঁধা ছিল চাকরি। প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে কমপক্ষে ১০ জনের চাকরি নিয়ম বহির্ভূতভাবে করিয়েছিলেন অয়ন। এদের মধ্যে বেশিরভাগই হুগলির বাসিন্দা। এবং এদের প্রত্যেকেরই চাকরি হয়েছে টাকার বিনিময় বলে দাবি ইডির। প্রসঙ্গত, এর আগেও অয়নের বিপুল পরিমান হিসাব বহির্ভূত সম্পত্তির হদিশ পেয়েছিল তদন্তকারীরা। এবার পুরসভা ও হাইস্কুলের বাইরেও এবার প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতেও 'অয়ন-যোগের' প্রমাণ মিলছে।
তদন্তকারী সংস্থার দাবি অয়ন শীলরা মূলত ওএমআর শিট বিকৃত করার কাজ করত। অর্থাৎ যোগ্য প্রার্থীদের খাতায় ঠিক উত্তরের পাশে ভুল উত্তরে টিক দিয়ে তাঁদের নম্বর কমিয়ে দেওয়াই ছিল অয়নদের কাজ। সেই জায়গায় টাকার বিনিময় নিয়োগ পেতেন অযোগ্য প্রার্থীরা। শুধু তাই নয় অযোগ্য প্রার্থীদের খালি ওএমআর শিটের পাশে সঠিক উত্তর লিখে খাতা ভরিয়েও দিতেন তাঁরা। শুধু শিক্ষক নিয়োগেই নয়, ওএমআর শিট বিকৃত করার অভিযোগ উঠেছে আরও নানা পরীক্ষায়। সব ক্ষেত্র মিলিয়ে অয়ন প্রায় ১,০০০ চাকরিপ্রার্থীর থেকে ৪৫ কোটি টাকা নিয়েছিলেন বলে দাবি ইডির।
আরও পড়ুন-
আজ দক্ষিণ দিনাজপুরে জনসংযোগে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, ‘আমাদের অনুকরণ করছে’, কটাক্ষ দিলীপ ঘোষের
'কেন্দ্রকে বাংলার মানুষের গায়ের জোর দেখাতে হবে', ইটাহের অভিষেকের সভায় জনজোয়ার