কলকাতার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক তরুণের মৃত্যু ঘিরে তৈরি হয়েছে নতুন বিতর্ক। ২৮ বছরের নিহত তরুণের মা গোটা ঘটনার পিছনে আরজি কর হাসপাতালের চিকিৎসকদের অবহেলা আর অনুপস্থিতিকেই দায়ী করেছেন। একটি ট্র্যাকে চাপা পড়ে গুরুতর জখম অব্স্থায় আরজি কর হাসপাতালে ভর্তি হয় এক তরুণ। শুক্রবার তাঁর মৃত্যু হয়।
কোন্নগরের বাসিন্দা বিক্রম ভট্টাচার্য। পথদুর্ঘটনার গুরুতম জখম হয় তাঁর পা। প্রথমে ভর্তি করা হয়েছিল শ্রীরামপুর হাসপাতালে। কিন্তু পরিস্থিতি খারাপ হওয়া রেফার করা হয় আরজি কর হাসপাতালে। নিহত তরুণের মা কবিতা ভচট্টাচার্যের অভিযোগ আহত ছেলেকে নিয়ে তিনি আরজি করে যান। কিন্তু সেখানে চিকিৎসা করাতে পারেননি।
কবিতা জানিয়েছেন, 'আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের জরুরি বিভাগ ও আউটডোরের মধ্যে শুধু দৌড়ে বেরিয়েছি। কোথাও কোনও চিকিৎসক ছিল না।' তিনি আরও বলেন,'কোনও চিকিৎসক এগিয়ে আসেননি। একজন গুরুতর আহত রোগীকে কোনও পরিষেবা দিতে পারেনি হাসপাতাল। আমার ছেলেকে চোখের সমানে তড়পে তড়পে মরতে দেখলাম।' তিনি জানিয়েছেন চিকিৎসা না পেয়ে হার্টফেল করে মারা গেছে তাঁর ছেলে। ছেলের এই মর্মান্তিক মৃত্যুর পরই বিচার চেয়ে সরব হয়েছেন কবিতা। মৃতার মা জানিয়েছেন ছেলের পা দিয়ে অঝোরে রক্ত পড়ছিল। কিন্তু টিকিট কেটে আউটডোরে নিয়ে যাওয়ার প্রায় দেড় ঘণ্টা পরে চিকিৎসক আসেন। তিনি সেলাই করে ব্যান্ডেজ করার নির্দেশ দেন। কিন্তু জরুরি বিভাগেও তাঁকে অপেক্ষা করতে হয়। সেখানেই ছেলের পায়ে ব্যান্ডেজ করা হয়। যদিও কবিতার দাবি,অনেক সময় নষ্ট হয়েছে। সেই সময়ের মধ্যেই তার অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করা উচিত ছিল। কিন্তু সেখানে কোনো চিকিৎসক পাওয়া যায়নি, এমনকি কোনো জরুরি চিকিৎসকও নেই।
শুক্রবার সকাল ৯টা-১০টা নাগাদ ওই যুবককে ভর্তি করানো হয়। প্রয়োজনীয় চিকিৎসার পাশাপাশি পায়ের এক্স-রে, মাথার সিটি স্ক্যান করা হয়। চিকিৎসায় বিক্রম সে ভাবে সাড়া দিচ্ছিলেন না। যদিও বিক্রমের মা দাবি করেছেন, তাঁর ছেলের সিটি স্ক্যান করানো হয়নি। এক্স-রে করাতে যখন নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, তখনই অসাড় হয়ে আসছিলেন তিনি। কবিতা বলেছেন, 'ডাক্তারদের বিচার কে করবে? আমার ছেলে এত যন্ত্রণা পেয়ে মারা গেল।' কবিতা জানিয়েছেন, তিনি একজন মা, তিনিও চান আরজি করের নির্যাতিতার বিচার পাক। কিন্তু তাঁর ছেলের মৃত্যুর বিচারও সেই সঙ্গে তিনি চান।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।