
Suvendu Adhikari News: বিজেপি সরকার এলে অত্যাচারিত কর্মীদের সংগ্রামী ভাতা দেওয়ার ঘোষণা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর। গত বেশ কয়েকদিন আগে চোলাই মদ পাচারের অভিযোগে ডেবরার ষাঁড়পুর লোয়াদা অঞ্চলের অনন্তবাড় এলাকার বাসিন্দা ডাক্তার সোরন নামে এক যুবককে আটক করে আবগারি দফতর। লোয়াদার নন্দবাড়ি থেকে আটক করার পরেই রহস্যজনক মৃত্যু হয় ডাক্তার সোরেনের।
যুবকের পরিবারের অভিযোগ, আবগারি বিভাগের কর্মীদের মারধর করার জন্য মৃত্যু হয়েছে ডাক্তার সরেনের। আবগারি দফতরের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে ঝাঁপ দেওয়ায় গুরুতর জখম হন ডাক্তার। যার ফলে মৃত্যু হয় ওই যুবকের। টিউবে করে চোলাই পাচার করছিলেন তিনি। আটক করার পরেই মোটরসাইকেল থেকে ঝাঁপ দেন তিনি। আহত অবস্থায় তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় ডেবরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে।
অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখান থেকে তাঁকে ভুবনেশ্বর এইমসে নিয়ে যাচ্ছিলেন পরিবারের লোকজন। পথেই মৃত্যু হয় তাঁর। পরে মেদিনীপুর মেডিক্যাল হাসপাতালের মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়। ডাক্তার সরেনকে খুনের অভিযোগে আদিবাসী সমাজের মানুষজন ডেবরা-খড়গপুর জাতীয় অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। পরে অবশ্যই প্রশাসনে হস্তক্ষেপে বিক্ষোভ উঠলেও। ডাক্তার সরেনের পরিবারের পক্ষ থেকে ডেবরা থানায় আবগারি দফতরের এক জেলা পুলিশ আধিকারিক সহ সাত জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়। অন্যদিকে ঘটনায় বিজেপির পক্ষ থেকে প্রতিবাদ মিছিল সংগঠিত করা হয়।
ডেবরা বাজারে বিজেপির মিছিল চলাকালীন ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার বিজেপির সভাপতি তন্ময় দাস সহ একাধিক নেতাকে আটক করে ডেবরা থানার পুলিশ। পরবর্তীতে বিজেপি নেতাদের আটক এবং হেনস্তার অভিযোগে, ডেবরা থানার ঘেরাও করার কর্মসূচি করা হয় বিজেপির পক্ষ থেকে।
অভিযোগ, সেই কর্মসূচিতে মিছিল চলাকালীন বিজেপি কর্মীদের পুলিশ লাঠিচার্জ করে। ঘটনায় জেলা বিজেপি নেতা সহ সাতজন কর্মী আহত হয়। ফের ডেবরা থানা ঘেরাওয়ের ডাক দেওয়া হয়। কিন্তু প্রশাসনিকভাবে কোনও অনুমতি পাইনি বিজেপি। তারপরেই বিজেপির পক্ষ থেকে কলকাতা হাইকোর্টে মিছিল করার জন্য আবেদন করা হয়। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক শর্তসাপেক্ষে মিছিল করার অনুমতি দেয়। অনুমতি পাওয়ার পর শনিবার বিকেলে ডেবরা বাজার থেকে থানা পর্যন্ত পায়ে হেঁটে আদিবাসী যুবককে খুনের প্রতিবাদে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার কর্মীদের নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
মিছিল শেষে তিনি বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, ‘’আদিবাসী যুবককে যেভাবে রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ ও আবগারি দফতর পিটিয়ে খুন করেছে তার সিসিটিভি ফুটেজ আমরা প্রকাশ করেছি। আর এরই প্রতিবাদ করতে গিয়ে আমাদের কর্মীদের উপর লাঠিচার্জ করেছে পুলিশ। সেই লাঠিচার্জে যেসব সংগ্রামী কর্মীরা আহত হয়েছেন।'' তাদের তিনি সংগ্রামী অভিনন্দন জানিয়েছেন। এর পাশাপাশি তিনি জানান, বিজেপি সরকার এলে সব কিছু সুদে আসলে হিসাব হবে এবং সংগ্রামী বিজেপি কর্মীদের ভাতা দেওয়া হবে। পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকারের উদ্দেশ্যে কটুক্তি করে বলেন, ‘’বিজেপির পক্ষ থেকে আজকে মিছিল করার জন্য কলকাতা হাইকোর্টে যখন আবেদন করা হয়। কিন্তু এই পুলিশ এত ভয় পেয়েছে হাইকোর্টে গিয়ে বলেছে এই মিছিল করতে দেওয়া যাবে না। কেন? আজকে নাকি উচ্চমাধ্যমিকের সেমিস্টার পরীক্ষা।''
পুলিশ সুপারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘’আমরা এতজন রাস্তায় এলাম, ধৃতিমান কোথায় পরীক্ষা দিয়েছিলে বাপু আপনি? আমরা হাইকোর্টের অনুমতি নিয়ে ৩০০০ কর্মী নিয়ে মিছিল করেছি। মিছিল চলাকালীন রাস্তার পাশে সাধারণ মানুষ দেখে আমাদের আশীর্বাদ করেছে।''
ডেবরার তৃণমূলের সহ-সভাপতি শীতেশ ধাড়াকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘’অপেক্ষা করুন বালিচোর মেদিনীপুরের সৌরভ রায় গেছে। আপনিও এবার যাবেন শীতেশ ধাড়া বাবু। তিনি দুটো FIR বদলেছেন। দুটো FIR আমাদের কাছে। ছাড়বো না আমরা। আমরা জানি আপনার কাছে অবৈধ বালির টাকা আছে। আপনি যেখানেই গর্ত খুলে টাকা পুতে রাখুন না কেন। মোদী হ্যা না খাওয়ুঙ্গা। না খানে দুঙ্গা।'' একই সঙ্গে পুজোর পরে জেলা পুলিশ সুপারের অফিসের সামনে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন শুভেন্দু অধিকারী।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।