'আমি ওকে না দেখতে পেলেই ভালো হত', মেয়ের চেহারা দেখে স্তম্ভিত তিলজলার নাবালিকার মা

সোমবার সকালে শেষবারের মতো নিজের মেয়েকে দেখেছিলেন তিলজলার সাত বছরের নিহত শিশুকন্যার মা। তারপর দেখেছিলেন মেয়ের নিথর দেহ।

Web Desk - ANB | Published : Mar 28, 2023 10:15 AM IST

মেয়ের সারা শরীরে ক্ষত চিহ্ন, জিভ বাইরে, মেয়ের চেহারা দেখে স্তম্ভিত মা। একটি সংবাদ সংস্থাকে তিলজলার নিহত নাবালিকার মা জানিয়েছেন, 'আমি ওকে না দেখতে পেলেই ভালো হত।' সাতবছরের শিশুকন্যার উপর অকথ্য অত্যাচারের নজির উঠেছে তাঁর মায়ের কথায়। তিনি জানিয়েছেন,'পুলিশ আসার পর অলোক কুমারের বাড়িতে আমি প্রথম দেখতে পাই আমার মেয়েকে। আমি ওকে না দেখতে পেলেই ভালো হত। ওকে একটা বস্তার মধ্যে বেঁধে রাখা হয়েছিল। ওর জিভ বাইরে, সারা শরীরে ক্ষত। দেখে মনে হচ্ছে কেউ তাঁর কান টেনে ছিঁড়ে নিয়েছে। ওঁর সারা গায়ে কালো দাগ। কপালে জুড়ে ক্ষত চিহ্ন। ওঁর মুখ দেখে মনে হচ্ছিল ওঁ খুব ক্লান্ত।'

যদিও লোকাল পুলিশের তরফে কোনও রকমের গাফিলতির অভিযোগ জানাননি নির্যাতিতার মা। তাঁর কথায়,'ওঁরা আমাদের খুবই সাহায্য করেছেন। ওঁদের সাহায্য ছাড়া আমার মেয়েকে খুঁজে বের করতে পেরেছি।' তিনি আরও জানিয়েছেন,'আমরা সিসিটিভি ফুটেজে দেখেছিলাম, আমার মেয়ে কুকুর দেখে ভয় পেয়ে বাড়ির দিকে আসছিল। মাঝে সম্ভবত তাঁকে অপহরণ করা হয়েছিল।'

Latest Videos

'পুলিশ যখন অলোক কুমারের বাড়িতে খোঁজ করতে এসেছিল তখন অলোক জানিয়েছিল, আমার মেয়ে কোনও দিনও তাঁর বাড়িতে আসেননি। এমনকী সে তাঁর বাড়ির দরজাও খোলেনি। পরে বিকেলে যখন পুলিশ আবার প্রত্যেকটি বাড়িতে খোঁজ চালাচ্ছিল তখনই আমার মেয়ের খোঁজ মেলে।'

সোমবার সকালে শেষবারের মতো নিজের মেয়েকে দেখেছিলেন তিলজলার সাত বছরের নিহত শিশুকন্যার মা। তারপর দেখেছিলেন মেয়ের নিথর দেহ। সোমবার সকাল ৭টা নাগাদ লোকাল ভ্যাটে ময়লা ফেলতে পাঠিয়েছিলেন মেয়েকে। কিন্তু ঘন্টার পর ঘন্টা হয়ে গেলেও ফিরে আসে না মেয়ে। এরপরই আতঙ্ক জমাট বাঁধতে থাকে তাঁর মনে। এলাকার সমস্ত বাড়ি খুঁজেও মেয়ের হদিশ না মেলায় অবশেষে পুলইশের দ্বারস্ত হয় দম্পতি। অবশেষে মেয়ে হদিশ মিললেও মেয়েকে জীবন্ত দেখতে পাননি তিনি।

প্রসঙ্গত, তিলজলায় শিশু হত্যাকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত অলোক কুমারকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাতেই সামনে এসেছে নানান তথ্য। অলোক নিঃসন্তান। তাঁর স্ত্রী তিনবার গর্ভধারণ করেও সন্তানের জন্মদিতে পারেনই। তাতেই স্বামী - স্ত্রী সন্তান ধারনের জন্য বিহারের এক তান্ত্রিকের দ্বারস্থ হয়েছিল। তান্ত্রিকের মত ছিল সন্তান ধারনের দোষ কাটাতে নরবলি দিতে হবে। তাতেই ৭ বছররে শিশুকে হত্যা করা হয়েছে বলেও অনুমান করছে। পুলিশ। বেশ কয়েক বছর আগেই বিয়ে হয়েছিল অলোকের। কিন্তু সন্তান হয়নি। যা নিয়ে স্বামী ও স্ত্রীকে কথা শোনাত আত্মীয় ও প্রতিবেশীরা। অলোক স্ত্রীকে বন্ধ্যা বলেও দাবি করেছিল। পাল্টা স্ত্রীও অলোককে কটূকথা বলত। যা নিয়ে স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি ছিল নিত্যদিনের ঘটনা। সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসে তান্ত্রিক। চৈত্র নবরাত্রির মধ্যে ৭-৮ বছরের শিশুকে বলি দেওয়া বিধান দেয়। তাতেই স্ত্রী সন্তান ধারণ করেত পারবে বলেও জানায়। সেই কারণেই শিশু হত্যা। তেমনই জানিয়েছে পুলিশ সূত্র। তবে অলোকের বয়ান কতটা সত্য তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর।

Share this article
click me!

Latest Videos

মহিলাদের সুরক্ষায় ‘অভয়া প্লাস’! রাজ্যপালের ২ বছর পূর্তিতে ৯টি প্রকল্পের সুভারম্ভ | CV Anand Bose
'ওদের টার্গেট মহিলা আর হিন্দু' তৃণমূল বিধায়কদের উপর হামলার কড়া প্রতিক্রিয়া শুভেন্দুর
'এই তৃণমূলকে উপরে ফেলব' মাদারিহাটে রাহুল লোহারের সমর্থনে প্রচারে গিয়ে হুঙ্কার শুভেন্দুর | Suvendu A
'চোর-চোর' তৃণমূলের পতাকা দেখেই জ্বলে উঠলেন শুভেন্দু! কি হল দেখুন | Suvendu Adhikari on TMC |
মহিলাদের নিরাপত্তায় বড় উদ্যোগ! ফ্রী ক্যারাটে প্রশিক্ষণ শিবির রাজ্যজুড়ে! | RG Kar