প্রত্যেক মহিলাই একজন ব্যক্তিকে নিজের ‘স্বামী’ বলে দাবি করছেন এবং সন্তান-সহ তাঁর থেকে খোরপোশের দাবি জানাচ্ছেন দেখে কোনও সুরাহা করতে পারছেন না স্থানীয় পঞ্চায়েতের সদস্যও।
কেউ দেখাচ্ছেন নথি, কেউ করছেন মৌখিক দাবি। বাড়ির সামনে একের পর এক ‘বউ’-এর লাইন পড়ে যেতেই মহা বিপদে পড়লেন কালনার যুবক। প্রত্যেক মহিলাই তাঁকে নিজের ‘স্বামী’ বলে দাবি করছেন এবং সন্তান-সহ তাঁর থেকে খোরপোশের দাবি জানাচ্ছেন দেখে কোনও সুরাহা করতে পারছেন না স্থানীয় পঞ্চায়েতের সদস্যও। ঘটনাটি ঘটেছে কালনার ধর্মডাঙায়। এই এলাকায় থাকেন শুভঙ্কর হালদার নামের এক ব্যক্তি, তাঁরই বাড়ির সামনে এসে শোরগোল ফেলে দিলেন দুই মহিলা – চামেলি হাওলাদার এবং কাকলি।
-
চামেলি হাওলাদার নামের মহিলা শুভঙ্কর হালদারকে নিজের স্বামী বলে পরিচয় দিয়ে জানিয়েছেন যে, তাঁর একটি ৯ বছরের ছেলে এবং একটি ১৬ বছরের মেয়ে আছে। তাঁর, স্বামী তাঁকে দেখভাল করতেন না। কাজের সূত্রে অধিকাংশ সময়ে বাইরেই থাকতেন। সংবাদ মাধ্যমের সামনে তিনি দাবি করেছেন, “আমার স্বামীর তিনটে বিয়ে। এখানে-ওখানে বিয়ে করে সংসার পাতিয়ে থাকে। আজ সেই প্রমাণ হাতে নিয়েই এসেছি। এই মহিলাকেও বিয়ে করে রেখেছে। আমার আগেও একজনকে বিয়ে করেছে। শ্বশুরবাড়ির লোকজন জানায়নি। আমার সন্তানদের ভবিষ্যৎ গড়ে দেওয়ার দাবি জানাতে ডিভোর্স চাইতেই এখানে এসেছি।” বর্তমানে চামেলি নিজের বাপের বাড়িতে থাকেন বলে জানা গেছে।
-
অন্যদিকে, কাকলি নামের আরেক মহিলাও একটি নথি দেখিয়ে জানিয়েছেন যে, শুভঙ্করের সঙ্গে তাঁর রেজিস্ট্রি করে বিয়ে হয়ে গেছে। নিজের 'স্ত্রী' বলে পরিচয় দিয়ে তিনি জানান, তাঁর আগের পক্ষের দুটি মেয়ে রয়েছে। কাকলি বলেন, “শুভঙ্কর আমাকে রেজিস্ট্রি করে বিয়ে করেছে। ওর বাবার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে বলে আমার কাছ থেকে ৫ লক্ষ টাকা শুভঙ্কর নিয়েছে। বাড়ি বন্ধক রেখে টাকা দিয়েছি।” তিনি আরও জানান, “কালনায় আত্মীয় বাড়ি থেকেই ওর সঙ্গে আমার সম্পর্ক তৈরি হয়। শুভঙ্কর জানায়, ও স্ত্রীকে ডিভোর্স দিয়েছে। ৪ বছর আমার কাছে দিল্লিতে ছিল। খাওয়াপরা থেকে শুভঙ্করের যাবতীয় খরচ আমি বহন করেছি। দফায় দফায় আমার কাছ থেকে হাজার হাজার টাকা নিয়েছে। এখন আমার সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে চায় না। অন্য আর এক মহিলার প্রেমে পড়েছে। এখন ওকে দেওয়া পুরো টাকা আমায় ফেরত দিক। নাহলে আমাকে ঘরে তুলুক।”
-
যদিও শুভঙ্করের দাবি, “একজন আমার বিবাহিত স্ত্রী। তার সঙ্গে ৪ বছর সংসার করেছি। আমি বাড়িতে ছিলাম না। সেসময় পরিবারের সকলের নামে মামলা করে। আর একজন যে মহিলা এসেছেন, তিনি কালনার কদমতলায় থাকেন। আমার মতো বেশ কয়েকজনকে উনি ফাঁসিয়েছেন। অনেকে আত্মহত্যা করে মারাও গিয়েছে।” কাকলির সঙ্গে রেজিস্ট্রি পেপার থাকার কথা স্বীকার করে শুভঙ্করের দাবি, “আমাকে খাইয়ে ওখানে নিয়ে গেছে। আমার কাছে ২৫ হাজার টাকা নিয়েছে। আমার গাড়ি ছিল।সেটাও বিক্রি করে দিয়েছে। আমাকে ফাঁসিয়েছে।” ঘটনাস্থলে এসে পঞ্চায়েত সদস্য প্রদীপ মণ্ডলও কোনও সুরাহা করতে পারেননি। তিনি বলেছেন, “দেখানো কাগজপত্র দেখে কিছু বোঝা যাচ্ছে না। তাই ওঁদের কিছু করার হলে আইনের আশ্রয় নেওয়ার বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।”
-
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।