ছাত্রের ভর্তি আটকানো, ছাত্রীর পিএইচি ডি আটকানো, শিক্ষকদের মুচলেকা আদায়, একের পর এক সাসপেনশন, বেতন ও পেনশন আটকানো এমন বিস্তর অভিযোগ তুলছেন ছাত্র ছাত্রীরা উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে।
আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের সাথে কথা বললেন না উপাচার্য, উল্টে পড়ুয়াদের উপর নেমে এল নিরাপত্তা রক্ষীদের আক্রমণ। মঙ্গলবার বিকেলে উপাচার্যর গাড়ির সামনে হাতজোড় করে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বিশ্বভারতী ইউনিটের সভাপতি বলেন, দয়া করে কথা বলুন! আমাদের শিক্ষার অধিকার কেড়ে নেবেন না! কিন্তু সেকথায় কান না দিয়ে নিরাপত্তা রক্ষীদের নির্দেশ দিলেন পড়ুয়াদের উপর বলপ্রয়োগ করতে। ঘটনার জেরে গুরুতর আহত মীনাক্ষী ভট্টাচার্য।
ছাত্রের ভর্তি আটকানো, ছাত্রীর পিএইচি ডি আটকানো, শিক্ষকদের মুচলেকা আদায়, একের পর এক সাসপেনশন, বেতন ও পেনশন আটকানো এমন বিস্তর অভিযোগ তুলছেন ছাত্র ছাত্রীরা উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে। এমনকি আদালতের নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে চলেছেন এমন গুরুতর অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার বিকেল চারটে নাগাদ উপচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী গাড়ি চড়ে নিরাপত্তা রক্ষী নিয়ে বের হতে চেষ্টা করেন। আর ঠিক তখনই পড়ুয়াদের উপর দ্বিতীয়বার আক্রমণ হয় বলে অভিযোগ ।
অভিযোগ প্রচন্ড শীতে বারো দিন ধরে আন্দোলনরত ছাত্র ছাত্রীরা এগিয়ে এসে কথা বলতে চান। উপাচার্য গাড়ি থেকে না নেমে, গাড়ি পিছোতে বলে, নিরাপত্তারক্ষীদের কড়া কিছু একটা নির্দেশ দেন। তখন রাস্তায় শুয়ে তাঁরই ছাত্র ছাত্রীরা। তারপরই মহিলা নিরাপত্তা রক্ষীরা বিশ্বভারতীর তৃণমূল কংগ্রেস ইউনিটের সভাপতি মীনাক্ষী ভট্টাচার্যের উপর নেমে আসে আক্রমণ। তার চুলের মুঠি ধরে টেনে হিঁচড়ে সরানো হয় ও তলপেটে লাথি মারা হয় বলে অভিযোগ। আহত মীনাক্ষী ভট্টাচার্য বলেন, উপাচার্যর ভার্চুয়াল নির্দেশেই নিজেদের চাকরি বাঁচাতে তাঁরা আমাকে মেরেছে। আমি এখনো চিকিৎসকের কাছে যেতে পারিনি। আমার চিকিৎসার প্রয়োজন।
প্রসঙ্গত দুবছর আগে ২০ মে কুয়েট নিয়ে এই উপাচার্যর সঙ্গে কথা বলতে গেলে তিনি বলেন, এই রকম নোংরা মেয়ের (মীনাক্ষী ভট্টাচার্য) সঙ্গে তিনি (উপাচার্য) কোনও কথা বলতে চান না। তারপর ড্রাইভারকে পড়ুয়াদের উপর গাড়ি চালিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন। দুর্ঘটনা এড়াতে পড়ুয়ারা কোনক্রমে ছুটে প্রাণ বাঁচান। তার জেরে উপাচার্যর বিরুদ্ধে মীনাক্ষী ভট্টাচার্য শান্তিনিকেতন থানায় ইমেইল মারফৎ একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
অন্যদিকে, ছাত্রছাত্রীদের পড়ার পরিবেশ ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে অনড় ছাত্রছাত্রীরা বলেন, দাবি না মিটলে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্বভারতী উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে ঘেরাও চলবে। তাদের অভিযোগ, ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে যারাই যুক্ত হবে তাদের হয় রাস্টিকেট করা হচ্ছে, না হয় সাসপেন্ড করা হচ্ছে। রেজাল্ট আটকানো হচ্ছে। পিএইচডি আটকানো হচ্ছে। দীর্ঘ চার বছর ধরে কুকর্ম করে চলেছেন উপাচার্য। গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আশ্রমে এমন উপাচার্যের পদত্যাগ ছাড়া আর কোনো উপায়ন্তর নেই।