বীরভূমে বড় ব্যবধানে জয় পেতে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। জেলার বেতাজ বাদশা অনুব্রত মণ্ডল বর্তমানে জেলে। তারপরেও এই সাফল্যের পিছনে রয়েছে মমতার কারিগুরি।
অনুব্রত মণ্ডল ছাড়াই বীরভূমে বিরাট জয় দেখতে পাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। গরুপাচারকাণ্ডে বর্তমানে তিহার জেলে বন্দি বীরভূমের জেলা সভাপতি। কিন্তু তারপরেই বীরভূমে ২০১৮ সালের ধারা অব্যাহত রেখেই এগিয়ে গিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। যদিও বিজেপির পক্ষ থেকে অনুব্রতর প্রধান প্রতিপক্ষ দুধ কুমার মণ্ডল জয়ী হয়েছেন।
বীরভূমে ভোটের ট্রেন্ড
বীরভূমে ৫২টি জেলা পরিষদের অসনের মধ্যে ৪টি এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। পঞ্চায়েত সমিতির ৫৯০টি আসনের মধ্যে ১২৭টি আসনে এগিয়ে তৃণমূল। আর গ্রাম পঞ্চায়েতের ২৮৫৯টি আসনের মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেস এগিয়ে রয়েছে ১০৭২টি আসনে। অনেক পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় স্থানে বিজেপি। এগিয়ে ৩৪টি আসনে। বামেরা এগিয়ে ১৮টি আসনে। কংগ্রেস আটটি আসনে এগিয়ে রয়েছে।
যাইহোক বীরভূম নিয়ে রীতিমত ঝাপিয়ে ছিল তৃণমূল কংগ্রেস। কারণ গত বছর পঞ্চায়েত নির্বাচনেও বীরভূমে একচ্ছত্র অধিপত্য বজায় রেখেছিল তৃণমূল।অনুব্রতর নেতৃত্বে ভোটে বিরোধীরা খড়কুটোর মত উড়ে গিয়েছিল। এবারও সেই একই ধারা অব্যাহত রয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তরবঙ্গে নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে পায়ে চোট পাওয়ার পরে আর প্রচারে বেরোতে পারেননি। তবে তিনি শুধুমাত্র বীরভূমেই ভার্চুয়াল প্রচারে অংশ নিয়েছিলেন। ফিরহাদ হাকিমের ফোন থেকে দুবরাজপুরের জনসভায় বক্তব্য রেখেছিলেন। তবে তার আগেও মমতা যে বীরভূম নিয়ে তৎপর ছিলেন তা প্রকাশ্যে এসেছে। কারণ তিনি জেলা সভাপতির পদে অনুব্রতকে রেখে দিয়ে জেলার সংগঠনের দায়িত্ব দিয়েছিলেন ফিরহাদ হাকিমকে। অনুব্রত বিরোধী গোষ্ঠী হিসেবে পরিচিত কাজল শেখদের ক্ষমতা দিলেও তাদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছিলেন। কাজল শেখকে কালীঘাটের বৈঠকে ধমকও দিয়েছেন। বীরভূমের সংগঠন মোটের ওপর মমতা নিজের হাতেই নিয়েছিলেন বলা যেতে পারে। আর সেই কারণে অনুব্রতহীন বীরভূমে তৃণমূল সাফল্য গুরুত্বপূর্ণ। অনুব্রতকে কেন্দ্রীয় এজেন্সি দিল্লিতে নিয়ে যাওয়ার পরেই মমতা জেলার সংগঠনের দায়িত্ব দিয়েছিলেন ফিরহাদের হাতে। পাশাপাশি তিনি নিজেও যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়েছিলেন।
অন্যদিকে বীরভূমে বিজেপির টিকিটে জয়ী হয়েছেন দুধকুমার মণ্ডল। তাঁকে বিজেপি বহিষ্কার করলেও ভোটের আগে দলে ফিরিয়ে প্রার্থী করেছিল। অন্যদিকে অনুব্রতর বিরুদ্ধে মামলাকারী শিবঠাকুর মণ্ডলের স্ত্রীকেও টিকিট দিয়েছিল তৃণমূল। সেই মহিলা প্রার্থীও শেষ পর্যন্ত দলের মুখ রক্ষা করতে পেরেছে। এনআইএর হাতে গ্রেফতার হওয়া মনোজ ঘোষও জয়ী হয়েছে তৃণমূলের টিকিটে।