প্রসব যন্ত্রণায় ছটফট করছেন গৃহবধূ। কিন্তু বাজার লাগোয়া রাস্তায় যে তখন থিকথিকে ভিড়! ঘণ্টা দেড়েক আটকে রইল অ্যাম্বুল্যান্স। পরিস্থিতি সামাল দিতে কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশও এগিয়ে আসেনি বলে অভিযোগ। শেষপর্যন্ত অ্যাম্বুল্যান্সে সন্তান প্রসব করলেন ওই মহিলা। অমানবিকতার সাক্ষী থাকল দক্ষিণ ২৪ পরগণার ক্যানিং।
অন্তঃস্বত্ত্বা ওই গৃহবধূর নাম সানারা মোল্লা। সোমবার সকালে প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে প্রথমে ক্যানিং-এর জীবনতলা থানার মঠেরদিঘি হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। পরিবারের লোকেরা জানিয়েছেন, হাসপাতালে ভর্তির হওয়ার ওই গৃহবধূর শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়। তাঁকে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু মঠেরদিঘি থেকে অ্যাম্বুল্যান্সে ক্যানিং আসার পথে ঘটে বিপত্তি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন,ক্যানিং বাজারে কাছে প্রবল যানজটে আটকে পড়ে অ্যাম্বুল্যান্সটি। দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছানোর জন্য় কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশকর্মীর সাহায্য চান সানারা-র লোকেরা। কিন্তু সাহায্য তো মেলেনি বলে অভিযোগ। প্রবল যানজটে প্রায় ঘণ্টা দেড়েক ক্যানিং বাজারেই আটকে থাকে অ্যাম্বুল্যান্সটিও! এদিকে ততক্ষণে ওই গৃহবধূর প্রসব যন্ত্রণা আরও বেড়ে দিয়েছে। শেষপর্যন্ত অ্যাম্বুল্যান্সেই প্রসব করে ফেলেন তিনি। এরপর সানারা ও তাঁর সদ্যোজাত সন্তানকে তড়িঘড়ি নিয়ে যাওয়া হয় ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে। উভয়েই সুস্থ আছে বলে জানিয়েছে চিকিৎসকরা। এদিকে পুলিশের এমন আনবিক আচরণের হতবাক সানারা মোল্লা-র পরিবারের লোকেরা। তাঁদের দাবি, অ্যাম্বুল্যান্সের সামনেই দাঁড়িয়েছিলেন ট্রাফিক সার্জেন্ট। কিন্তু তাঁর কাছে সাহায্য চেয়েও কোনও লাভ হয়নি। যানজটের কারণে সানারা বা তাঁর সন্তানের যদি প্রাণসংশয় হত, তাহলে দায় কে নিত? উঠেছে প্রশ্ন।
আরও পড়ুন: খাটের উপরেই অবসরপ্রাপ্ত রেলকর্মীর দেহ, মহিলাঘটিত সম্পর্কের জের বলে সন্দেহ পুলিশের
উল্লেখ্য,দিন কয়েক আগে কৃষ্ণনগরে বিজেপি সভার কারণে প্রবল যানজটে আটকে পড়ে একটি অ্যাম্বুল্যান্স। ভাষণ থামিয়ে মঞ্চ থেকে চালককে ঘুরপথে যাওয়ার নির্দেশ দেন খোদ দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে কৃষ্ণনগরের কোতুয়ালি থানায়। পুলিশের দাবি, ওই অ্যাম্বুল্যান্সে করেও এক প্রসূতিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল।