সংক্ষিপ্ত
- কেরলে এগিয়ে বাম জোট
- এগিয়ে রয়েছেন পিনারাই বিজয়ন
- কংগ্রেস দ্বিতীয় স্থানে
- তৃতীয় স্থানে বিজেপি
ইতিহাস তৈরি করে দ্বিতীয় বারের জন্য ক্ষমতায় ফিরতে চলেছে কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। সাড়ে বারোটার মধ্যেই প্রায় পরিষ্কার হয়ে গেছে দ্বিতীয় বারের জন্য ক্ষমতা দখল করতে চলেছে বাম নেতৃত্বাধীন লেফট ডেমোক্রিটিক ফ্রন্ট। ১৪০ আসনের কেরল বিধানসভা এখনও পর্যন্ত ৮৯টি আসনে এগিয়ে রয়েছে বামেরা। অনেকটাই পিছিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন জোট ইউডিএফ। এগিয়ে রয়েছে ৪৬টি আসনে। তৃতীয় স্থানে রয়েছে বিজেপি। এখনও পর্যন্ত অবস্থা তাতে কেরল বিধানসভায় বিজেপির বিধায়ক সংস্থা ১ থেকে বেড়ে ২ হতে পারে দলের এই সাফল্যে কেরলবাসীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন সিপিএম নেতা প্রকাশ কারাত। ।
একটা সময় পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা ও কেরল- এই তিনটি রাজ্যেই বামেদের একচ্ছত্র অধাপত্য দেখা যেত। কিন্তু ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে বামেদের যে রক্তক্ষণর শুরু হয়েছে তা অব্যাহত রয়েছে২১-এর বিধানসভা নির্বাচনেও। অন্যদিকে শেষ বিধানসভা নির্বাচনে ত্রিপুরা হাতছাড়া হয়েছে বামেদের। এখন সেই রাজ্যে বিজেপির আধিপত্য। অন্যদিকে ভাগবানের দেশ হিসেবে পরিচিত কেরলেই একমাত্র আধিপত্য কায়েম করতে রাখতে পেরেছে বামেরা। এককথায় বামেদের শিবরাত্রিরের শলতে হয়ে জ্বলছেন ৭৫ বছরের পিনারাই বিজয়ন।
নির্বাচন কমিশনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী এখনও পর্যন্ত ধর্মাদাম বিধানসভা কেন্দ্রে এগিয়ে রয়েছেন পিনারাই বিজয়ন। এগিয়ে রয়েছেন তাঁর স্বাস্থ্য মন্ত্রী কেকে শৈলজা। পালাক্কাড থেকে এগিয়ে রয়েছেন বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী ই শ্রীধরন। যিনি মেট্রো ম্যান হিসেবেই পরিচিত। কেরলে সিপিএম এককভাবে এখনও পর্যন্ত ৫৫টিরও বেশি আসনে এগিয়ে রয়েছে। সিপিআই এগিয়ে রয়েছে ১৬টি আসনে। কংগ্রেস এগিয়ে রয়েছে ২৪টি কেন্দ্রে। বিজেপির ৩টি কেন্দ্রে এগিয়ে আছে।
নিপা ভাইরাসের পর করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই। সবমিলিয়ে কিছুটা হলেও সংকটে ছিল কেরল। তারপর সোনা পাচার নিয়ে কেন্দ্রের চাপও ক্রমশই বাড়ছিল পিনারাই বিজয়নের ওপর। কিন্তু সেসব কিছুকে পরাজিত করে ভোট যন্ত্রে কেরলের বাসিন্দারা সিপিএম-এর পক্ষেই রায় দিয়েছেন। স্থানীয়দের কথায় রাজ্যে করোনা-সংক্রমণ ভয়াবহ আকার নিলেও বিজয়ন সরকার তার মোকাবিলা করেছে পূর্ণ শক্তি দিয়ে। লকডাউন ও স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে স্থানীয়দের পাশে প্রথম থেকেই ছিলেন পিনারাই বিয়জন ও তাঁর স্বাস্থ্যমন্ত্রী কেকে শৈলজা। কঠিন সময় অনেক বাধা সত্ত্বেও তাঁরা কাজ করে গিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তবে চলতি নির্বাচনে এই রাজ্যের দিকে নজর ছিল বিজেপি ও কংগ্রেসের। বামেদের সঙ্গে কেন্দ্র ও বাংলায় কংগ্রেস জোট করলেও এই রাজ্যের বামদের মূল প্রতিপক্ষ কংগ্রেস। তাই প্রথম থেকেই রাজ্য দলখের জন্য মরিয়া চেষ্টা চালিয়েছিল কংগ্রেস। রাহুল গান্ধী ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধী একের পর এক সভা করেছিলেন। অন্যদিকে বামেদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল বিজেপিও। মোদী থেকে অমিত শাহ ও জেপি নাড্ডাও একাধির জনসভা ও রোডশো করেছিলেন। কিন্তু সবকিছু পরাস্ত হয় ভোট যন্ত্রে। নজিরবিহীনভাবে করলে দ্বিতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় ফিরতে চলেছে বামেরা।
কেরলের ইতিহাসে ১৯৮৭ সাল থেকে কোনও রাজনৈতিক দল বা জোটই পরপর দুবার সরকার গঠন করতে পারেনি। তার আগে কংগ্রেস পরপর দুবার ক্ষমতা দখল করেছে। নির্বাচনী ইতিহাসে দেখা যাচ্ছে কেরলে একবার বাম ও একবার কংগ্রেস শাসন ক্ষমতায় থাকে। এবারই উল্টো ছবি ধরা পড়তে চলেছে কেরলে।