সংক্ষিপ্ত

  • আষাঢ় মাসের শুক্লা পঞ্চমী তিথিতে বিপদতারিনী পুজো হয়
  • এটি দেবী সঙ্কটনাশিনীর একটি রূপ
  • যিঁনি দুর্গা তিনিই বিপদতারিনী
  • মা বিপদতারিনী পুজো করা ভক্তরা সুখ ও শান্তি লাভ করে

আষাঢ় মাসের এই সময় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আষাঢ় মাসের শুক্লা পঞ্চমী তিথিতে হিন্দু মহিলারা বিপদতারিনী ব্রত পালন করেন। তিনি দেবী সঙ্কটনাশিনীর একটি রূপ এবং দেবী দুর্গা ১০৮ অবতারের অন্যতম। হিন্দুধর্মাবলম্বীরা মূলত বিপদ থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্য এই দেবীর পুজো করেন। যিঁনি দুর্গা তিনিই বিপদতারিনী। গ্রামাঞ্চলে বিপদতারিনী পুজো চারদিন ধরে চলে। প্রথম দিনে দেবীর “আরাধনা” করা হয়।  তারপর দুই রাত্রি ধরে রাতে বাংলা লোকগান, ভজন ও কীর্তন চলে। চতুর্থ দিনে বিসর্জন হয়।  জ্যৈষ্ঠ ও আষাঢ় মাসে মঙ্গল ও শনিবারে মায়ের পুজো হয় । যেখানে ১৩ প্রকার ফল, ফুল, মিষ্টি, পান সুপারী অর্পণ করা হয়। 

এই পুজোর নিয়ম অনুসারে মা বিপদতারিনী পুজো করা ভক্তরা সুখ ও শান্তি লাভ করে। শাস্ত্রে যেমন মা লক্ষ্মী মাকে ধন সম্পদের দেবী হিসাবে বিবেচনা করা হয়। তেমনি এটা বিশ্বাস করা হয় যে মা বিপদতারিনী উপাসনা করলে তিনি সকলের উপর আশির্বাদ বজায় রাখেন। একই সঙ্গে সমস্ত ঝামেলা, অর্থ সঙ্কট থেকে মুক্তি দেন। ঘরে সুখ ও সমৃদ্ধি লাভ হয়। তবে এই দিনে নির্দিষ্ট কিছু কাজ করা নিষিদ্ধও। বিপদতারিনী পুজোর দিনগুলিতে এই নিয়ম বিরুদ্ধ কাজ জীবনে ডেকে আনতে পারে চরম অর্থকষ্ট ও সমস্যা।

বিপদতারিনী পুজোর সময় পরিবারের বাইরে কাউকে টাকা দেবেন না বা ধারও করবেন না। এটা বিশ্বাস করা হয় যে এই সময় প্রদত্ত টাকা ফেরত আসে না। এই দিনে কাউকে অর্থ দিলে মা রাগান্বিত হন এবং সম্পর্কও নষ্ট হয়ে যায়।

বিপদতারিনী পুজোর সময় কখনই কাউকে অপমান করবেন না। এই দিনটিতে কোনও মহিলাকে অপমান করা উচিত নয়। এদের সম্পর্কে আপত্তিজনক কথা বলবেন না। মা লক্ষ্মী মহিলাদের মধ্যেই বাস করেন এবং মা লক্ষ্মী এই কাজে ক্রুদ্ধ হন।

বিপদতারিনী পুজোর সময় নিরামিষ আহার গ্রহণ করুন। এইদিনে পরিবারের কোনও সদস্য মদ্যপান করা এড়ানো উচিত। এই দিনে পূর্ণ নিরামিষ খাবার খাওয়া উচিত ও নিয়ম মেনে পুজো সম্পন্ন করা উচিত।

বিপদতারিনী পুজোর দিনে কাউকে চিনি দেওয়া উচিত নয়। জ্যোতিষশাস্ত্রে, চিনি শুক্র এবং চাঁদ উভয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত। অতএব বিপদতারিনী পুজোর দিনে চিনি দিলে শুক্র দুর্বল হয় এবং শুক্র বস্তুগত সুখের কর্তা। শুক্র গ্রহ রুষ্ট হলে বৈষয়িক স্বাচ্ছন্দ্যের হ্রাস ঘটে এবং আর্থিক পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়।

বিপদতারিনী পুজোর আগে গণেশের পুজো করা উচিত। এর ফলে দেব-দেবতারা সুখী হয় এবং উভয়ের কৃপাদৃষ্টি বজায় থাকে। সম্ভব হলে সকালে বা সন্ধ্যায় পুজোর শেষে বাড়ির মহিলাদের প্রথম প্রসাদ গ্রহণ করা উচিত।

বিপদতারিনী পুজোর ব্রত পালনের সময় কারও সঙ্গে কথা বলবেন না। এর ফলে দেবী রাগান্বিত হন এবং অর্থ সম্পর্কিত সমস্যা শুরু হয়। বাড়িতে অসুস্থ বাড়তে শুরু করে। ব্যবসায় ক্ষতিও দেখা দিতে পারে।

বিপদতারিনী পুজোর স্থান সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন। এর ফলে ঘরের সুখ ও শান্তির ধারা অব্যাহত থাকে। দুঃস্থদের দান করুন, মানুষের বিপদে পাশে দাঁড়ান।