সংক্ষিপ্ত
- অম্বুবাচী হিন্দুধর্মের এক ঐতিহ্যবাহী এক উৎসব
- আষঢ় মাসে মৃগ শিরা নক্ষত্রের তিনটি পদ শেষে ধরিত্রী মা ঋতুময়ী হয়
- এই সময়টিতে অম্বুবাচী পালন করা হয়
- ৫০০ বছরের প্রচীণ রীতির ছন্দপতন হতে চলেছে কামাখ্যায়
অম্বুবাচী হিন্দুধর্মের এক ঐতিহ্যবাহী এক উৎসব। লোকবিশ্বাস মতে আষঢ় মাসে মৃগ শিরা নক্ষত্রের তিনটি পদ শেষ হলে পৃথিবী বা ধরিত্রী মা ঋতুময়ী হয়। এই সময়টিতে অম্বুবাচী পালন করা হয়। এই বিষয়ে প্রবাদে রয়েছে ‘কিসের বার কিসের তিথি, আষাঢ়ের সাত তারিখ অম্বুবাচী।’ এদিন থেকেই হয় অম্বুবাচী শুরু। জ্যোতিষ শাস্ত্রে বলা হয়েছে, সূর্য যে বারের যে সময়ে মিথুন রাশিতে গমন করেন, তার পরবর্তী সেই বারের সেই কালে অম্বুবাচী হয়। অর্থাৎ, ধরিত্রী মা এই সময়ে ঋতুমতী হন।
অম্বুবাচীর তিন দিন পর্যন্ত কোনও ধরনের মাঙ্গলিক কার্য করা হয় না। চতুর্থ দিন থেকে মঙ্গলিক কাজে কোনও বাধা থাকেনা। অম্বুবাচীর সময় হাল ধরা, গৃহ প্রবেশ, বিবাহ ইত্যাদি শুভ কাজ করা নিষিদ্ধ থাকে ও এই সময়ে মঠ-মন্দিরের প্রবেশদ্বার বন্ধ থাকে। নিরয়ণ পঞ্জিকা মতে ৭ থেকে ১১ আষাঢ় এই চার দিন গ্রাম-বাংলার মহিলারা এই অনুষ্ঠান পালন করেন। চাষ বাসের কাজ এই সময় বন্ধ থাকে। এই অনুষ্ঠান উপলক্ষে পিঠা-পায়েস তৈরির রীতি আছে। এই অনুষ্ঠানে বিধবা মহিলারা তিন দিন ধরে ব্রত রাখেন। অম্বুবাচীর আগের দিন রান্না করা খাবার তারা তিন দিন ধরে খান। ঐ তিন দিন তারা কোনও গরম খাবার খান না। এই তিন দিন কামরূপ কামাখ্যায় পুজো হয়। সমস্ত দেবী মন্দির বন্ধ থাকে। কামরুপ কামাহ্মায় মন্দিরের গর্ভ গৃহ থেকে লাল রং এর তরল নির্গত হয়। ভ
অসমের কামাখ্যা মন্দিরে এই উপলক্ষ্যে দেবীর ঋতুকাল সমাগত মনে করে উৎসব পালন করা হয়। সূর্যের দক্ষিণায়নের দিন থেকে তিন দিন অর্থাৎ আষাঢ়ের ৭ তারিখ থেকে ১০ দিনের মধ্যে এই পার্বণের পালন কাল। ওড়িশায় এই পার্বণকে সরাসরি ‘রজ উৎসব’বলে বর্ণনা করা হয়েছে। তবে এই বছর করোনার ফলে ৫০০ বছরের প্রচীণ রীতির ছন্দপতন হতে চলেছে কামাখ্যা মন্দিরের চিরাচরিত পরম্পরায়। এই বছর অসমের বিখ্যাত কামাখ্যা মন্দিরে আয়োজিত হবে না অম্বুবাচীর মহোৎসব।
জুন মাসের ২২ থেকে ২৬ এই উৎসব হওয়ার কথা ছিল, তা বাতিল করেছে ‘মা কামাখ্যা দেবালয়’কর্তৃপক্ষ ও মেলার আয়োজক। সংস্থার তরফ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে এই বছরে কামাখ্যায় কোনও মহোৎসব হবে না। তীর্থ যাত্রী, সাধু-সন্ন্যাসীদের যে আগমন ঘটে তা যাতে না হয় সেই মত সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন। এই বছপ বাইরের কোনও দর্শনার্থীকেই উৎসবে অংশগ্রহণ করতে কামাখ্যায় না আসার অনুরোধ করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষের তরফে এও জানানো হয়, মেলা অনুষ্ঠিত হবে না তশুধুমাত্র মন্দিরে রীতি পালন করা হবে প্রতি বছরের মত।