সংক্ষিপ্ত
ঝাড়খণ্ডের দেওঘরে অবস্থিত বৈদ্যনাথ ধাম। সেখানে রয়েছে নবম জ্যোতিলিঙ্গ। প্রাচীন বিশ্বাস অনুযায়ী এই ধাম তৈরি হয়েছিল ভগবান বিষ্ণুর হাতে।
হিন্দু ধর্মে গুরুত্বপূর্ণ দেবতার মধ্যে শিব হলেন অন্যতম। তাঁকে আদি শক্তি হিসেবেও বিবেচনা করা হয়। ভগবান শিবের ১২টি জ্যোতির্লিঙ্গ রয়েছে রয়েছে। ১২টির মধ্যে একটি হল দেওঘরের বাবা বৈদ্যনাথ ধাম। প্রাচীন বিশ্বার এই মন্দির প্রভূত জাগ্রত। কিন্তু আপনি কী জেনেন যে বৈদ্যনাথ ধামের মন্দিরের চূড়ায় নেই শিবের ত্রিশূল । সেখানে স্থান পয়েছে পঞ্চশূল।
শিব বা মহাদেব- চোখ বুজলেই ত্রিশূল হাতে এক মহাযোগীর ছবি ভেসে ওঠে। কারও মনে শিবের শান্ত প্রচিরূপ ভেসে ওঠে । কারও আবার মনে রুদ্ররূপী শিব রয়েছে। কিন্তু শিব মানেই হাতে থাকবে ত্রিশূল। শিবের সমস্ত মন্দিরেই রয়েছে ত্রিশূল। ছোট মন্দিরে যেমন ত্রিশূল দেখতে পাওয়া যায় তেমনই বড় মন্দিরেও তা দেখতে পাওয়া যায়। একমাত্র ব্যাতিক্রম হল বৈদ্যনাথ ধাম।
ঝাড়খণ্ডের দেওঘরে অবস্থিত বৈদ্যনাথ ধাম। সেখানে রয়েছে নবম জ্যোতিলিঙ্গ। প্রাচীন বিশ্বাস অনুযায়ী এই ধাম তৈরি হয়েছিল ভগবান বিষ্ণুর হাতে। তাই এটিকে শক্তিপীঠও বলা হয়। প্রাচীন বিশ্বাস এই মন্দিরে যে যায় চায় তাই পায়য তাই এই মন্দিরের আরেক নাম মনোকামনালিঙ্গ। এই মন্দিরের বিশেষত্ব হল এখানে ত্রিশূল নেই। রয়েছে পঞ্চশূল। কিন্তু কেন?
হিন্দু ধর্মে ত্রিশূলকে ভগবান শিবের অস্ত্র হিবেসে বিবেচনা করা হয়। এটি তিন দেবতার প্রতীক। ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বের অর্থাৎ সৃষ্টি-স্থিতি আর বিনাশের প্রতীক। একমাত্র জ্যোতির্লিঙ্গ বৈদ্যনাথ ধামেই নেই ত্রিশূল।
কিংবদন্তি অনুসারে ত্রেতাযুগে শিবের পরম ভক্ত রাবণ লঙ্কার প্রবেশদ্বারে পঞ্চশীল স্থাপন করেছিলেন। যা সুরক্ষার প্রতীক। রামায়ন অনুযায়ী পঞ্চশূলেই আটকে ছিল রাবণের প্রাণভ্রমরা। তাই রাম-রাবণের যুদ্ধে রাবণকে পরাস্ত করতে পারছিলেন না রাম। শেষপর্যন্ত বিভীষণ পঞ্চশূলের তথ্য রামকে দেন। আর গোপনে সেই পঞ্চশূল চুরি করে আনেন। মনে করা হয় সেই পঞ্চশূল স্থাপন করা হয়েছে বৈদ্যনাথ ধামে। মনে করা হয় এই পঞ্চশূলের জন্যই বৈদ্যনাথ ধামে কোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয়নি।
মন্দির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শিবরাত্রিরের মাত্র ২ দিন আগে পঞ্চশূলটি নামান হয়। তারপর পরিষ্কার করে প্রথা মেনে পুজো করা হয়। শেষপর্যন্ত মন্দিরের চূড়ায় নতুন করে স্থাপন করা হয়।