সংক্ষিপ্ত
নিজের দেহত্যাগের তিথি তিনি নিজেই আগে থেকেই নির্ধারিত করে শিষ্যদের জানিয়ে রেখেছিলেন। বাংলা ১২৯৭ সালের ১৯ জ্যৈষ্ঠ ইংরেজির ১৮৯০ খ্রিষ্টাব্দ (মতভেদে) ১৬০ বছর বয়সে তিথি অনুযায়ী বাবা লোকনাথ দেহত্যাগ করেন।
৩ জুন ২০২২ শুক্রবার বাংলায় ১৯ জৈষ্ঠ্য বাবা লোকনাথের তিরোধান উৎসব। সারা বাংলায় এই উৎসব পালন করা হয়।
শ্রীকৃষ্ণের জন্ম তিথিতে ১৭৩০ খ্রিষ্টাব্দের ৩১ আগস্ট ১৮ ভাদ্র, ১১৩৭ বঙ্গাব্দে ২৪ পরগণার কচুয়া গ্রামে একটি ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন শ্রীশ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারী। পিতার নাম রামনারায়ণ ঘোষাল এবং মাতা কমলাদেবী। তিনি ছিলেন তার বাবা-মায়ের চতুর্থ সন্তান। শ্রীকৃষ্ণের জন্মতিথি অর্থাৎ জন্মাষ্টমির দিনেই জন্মগ্রহণ করেছিলেন তিনি।
৩ জুন ২০২২ শুক্রবার বাংলায় ১৯ জৈষ্ঠ্য বাবা লোকনাথের তিরোধান উৎসব। সারা বাংলায় এই উৎসব পালন করা হয়। শোনা যায় বাবা লোকনাথ নাকি পশ্চিম দিকে দিয়ে আফগানিস্তান, মক্কা, মদিনা ইত্যাদি স্থান ভ্রমণ করে আটলান্টিক মহাসাগর উপকূল পর্যন্ত পৌঁছেছিলেন তিনি। পরে তিনি বেণীমাধবকে সঙ্গে নিয়ে উত্তরের পথে গমন করেন। তাঁরা সুমেরু এলাকা গমনের ইচ্ছায় প্রাক-প্রস্তুতি উপলক্ষে শৈত্যপ্রধান এলাকা হিসেবে বদরিকা আশ্রমে অবস্থান করেন। সেখান থেকে আধুনিক পরিজ্ঞাত সীমা অতিক্রম করে উত্তরে বহু দূর পর্যন্ত চলে যান।
সেখানে সূর্যোদয় না হওয়ায় সময় নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি। তবে সে পথে তাঁরা নাকি ২০ বার বরফ পড়তে ও গলতে দেখেছিলেন। শেষে হিমালয় শৃঙ্গে বাঁধা পেয়ে তাঁরা পূর্ব দিকে গমন করে চিন দেশে উপস্থিত হন। সেখান থেকেই উভয়েই যাত্রা শুরু করে বেণীমাধব কামাখ্যায় এবং লোকনাথ বারদী গ্রামে বাস শুরু করেন। সে সময় থেকেই “বারদী’র ব্রহ্মচারী” হিসেবে লোকনাথ পরিচিতি পান। ভক্তদের কাছে সেই থেকেই তিনি বাবা লোকনাথ হিসেবেই পরিচিত। লোকনাথ বাবার প্রধান প্রসাদ হল মিছরি ও মাখন। তিনি বলতেন, সব মানুষেরই উচিৎ মিছরির মতো হওয়া। মিছরি যেমন বাইরে থেকে পাথরের মত কঠিন আর সেটি খেলে তার স্বাদ হয় মিষ্টি, তেমনই তিনি তাঁর ভক্তকে উপদেশ দেন বাইরে থেকে কঠিন হয়ে ভিতর থেকে মিষ্টি স্বভাবের হতে। তিনি অত্যন্ত অল্পেই সন্তুষ্ট। তাঁর পুজোয় কেবল ফুল, ধূপ, চন্দন এবং প্রসাদে অবশ্যই অমৃতি ও মিছরি রাখতে হবে৷ বাবা লোকনাথ অমৃতি ও মিছরি খুব ভালবাসেন ৷
বাবা লোকনাথের আধ্যাত্মিক শক্তি সম্বন্ধে অনেক কিংবদন্তি প্রচলিত আছে। কেউ কেউ বলেন, তিনি জাতিস্মর। দেহ হতে বহির্গত হতে এবং অন্যের মনের ভাব অবলীলায় তিনি জানতে পারতেন। এছাড়াও, অন্যের রোগ নিজ দেহে এনে রোগীকে রোগমুক্ত করার আশ্চর্য ক্ষমতা ছিল তাঁর। তাঁর বিখ্যাত বাণী 'রণে বনে জলে জঙ্গলে যখনই বিপদে পড়িবে, আমাকে স্মরণ করিও, আমিই রক্ষা করিব।'নিজের দেহত্যাগের তিথি তিনি নিজেই আগে থেকেই নির্ধারিত করে শিষ্যদের জানিয়ে রেখেছিলেন। বাংলা ১২৯৭ সালের ১৯ জ্যৈষ্ঠ ইংরেজির ১৮৯০ খ্রিষ্টাব্দ (মতভেদে) ১৬০ বছর বয়সে তিথি অনুযায়ী বাবা লোকনাথ দেহত্যাগ করেন।