সংক্ষিপ্ত
বাংলায় না হলেও যমরাজের সভার এই দেবতাও পূজিত হন। শুনে অবাক লাগলেও বিষয়টি একেবারে খাঁটি সত্য। বাংলায় না হলেও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এমনকী নেপালেও পূজিত হন এই দেবতা। এই চিত্রগুপ্ত হলেন সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মার সন্তান। চৈত্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের দ্বিতীয় তিথিতে ভগবান চিত্রগুপ্তের পূজা করার বিধান রয়েছে।
মৃত্যুর পর যে দেবতার সঙ্গে প্রথম সাক্ষাত হয়ে বলে মনে করা হয় তিনি হলেন চিত্রগুপ্ত। পুরাণ কাহিনি অনুসারে, যমরাজের সভার প্রতি মুহূর্তে তিনি হিসেব রাখেন পাপ-পূণ্যের। বাংলায় না হলেও যমরাজের সভার এই দেবতাও পূজিত হন। শুনে অবাক লাগলেও বিষয়টি একেবারে খাঁটি সত্য। বাংলায় না হলেও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এমনকী নেপালেও পূজিত হন এই দেবতা। এই চিত্রগুপ্ত হলেন সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মার সন্তান। চৈত্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের দ্বিতীয় তিথিতে ভগবান চিত্রগুপ্তের পূজা করার বিধান রয়েছে। এই বছর এই তিথি ২০ মার্চ তারিখে পড়ছে।
মৃত্যু বলতে বোঝায় জীবনের সমাপ্তি। জীব বিজ্ঞানের ভাষায়, প্রাণ আছে এমন কোনও জীবের জীবনের সমাপ্তিকে মৃত্যু বলে। সনাতন হিন্দু ধর্ম মতে, কোনও প্রানীর মৃত্যুর পরেই প্রথম যিনি দেখা দেন তিনি হলেন এক দেবতা। সারা জীবনের পাপ-পূণ্যের হিসেব মেলান তিনি। আর তাঁর কষা হিসাব থেকেই অনুমোদিত হয় স্বর্গ ও নরকে থাকার নিয়ম। ভগবান চিত্রগুপ্তের বিবরণ দেখে যমরাজ সিদ্ধান্ত নেন কার আত্মা স্বর্গে যাবে এবং কার নরকের যন্ত্রণা ভোগ করবে। যদিও ভগবান চিত্রগুপ্ত পূজা সবাই দ্বারা পূজা করা হয়, কিন্তু ভগবান চিত্রগুপ্ত প্রধানত কায়স্থ সমাজ দ্বারা পূজা করা হয়। সেই সঙ্গে দাওয়াত, কাগজ ও কলমেরও পুজো করা হয় এই দিনে।
পুরান মতে, স্বয়ং ব্রহ্মাই যমরাজকে দ্বায়িত্ব দেন পরলোকের। মানব জনমের পাপ-পূণ্যের হিসেব দেখে স্বর্গ বা নরক বাস স্থির করার দ্বায়িত্ব যম রাজের। একা যমরাজ এই দায়িত্ব সামলাতে বিপন্ন বোধ করায় তিনি আবারও সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মার শ্মরনাপন্ন হন, এবং বিকল্প কিছু ব্যবস্থার জন্য অনুরোধ করেন। সেই সময় ব্রহ্মার কায়া থেকে উদ্ভুত হয় এক দেবতা, ইনিই হলেন চিত্রগুপ্ত। সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মার কায়া থেকে সৃষ্টি হয়েছেন চিত্রগুপ্ত, এর জন্যই তাঁর সন্তানেরা কায়স্থ হিসেবে পরিচিতি পান। ব্রহ্মা চিত্রগুপ্তকে পাপ-পুণ্যের হিসেব রাখার কাজে নিয়োজিত করেন।
ভগবান চিত্রগুপ্তের পূজার নিয়ম-
এই পুজোর জন্য প্রথমেই একটি কাঠের উঁচু পিড়ি বা তক্তার উপর কাপড় বিছিয়ে চিত্রগুপ্তের ছবি রাখুন এরপর চিত্রগুপ্তকে ভক্তি সহকারে চাল, আবির, সিঁদুর, ফুল, ধূপ-দীপ এবং মিষ্টি নিবেদন করুন। এরপর ভগবান চিত্রগুপ্তের সামনে একটি নতুন কলম রাখলেন। এর পরে, সাদা কাগজে ১১ বার শ্রী গণেশায় নমঃ এবং ওম চিত্রগুপ্তায় নমঃ লিখুন। সবশেষে ভগবান চিত্রগুপ্তের আরতি করুন। চিত্রগুপ্ত পূজার ফলে নরকের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এবং সমস্ত পাপ বিনষ্ট হয়। সাহস, বীরত্ব, শক্তি ও জ্ঞান অর্জিত হয়।
আরও পড়ুন- ঋণ দেওয়া ও নেওয়ার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম, যা অবশ্যই মনে রাখা উচিত
আরও পড়ুন- সময় মূল্যবান তা নষ্ট করো না, জানিয়েছিলেন আচার্য চাণক্য
আরও পড়ুন- শুধু ভাই ফোঁটায় নয় হোলির এই তিথিতেও পালন করা হয় ভাইদুজ, জেনে নিন এর তাৎপর্য
এই দেবতার পুজো বিশেষত দোয়াত-কলম নামেও পরিচিত। তাই এই পুজোর প্রধাণ উপকরণ দোয়াত-কলম, সেই সঙ্গে সুপুরি, মধু, আদা, চিনি, গুড় ও মধু। সেই সঙ্গে এই পুজোয় লাগে চন্দন, চিনি, কাঁচা হলুদ,ফুল ও সিঁদুর। মানব জীবনের পাপ থেকে মুক্তি পেতে পাশাপাশি মৃত্যুর পর স্বর্গলাভের জন্যই এই দেবতাকে প্রসন্ন করা হয়।