সংক্ষিপ্ত

মাঘ মাসের চতুর্দশী তিথিতে রটন্তী কালীপুজো ও জ্যৈষ্ঠ মাসে ফলহারিণী কালীপুজো বিশেষ জনপ্রিয়। অনেক জায়গায় প্রতি অমাবস্যা এবং প্রতি মঙ্গলবার ও শনিবারে কালীপুজো হয়ে থাকে।  তবে ফলহারিণী কালীপুজোয় পুজো করলে সকল দুঃখ ও দুর্দশা থেকে মুক্তি মেলে। এছাড়া আধ্যাত্মিক শক্তি লাভ হয়। 
 

হিন্দু মহাকাব্য মহাভারত-এ যে ভদ্রকালীর উল্লেখ আছে, তা দেবী দুর্গারই একটি রূপ।‘কাল’ শব্দের দুটি অর্থ রয়েছে: ‘নির্ধারিত সময়’ ও ‘মৃত্যু’। প্রকৃত অর্থে কাল অর্থাৎ সময় কে কলন যার অর্থ রচনা করেন তিনিই কালী। ব্রহ্মযামল নামক তন্ত্রগ্রন্থের মতে, কালী বঙ্গদেশের অধিষ্ঠাত্রী দেবী। কার্ত্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে দীপান্বিতা কালীপূজা বিশেষ জাঁকজমক সহকারে পালিত হয়। এছাড়া মাঘ মাসের চতুর্দশী তিথিতে রটন্তী কালীপুজো ও জ্যৈষ্ঠ মাসে ফলহারিণী কালীপুজো বিশেষ জনপ্রিয়। অনেক জায়গায় প্রতি অমাবস্যা এবং প্রতি মঙ্গলবার ও শনিবারে কালীপুজো হয়ে থাকে।  তবে ফলহারিণী কালীপুজোয় পুজো করলে সকল দুঃখ ও দুর্দশা থেকে মুক্তি মেলে। এছাড়া আধ্যাত্মিক শক্তি লাভ হয়। 

আদ্যাশক্তির রূপ-
কালী বা কালিকা হলেন আদ্যাশক্তির রূপ। তার গলায় রয়েছে নরমুণ্ডের মালা। দেবীর গায়ের রং কালো। মাথায় আলুলায়িত চুল এবং তিনি শিবের বুকে ডান পা আগে রেখে দণ্ডায়মান। শাক্ত মতে, কালী বিশ্বব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টির আদি কারণ। বাঙালি হিন্দু সমাজে কালীর মাতৃরূপের পূজা বিশেষ জনপ্রিয়। পুরাণ ও তন্ত্র সাহিত্যে কালীর বিভিন্ন রূপের বর্ণনা পাওয়া যায়। 

দক্ষিণাকালী, ভদ্রকালী, সিদ্ধকালী, গুহ্যকালী, শ্মশানকালী, মহাকালী, রক্ষাকালী ইত্যাদি। আবার বিভিন্ন মন্দিরে "ব্রহ্মময়ী", "ভবতারিণী", "আনন্দময়ী", "করুণাময়ী" ইত্যাদি নামে কালীপ্রতিমা পূজা করা হয়। এই সব রূপের মধ্যে দক্ষিণাকালীর বিগ্রহই সর্বাধিক পরিচিত ও পূজিত। দক্ষিণাকালী চতুর্ভূজা, তার চার হাতে খড়্গ, অসুরের ছিন্ন মুণ্ড, বর ও অভয়মুদ্রা রয়েছে। 

জ্যৈষ্ঠ মাসের অমাবস্যায় ফলহারিণী কালীপুজোর নির্ঘন্ট-
বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা মতে
অমাবস্যা তিথি শুরু- ২৯ মে রবিবার বাংলার ১৪ জ্যৈষ্ঠ রবিবার সময় দুপুর ২টো বেজে ২৫ মিনিটে
অমাবস্যা তিথি শেষ - ৩০ মে সোমবার, বাংলার ১৫ জ্যৈষ্ঠ, সময় দুপুর ৩টে বেজে ৪৮ মিনিট পর্যন্ত।



এই তিথিতেই মা সারদা-কে দেবী রূপে পুজো করেন রামকৃষ্ণদেব-
জৈষ্ঠ্য মাসের অমাবস্যার এই পবিত্র তিথিতে, জগতের কল্যানের জন্য, দক্ষিণেশ্বরে মা সারদা-কে দেবীরূপে পূজো করেন স্বয়ং রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব। তিনি মা সারদার পুজো করেছিলেন ষড়োশী রূপে। সেই থেকে আজও এই ফলহারিণী কালীপুজোর অপর নাম ষড়োশী পুজো। বিভিন্ন মঠে আজও এই তিথিতে ষড়োশী পুজো উৎযাপন করা হয়।