সংক্ষিপ্ত

ঠাকুরের বলেছেন, যত মত, তত পথ ৷ ধর্ম বলে আলাদা কিছু নয় সব ধর্মের নদী একই সাগরে মিশবে ৷ হাজার মত কিন্তু পথ একটাই ৷ ১৮৭০-এর দশকের মধ্যভাগ থেকে পাশ্চাত্যশিক্ষায় শিক্ষিত বুদ্ধিজীবীদের কাছে তিনি হয়ে ওঠেন হিন্দু পুনর্জাগরণের কেন্দ্রীয় চরিত্র। 

ঊনবিংশ শতকের এক প্রখ্যাত এক বাঙালি যোগসাধক, দার্শনিক ও ধর্মগুরু। তার প্রচারিত ধর্মীয় চিন্তাধারায় রামকৃষ্ণ মিশন প্রতিষ্ঠা করেন তার প্রধান শিষ্য স্বামী বিবেকানন্দ। তারা উভয়েই বঙ্গীয় নবজাগরণের এবং ঊনবিংশ ও বিংশ শতাব্দীর হিন্দু নবজাগরণের এক অন্যতম পুরোধাব্যক্তিত্ব। পশ্চিমবঙ্গের আঞ্চলিক গ্রামীণ উপভাষায় ছোটো ছোটো গল্পের মাধ্যমে প্রদত্ত তার ধর্মীয় শিক্ষা সাধারণ জনমানসে বিরাট প্রভাব বিস্তার করে। প্রথাগত দৃষ্টিভঙ্গিতে অশিক্ষিত হলেও রামকৃষ্ণ বাঙালি বিদ্বজ্জন সমাজ ও শিক্ষিত মধ্যবিত্ত সম্প্রদায়ের সম্ভ্রম অর্জনে সক্ষম হয়েছিলেন। 

ঠাকুরের বলেছেন, যত মত, তত পথ ৷ ধর্ম বলে আলাদা কিছু নয় সব ধর্মের নদী একই সাগরে মিশবে ৷ হাজার মত কিন্তু পথ একটাই ৷ ১৮৭০-এর দশকের মধ্যভাগ থেকে পাশ্চাত্যশিক্ষায় শিক্ষিত বুদ্ধিজীবীদের কাছে তিনি হয়ে ওঠেন হিন্দু পুনর্জাগরণের কেন্দ্রীয় চরিত্র। তৎসঙ্গে সংগঠিত করেন একদল অনুগামী, যাঁরা ১৮৮৬ সালে রামকৃষ্ণের প্রয়াণের পর সন্ন্যাস গ্রহণ করে তার কাজ চালিয়ে যান। এঁদেরই প্রধাণ ছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ। ঠাকুর বলেছিলেন "খারাপ স্বভাব খানিকটা রোগীর ঘরে আচারের মত ৷ হাজার হাজর চোখের সামনে ভাল দৃষ্টান্ত থাকলেও খারাপই বেশি টানে, যেমন ভাবে শরীর খারাপ থাকলে যা শরীরকে আরও খারাপ করে তোলে এমন খাবার খাওয়ার দিকেই আমাদের ঝোঁক বেড়ে থাকে ৷" ঠাকুরের মতে, আমাদের মনকেও কখনই খারাপের দিকে প্রশ্রয় দেওয়া উচিত নয়, তবুও আমরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তাই করে থাকি ৷ 



রামকৃষ্ণ পরমহংসের মত, "ভগবানকে দেখতে হলে আগে নিজেকে ভগবান হতে হবে ৷ সবার আগে নিজেকে ভাল হতে হবে , তার পর অন্যের দিকে তাকাও ৷ নিজে ভাল না হলে অন্যকে ভাল করবে কী করে ৷" জীবনকে সুন্দর করে তুলতে দরকার মাত্র একটি মন্ত্র ৷ এক মন্ত্রেই জীবন হয়ে উটতে পারে সংগঠিত ও সুন্দর ৷ ভাল ও মন্দ নিয়েই জীবন তবে ভালবাসা দেওয়া ও নেওয়া ছাড়া জীবনের অন্য কোনও মানে নেই ৷ তিনি বলেছেন, স্বভাব হল খানিকটা জলের মত। জল যেমন সহজেই নীচের দিকে নেমে যায়, তেমনই স্বভাবও খুব তাড়াতাড়ি নিম্নগামী হয়ে থাকে ৷ এমন কিছু করতে হবে যা সত্যিই অন্য কারোর কাছে এক বিশেষ মাত্রা নিয়ে আসে। অন্যের থেকে নিজের উপস্থিতি আলাদা হয়ে থাকে৷