সংক্ষিপ্ত
- মৌলবীদের হুমকিতে বন্ধ হয়ে গেল বাংলাদেশের 'ব্রেস্ট মিল্ক ব্যাঙ্ক'
- ফলে অপুষ্টির মুখে পড়ল বাংলাদেশের পাঁচশোর বেশি অনাথ শিশু
- সরকারের এই সিদ্ধান্ত হতাশ করেছে বাংলাদেশের চিকিৎসকদেরও
- আপাতত থমকে গেল বাংলাদেশের 'ব্রেস্ট মিল্ক ব্যাঙ্কে'র প্রকল্প
সাধু উদ্য়োগে অসাধু হানাদারি। মুসলিম কট্টোরপন্থী তথা মৌলবীদের হুমকিতে বন্ধ হয়ে গেল বাংলাদেশের 'ব্রেস্ট মিল্ক ব্যাঙ্ক'। ফলে অপুষ্টির মুখে পড়ল বাংলাদেশের পাঁচশোর বেশি অনাথ শিশু। সরকারের এই সিদ্ধান্ত হতাশ করেছে বাংলাদেশের চিকিৎসকদেরও।
সবকিছু ঠিকঠাকই ছিল। অনাথ শিশুদের অপুষ্টির হাত থেকে বাঁচাতে 'ব্রেস্ট মিল্ক ব্যাঙ্ক'-এর ওপর ভরসা করেছিলেন চিকিৎসকরা। কিন্তু মৌলবীদের হুমকির সামনে মাথা নত করতে হল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। আপাতত থমকে গেল বাংলাদেশের 'ব্রেস্ট মিল্ক ব্যাঙ্কে'র প্রকল্প। বেশিরভাগ মৌলবীদের দাবি, ব্রেস্ট মিল্ক ব্যাঙ্ক আসলে ইসলাম বিরোধী। এক মায়ের দুধ খেয়ে দুই সন্তান বিয়ে করলে তা সম্পূর্ণ শরিয়ত বিরোধী বলেই গণ্য হয়।
তবে বাংলাদেশে ব্রেস্ট মিল্ক ব্যাঙ্ক বন্ধ হলেও এখনও এই নিয়ে ফতোয়া জারি করেনি সর্বোচ্চ কোনও ইসলামি সংগঠন। প্রশ্ন উঠেছে, পাকিস্তান, ইরাক, ইরান , মালেশিয়ার মতো দেশও ইসলামপন্থী। তাসত্ত্বেও সেখানে ব্রেস্ট মিল্ক ব্যাঙ্কের সুবিধা রয়েছে। তাহলে উপমহাদেশে এই নয়া উদ্য়োগ নিয়ে আপত্তি কোথায়। বাংলাদেশের বেশকিছু ইসলামি সংগঠন জানিয়েছে, ইতিমধ্য়েই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু করেছেন তারা। শরিয়া আইন বজায় রেখে এই প্রকল্প চালু করা যায় কিনা তা খতিয়ে দেখবেন তারা। এ বিষয়ে ইসলাম ধর্মালম্বী দেশগুলির সঙ্গে কথা বলবেন।
অনাথ শিশুদের অপুষ্টি নিয়ে ইতিমধ্য়েই মুখ খুলেছেন ঢাকার ব্রেস্ট মিল্ক ব্যাঙ্কের প্রোজেক্ট কোর্ডিনেটর মুজিবুর রহমান। তিনি জানিয়েছেন, প্রথম থেকেই এই ব্যাঙ্ক গড়তে প্রতিটি প্যাকেটে দাতার আলাদা করে নাম নথিভুক্ত করে রেখেছেন তারা। বাংলাদেশের চিকিৎসক মহল জানিয়েছে, এই ধরনের কাজের ফলে অপুষ্টির মুখে পড়বে দেশের বাচ্চারা। বিশেষ করে অনাথ শিশুরা এই প্রকল্প থেকে বেশি লাভবান হত। অনেক ক্ষেত্রে সদ্য়োজাত শিশুকে অসুস্থতার কারণে দুধ খাওয়াতে পারেন না মা। সেই ক্ষেত্রে ব্রেস্ট মিল্ক ব্যাঙ্কের দুধই ভরসা তাদের। কিন্তু এই ক্ষেত্রে সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হল সেই অপুষ্ট বাচ্চারা।
পশ্চিমি দেশে হাসপাতালেই ব্রেস্ট মিল্ক ব্য়াঙ্ক থাকে। কিন্তু ৯০ শতাংশ মুসলিম জনসংখ্য়ার বাংলাদেশে এই প্রকল্প আটকালে তাতে অপুষ্টির মুখে পড়বে শিশুরা। তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছে দেশের চিকিৎসক মহল।