সংক্ষিপ্ত
প্রায় ২৪ ঘন্টা পর আগুন এল নিয়ন্ত্রণে
মৃত্যু হল অর্ধশতাধিক শ্রমিকের
আরও অন্তত জনা ৩০ শ্রমিক গুরুতর জখম
এই শ্রমিকদের বেশিরভাগই শিশু
অবশেষে প্রায় ২৪ ঘন্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে এল। বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটা নাগাদ বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জ জেলার এক জুস কারখানায় আগুন লেগেছিল। গোটা রাত ধরে ঢাকা দমকল পরিষেবারকর্মীদের অক্লান্ত চেষ্টায় সেই আগুন শুক্রবার সকালে নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে, তারমধ্যে অর্ধশতাধিক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। আরও অন্তত জনা ৩০-এক শ্রমিক গুরুতর জখম বলে জানা গিয়েছে। আরও মর্মান্তিক হল, এই শ্রমিকদের বেশিরভাগই শিশু।
বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জে হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের কারখানার ছয়তলা ভবনের একেবারে নিচের তলায় আগুন লেগেছিল। ধীরে ধীরে সেই আগুন উপরে উঠতে থাকে। এদিকে ভিতরে আটকা পড়েছিলেন বহু শ্রমিক। প্রাণভয়ে ৬ তলা ভবনটির ৫ তলা থেকে লাফ দিয়েছিলেন শ্রমিক স্বপ্না রানী (৪৪) ও মিনা আক্তার (৩৪)। ঘটনাস্থলেই তাঁদের মৃত্যু হয়েছিল। আরও কিছু পরে মোরসালিন নামে ২৮ বছরের আরেক শ্রমিকও কারখানা ভবনটির তৃতীয় তলা থেকে নিচে লাফিয়ে পড়েছিলেন। তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও, আসার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছিল বলে জানিয়েছিলেন চিকিৎসকরা।
শুক্রবার আগুন নেভার পর, দুপুর পর্যন্ত পুড়ে যাওয়া কারখানা ভবনটি থেকে ৪৯ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা ফায়ার সার্ভিসের ডেপুটি ডিরেক্টর নূর হোসেন। তিনি আরও জানান, দেহগুলি ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের দমকলের ১৮টি ইউনিট একসঙ্গে কাজ করেছে। কারখানায় আটকা পড়া অন্তত ১২ জন শ্রমিককে দমকল কর্মীরা অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করেছেন। আরও ১০ জনকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছিল। তাদের প্রত্য়েককেই,চিকিৎসা চলছে ঢাকা মেডিকাল কলেজে।
আরও পড়ুন - করোনাবিধি শিকেয়, 'রানি'-কে দেখতে ভিড় সাধারণের
আরও পড়ুন - অলিম্পিকে দর্শক শূন্য টোকিও, করোনা আতঙ্কে জারি জরুরি অবস্থা
আরও পড়ুন - বাংলাদেশেই তৈরি হবে চিনের টিকা - ভারতই দেখালো পথ, ঢাকাও কি হবে ইসলামাবাদ
এদিকে, এই অগ্নিকাণ্ডে মৃতদের অধিকাংশই শিশু শ্রমিক বলে মনে করা হচ্ছে। প্রথম সারির বাংলাদেশী সংবাদপত্র 'প্রথম আলো'র এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, পুড়ে যাওয়া কারখানায় কর্মরত শ্রমিকগদের বেশিরভাগের বয়স ১৮ বছরের নিচে। অভাবের সংসারে সচ্ছলতা আনতেই তারা দিনমজুর হিসাবে ওই কারখানায় কাজ করত। অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে যে শ্রমিকরা নিখোঁজ ছিলেন, তাদের তালিকায় শান্তা (১২), মুন্না (১৪), শাহানা (১৫), নাজমুল (১৫), রিপন (১৭), রাহিমা (৩৫), অমৃতা (১৯), তাকিয়া (১৪), হিমু (১৬), সুফিয়া (৩০), আমেনা (১৭), মাহমুদ (১৫), তাসলিমা (১৭), কম্পা (১৬), শেফালি (২০), ইসমাইল (১৮) - এইরকম সব বয়সের শ্রমিকরা রয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে।