সংক্ষিপ্ত

  • ভালবাসার অসংখ্য রূপ
  • কখনও ভাল তো কখনও মন্দ
  • এক একটি রূপে মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে গভীরতা, যা উঠে এল 'লকড ইন লাভ'-এ
  • সেই গভীরতা নিয়ে এক্সক্লুসিভ আলোচনায় রোহিত রায় এবং মানসী যোশী রায়

প্রেম, বিচ্ছেদ, দুঃখ, এগিয়ে চলা। প্রতিটি ভিন্ন অনুভূতি। তবে এই বিভিন্ন অনুভূতি গুলি বাঁধা এক সুতোর টানে। সেই সুতোই হল ভালবাসা। ভালবাসার অজস্র রূপ। সব রূপের ভিন্নতাকে ঘিরে বিনোদনের পর্দায় ভেসে উঠল হাঙ্গামা প্লের 'লকড ইন লাভ'। অভিনেতা রোহিত রায় এবং স্ত্রী মানসী যোশী রায় বাড়িতেই শ্যুট করে ফেলেছেন এই ওয়েব সিরিজের। যেখানে অন্যান্য ওটিটি প্ল্যাটফর্মে বিভিন্ন তামঝামের সঙ্গে ওয়েব সিরিজের প্রস্তুতি সেখানেই বাড়ির মধ্যে ক্যামেরা রেখে, তেমন কোনও ক্রিউ ছাড়াই শ্যুটিং করেছেন পাঁচটি শর্ট ফিল্ম। এই কারণেই হয়তো দর্শকমহল আরও বেশি করে রিলেট করতে পেরেছে লকড ইন লাভের সঙ্গে। কীভাবে সম্পন্ন হল এই যাত্রা, এশিয়ানেট নিউজ বাংলার প্রতিনিধি অদ্রিকা দাসের সঙ্গে এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে সেই নিয়ে কথা বললেন রোহিত রায় এবং মানসী যোশী রায়

অদ্রিকাঃ আশা করছি, আপনারা এই পরিস্থিতিতে ভাল আছেন এবং সুস্থ আছেন। আচ্ছা এই লকডাউনের মধ্যেই কি শর্ট ফিল্মের অনুপ্রেরণা পেলেন? পাঁচটি ভিন্ন গল্প কি কোনওভাবে লকাডউন এবং ব্যক্তিগত জীবনের সঙ্গে জড়িত?  

রোহিতঃ না! কোনও গল্পই আমাদের ব্যক্তিগত জীবন কিংবা লকডাউনের সঙ্গে জড়িত নয়। লকডাউনের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই। তবে হ্যাঁ, লকডাউনের মধ্যেই আমরা বাড়িতে শ্যুট করেছি। লকড ইন লাভ-এর অর্থ হল কোনও সম্পর্ক যা একটি বন্ধনে আবদ্ধ। অপর মানুষটির প্রতি তোমার একটি দায়িত্ববোধ রয়েছে, তা সে তোমার প্রেমিকা হোক, স্ত্রী হোক বা যে কেউ। এটাই গল্পগুলির মূল বিষয়বস্তু।

 

View post on Instagram
 

 

অদ্রিকাঃ লকডাউনের মধ্যে বাড়িতে শ্যুট করাটা ঠিক কতটা পরিশ্রমের ছিল?
মানসীঃ নিশ্চই পরিশ্রমের ছিল। আমাদের কাছে সঠিক ইকুইপমেন্ট ছিল না যা সাধারণত শ্যুটে প্রয়োজন হয়, যেমন বড় ক্যামেরা, লাইট। বাড়িতে যা ছিল তাই দিয়েই শ্যুটিং করেছি। তবে আমি বেশ খুশি ফলাফল পাওয়ার পর। 
রোহিতঃ আমি আরও একটা জিনিস জুড়তে চাই মানসীর কথার সঙ্গে। চ্যালেঞ্জটা এখানেই ছিল। নতুন ফরম্যাট, নতুন অভিজ্ঞতা। এমনকি কনটেন্টও ভিন্ন। দু'জন অভিনেতা মিলেই প্রতিটি চরিত্রে অভিনয় করেছি। 

অদ্রিকাঃ রোহিত, আপনি এই শর্ট ফিল্মগুলি পরিচালনা করেছেন। সেই অভিজ্ঞতা নিয়ে যদি কিছু বলেন।
রোহিতঃ আমি চিরকালই পরিচালনা নিয়ে ভীষণ উৎসাহী ছিলাম। গত দু'মাস ধরে আমি শুনে আসছিলাম অনেকেই অবসাদে ভুগছেন কিংবা কারও মন ভাল নেই। কারণ একটাই, এতদিন আমরা কাজে ব্যস্ত ছিলাম, হঠাৎ করে সব বন্ধ হয়ে যেতেই কে কী করবে কিছু ভেবে পায়নি। যার মাঝেই আমাদের এই প্ল্যানটি মাথায় এল। সময়ও খুব ভাল কেটেছে।

অদ্রিকাঃ এই লকডাউন অগণিত মানুষের মানসিক অবস্থায় আঘাত করেছে। অল্পবয়সী, মাঝবয়সী এমনকি প্রবীনরাও এর হাত থেকে রেহাই পায়নি। এ বিষয় আপনাদের কী মতামত?
মানসীঃ হ্যাঁ! প্রত্যেক বয়সের মানুষের সমস্যাগুলি ভিন্ন। অল্পবয়সী কিংবা মাঝবয়সীদের কাছে সোশ্যাল মিডিয়া থাকতে তাদের অনেকটা সময় সেখানেই চলে যাচ্ছে। তবে প্রবীন নাগরিকদের সেই সুযোগ নেই। আমার মনে হয় প্রত্যেকের জন্য কেবল একটি পরামর্শ। পজিটিভ থাকুন।

 

View post on Instagram
 

 

অদ্রিকাঃ এই ওয়েব সিরিজে কোথাও কি সেল্ফ লাভ, অর্থাৎ নিজের প্রতি ভালবাসাটা থাকাটাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে?
রোহিতঃ জীবনে এমন অনেকটা সময় চলে যায় যেখানে সকলে বিশেষ করে মহিলারা নিজেদের বিষয় ভাবতে ভুলে যান। এই সিরিজটি তাই শেখাতে সাহায্য করবে মানুষকে।

অদ্রিকাঃ পাঁচটি শর্ট ফিল্মের মধ্যে এমন কোনও একটি চরিত্র রয়েছে যার সঙ্গে আপনারা রিলেট করতে পেরেছিলেন?
মানসীঃ প্রত্যেকটি মহিলা, যাদের চরিত্রে আমি অভনয় করেছি। তারা প্রত্যেকেই কোথাও না কোথাও হয়তো আমার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে।

অদ্রিকাঃ এমন কোনও বিষয় যা আপনারা পাঁচটি শর্ট ফিল্ম থেকে শিখেছেন এবং চান দর্শকরাও সেই বিষয়টিকে উপভোগ করুক?
রোহিত এবং মানসীঃ প্রতিটি থেকে বিভিন্ন জিনিস শেখার আছে। তবে সব শেষে দর্শকদের যদি আমাদের এই ছবিগুলি ভাবাতে পারে, হাসি আনতে পারে তাদের মুখে তাহলে এর চেয়ে ভাল আর কিছু হয় না।

অদ্রিকাঃ লকড ইন লাভ অন্যান্য সিরিজের থেকে বেশ আলাদা। যার কারণে নেটিজেনরা বেশ উৎসাহী। সেকেন্ড সিজনের বিষয় তারা প্রশ্ন করে চলেছে। 
রোহিতঃ চারিদিকে থ্রিলার, ক্রাইম, সিরিজেই ভরে যাচ্ছে। আমাদের এই সিরিজটি একটি ফ্রেশ কনটেন্ট নিয়ে এসেছে। শুধুমাত্র কম বয়সী দর্শকরাই নয় বাকিরাও সিরিজটিকে পছন্দ করেছে। একটা ভয় ছিল আমাদের, যে দুই অভিনেতাকে প্রত্যেকটি শর্ট ফিল্মে দেখতে দেখতে সকলের একঘেয়েমি না লাগে। তবে তেমনটা আশা করছি হয়নি। হ্যাঁ! আমরা দ্বিতীয় সিজন নিয়ে আসছি। তবে এই নিয়ে বেশি কোনও মন্তব্য করতে চাই না।

অদ্রিকাঃ এই লকডাউনে এবং এই সিরিজটি শ্যুট করার সময় এমন কোনও জিনিস যা আপানাদের মানসিকতা এবং দৃষ্টিভঙ্গি বদলেছে?
মানসী এবং রোহিতঃ তুমি যদি কোনও সিদ্ধান্ত নাও, সেটা তুমি করতে পারবেই। যতই সমস্যা আসুক না কেন। কখনই নিজের সম্পর্ক কিংবা কাজকে হালকা ভাবে নিও না। প্রতিটি জিনিসে নিজের ১০০ শতাংশ দিতে হবে। সমস্যা আসবেই তবুও এগিয়ে যেতে হবে। 

অদ্রিকাঃ যে বিষয়টি দর্শক সবচেয়ে বেশি প্রশংসা করেছে তা হল প্রতিটি শর্ট ফিল্মে ভিন্ন ধরণের রসায়ন খুঁজে পাওয়া গিয়েছে এবং রিলটেবলও লেগেছে। এই বিষয় কী বলবেন?
রোহিত এবং মানসীঃ এটা আসলে সম্পূর্ণ ন্যাচারলি এসেছে। আসলে আমাদের বাড়িতেই সমালোচক বসেছিল। মেয়ে কিয়ারা। ওই আমাদের সিনেম্যাটোগ্রাফার ছিল। খুব সাবলীল ভাবেই কোনও শট পছন্দ না হলে কাট বলে দিচ্ছি। যা রীতিমত আমাদের সাহায্য করেছে এই সিরিজটি তৈরি করতে। আশা করছি প্রত্যেকের এই রসায়ন, ভিন্ন চিত্রনাট্য পছ্নদ হবে।