সংক্ষিপ্ত

 

  • করোনার প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় বিশ্বব্যাপী ১০০টি ভ্যাকসিনের ট্রায়াল চলছে
  • দৌঁড়ে প্রথম সারিতে রয়েছে অক্সফোর্ডের গবেষকদের তৈরি ভ্যাকসিন
  • এবার পরীক্ষার দ্বিতীয় ধাপ শুরু করতে চলেছেন গবেষকরা
  • তবে ভ্যাকসিনের সফল হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে সন্দিহান খোদ প্রধান গবেষক

গত ৫ মাস হল করোনা সংক্রমণে জর্জরিত গোটা বিশ্ব। প্রতিদিনই বেড়ে চলেছে আক্রান্তের সংখ্যা। গোটা পৃথিবীর ২০০টিরও বেশি দেশ মারণ ভাইরাসের সংক্রমণে দিশেহারা। আক্রান্তের সংখ্যা এবার বিশ্বে ৫৫ লক্ষের গণ্ডি পেরোতে চলেছে। মারণ ভাইরাস প্রাণ কেড়েছে ৩ লক্ষ ৪৬ হাজারেরও বেশি মানুষের। এই পরিস্থিতিতে ভ্যাকসিন আবিষ্কারের মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন বিভিন্ন দেশের গবেষক বিজ্ঞানীরা। ইতিমধ্যে ব্রিটেনের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা করোনার ভ্যাকসিন পরীক্ষামূলক প্রয়োগ মানবদেহে শুরু করেছেন। পরীক্ষার প্রথম ধাপ সফল হওয়ায় দ্বিতীয় ধাপে ১০ হাজার ২৬০ জনের ওপর এই ভ্যাকসিনের প্রয়োগ করা হবে। তারমধ্যে প্রাপ্তবয়স্করা যেমন থাকবেন তেমনি এবার রাখা হয়েছে শিশুদেরও। তবে এই ভ্যাকসিনের সফল হওয়ার সম্ভাবনা কেবল ৫০ শতাংশ বলে জানিয়েছেন গবেষক দলের প্রধান আদ্রিয়ান হিল। 

কয়েকমাস আগেই  বিশ্বে  মহামারী হিসাবে দেখা দেওয়া  করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরির লড়াই শুরু করেছেন অক্সফোর্ডের জেনার ইনস্টিটিউটের পরিচালক আদ্রিয়ান হিল ও তাঁর দল। তাঁদের এই কাজে যুক্ত হয়েছে বিশ্বের অন্যতম ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা অ্যাস্ট্রাজেনেকা। তাদের উদ্ভাবিত পরীক্ষামূলক ভ্যাকসিন সিএইচএডিওএক্স১ এনসিওভি-১৯  বিশ্বব্যাপী করোনাযুদ্ধের সম্ভাব্য হাতিয়ার হওয়ার দৌড়ে বেশ সামনের দিকেই রয়েছে।

গত এপ্রিলে হিল ও তাঁর দল মানবদেহে প্রাথমিক পর্যায়ের ট্রায়াল শুরু করেছেন ভ্যাকসিনটির। পরবর্তী ধাপে ১০ হাজার স্বেচ্ছাসেবকের ওপর এটি প্রয়োগ করা হবে বলে জানান হয়েছে। তবে যুক্তরাজ্যে করোনা সংক্রমণের হার দিন দিন কমতে থাকায় এই পরীক্ষার সফল্য নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন তিনি।

আদ্রিয়ান হিল বলেন, ‘এটা ভাইরাস বিলীন হয়ে যাওয়া ও সময়ের সঙ্গে প্রতিযোগিতা। আমরা এর আগে বলেছিলাম, সেপ্টেম্বরের মধ্যে কার্যকর টিকা উন্নয়নের সম্ভাবনা ৮০ ভাগ। কিন্তু এই মুহূর্তে আমাদের কোনো ফল না পাওয়ার সম্ভাবনা ৫০ শতাংশ।’

তিনি জানান, ১০ হাজার স্বেচ্ছাসেবীর মধ্যে ৫০ জনের ওপর আগামী সপ্তাহে টিকার ট্রায়াল হতে যাচ্ছে। এদের সবাই করোনা আক্রান্ত হবেন বলে তিনি আশা করছেন। এই অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ২০ জনের কম মানুষেরও করোনা পজিটিভ হলে ট্রায়াল ব্যর্থ হবে।

করোনার প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় বিশ্বব্যাপী ১০০টি টিকার ট্রায়াল চলছে। সাধারণত সম্পূর্ণ ধাপ শেষ করে টিকার বাজারে আসতে কয়েক বছর পেরিয়ে যায়। তবে করোনার টিকা এক বছরের মধ্যে বাজারে আনার জন্য জোর চেষ্টা চলছে। ব্রিটিশ সরকার অক্সফোর্ডকে গবেষণার জন্য ১০ কোটি টিকা  দিতে রাজি হয়েছে। এর মধ্যে তিন কোটি  টিকা সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রস্তুত হবে বলে জানানো হয়েছে। অবশ্য ব্রিটেনে চলতি মাসের প্রথম থেকেই  করোনা সংক্রমণের হার কমতে শুরু করেছে। জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী , যুক্তরাজ্যে এখনও পর্যন্ত অন্তত ২ লক্ষ ৫৯ হাজারের বেশি মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ৩৬ হাজারের বেশি।